ঢাকা: বাংলাদেশ ও তুরস্কের মধ্যে সামরিক সহযোগিতা বাড়ানোর অনেক সুযোগ রয়েছে বলে মনে করেন ঢাকায় নিযুক্ত তুরস্কের রাষ্ট্রদূত মুস্তাফা ওসমান তুরান।
তিনি জানান, বন্ধুপ্রতীম দেশ হিসেবে বাংলাদেশে সামরিক সরঞ্জাম রপ্তানি করতে চায় তুরস্ক।
সম্প্রতি বাংলানিউজের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় তিনি এ কথা বলেন।
সম্প্রতি ঢাকা সফরে এসে তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রী মেভেলুত কাভাসোগলু জানিয়েছিলেন, তুরস্ক বাংলাদেশে সামরিক সহযোগিতা দিতে আগ্রহী।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে মুস্তাফা ওসমান তুরান বলেন, বাংলাদেশ-তুরস্ক দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে সামরিক খাত অন্যতম এজেন্ডা। গত ১০-১৫ বছর ধরে তুরস্ক নিজ দেশের সামরিক শিল্পখাত উন্নয়ন করেছে। আমাদের প্রয়োজনীয় সামরিক সরঞ্জামের ৭৫ ভাগ নিজেরাই তৈরি করছি। আমরা এসব সরঞ্জাম বাংলাদেশের মতো বন্ধুপ্রতীম দেশে রপ্তানি করতে চাই। এ বিষয়ে আমরা সবেমাত্র আলোচনা শুরু করেছি। আমরা বিশ্বাস করি, দুই দেশের মধ্যে আগের চেয়ে এই খাতে আরও বেশি সহযোগিতার সুযোগ রয়েছে।
তুরস্ক কোন ধরনের সামরিক সরঞ্জাম তৈরি করে থাকে যা বাংলাদেশের জন্য প্রয়োজনীয় হতে পারে, এমন প্রশ্নের উত্তরে তুরস্কের রাষ্ট্রদূত বলেন, কোন ধরনের সামরিক সরঞ্জাম প্রয়োজন তা ঠিক করবে বাংলাদেশ সরকার ও সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ। তবে এটা শুধু কেনা-বেচার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে, সেটা আমি বলতে চাচ্ছি না। আমি বলতে চাচ্ছি, এই খাতে সহযোগিতা বাড়াতে চাই। সেটা দীর্ঘ মেয়াদী জয়েন্ট ভেঞ্চারেও হতে পারে। আমরা দুই দেশের দীর্ঘমেয়াদী অংশীদারিত্বের কথা বলছি।
তিনি বলেন, আমরা ড্রোন, মিসাইল, সামরিক যোগাযোগ সরঞ্জাম, নৌ-বাহিনীর জন্য অফশোর পেট্রোল ভেসেলস ইত্যাদি তৈরি করে থাকি। এই তালিকা অনেক দীর্ঘ।
করোনাকালেও ঢাকা-আঙ্কারার মধ্যে সহযোগিতা বাড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে রাষ্ট্রদূত বলেন, গত চার মাসে যদি দেখেন, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. মোমেন গত সেপ্টেম্বরে আঙ্কারায় বাংলাদেশ ভবন উদ্বোধন করেছেন। সেটা অত্যন্ত আধুনিক ভবন। সেখানে দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রী বৈঠক করেছেন। আমাদের প্রধানমন্ত্রী রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তিনি। তার কয়েক মাস পর আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রী ঢাকায় এসেছেন। আমাদের নতুন ভবন উদ্বোধন করেছেন। এখানে দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রী বৈঠক করেছেন। দুই দেশের মধ্যে যে সংলাপ আঙ্কারা থেকে শুরু হয়েছিলো তা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এটা দুই দেশের জন্য একটি নতুন দিগন্ত বলে তিনি মন্তব্য করেন।
দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে মুস্তাফা ওসমান তুরান বলেন, বেসরকারি খাতে দুই দেশের বাণিজ্য সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। এ নিয়ে আমরা একটি ওয়েবিনারের আয়োজন করেছি। সেখানে বাংলাদেশ ও তুরস্কের ব্যবসায়ীরা অংশ নিয়েছেন। দুই দেশের বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ বাড়ানোর বিষয়ে আমরা আলোচনা করেছি। আশা করছি আগামীতে এ খাতে সহযোগিতা বাড়বে।
বাংলাদেশ সময়: ২০২০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০২১
টিআর/এজে