ঢাকা, মঙ্গলবার, ৭ মাঘ ১৪৩১, ২১ জানুয়ারি ২০২৫, ২০ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

তিন মাস পর শিশু হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন, আটক ১

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১২ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০২১
তিন মাস পর শিশু হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন, আটক ১

বগুড়া: বগুড়ার গাবতলী উপজেলায় তিন মাস পর শিশু হানজালাল (৬) হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন হয়েছে। এ ঘটনায় মজনু মিয়া (৩৪) নামে এক ওষুধ বিক্রেতাকে আটক করেছে পুলিশ।

শুক্রবার (১৯ মার্চ) রাতে বগুড়া পুলিশ সুপার কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা।

হানজালাল গাবতলী উপজেলার নিশুপাড়া গ্রামের মালেয়েশিয়া প্রবাসী পিন্টু মিয়া প্রামাণিকের ছেলে। আটক মজনু গাবতলী উপজেলার রামেশ্বরপুর নিশুপাড়া এলাকার আব্দুল জব্বার প্রাং এর ছেলে।

জানা যায়, মাদকসেবনের টাকা সংগ্রহ এবং নিজের আর্থিক অবস্থার উন্নতি সাধনে হানজালালকে হত্যা করেন মজনু। এ ঘটনায় শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মজনুকে আটক করে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) একটি দল। এ সময় তার কাছ থেকে মুক্তিপণ দাবি করে হত্যার কাজে ব্যবহৃত একটি মোবাইল ফোন এবং দুটি সিমকার্ড উদ্ধার করেছে পুলিশ।

এর আগে, অপহরণের ৩৮ দিন পর গত ২১ জানুয়ারি রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার রামেশ্বরপুর ইউনিয়নের নিশুপাড়া বটতলা হাঁড়িপুকুর থেকে শিশু হানজালালের বস্তাবন্দী অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় হানজালালের বাবা পিন্টু বাদী হয়ে গাবতলী মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন।
পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা জানান, গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর বিকেল ৩টার দিকে নিশুপাড়া বাজারে মনজু ওষুধের দোকানে বসে ইয়াবা সেবন করছিলেন। এমন সময় মনজু শিশু হানজালালকে সুকৌশলে দোকানে ডেকে নেয় এবং তার ব্যবহৃত মোবাইল হানজালালের হাতে দিয়ে দোকানের সাটার নামিয়ে দেন। পরবর্তীতে শিশু হানজালালের সামনে মাদকসেবন করা কালে তাকে অপহরণ পূর্বক মুক্তিপণ দাবির পরিকল্পনা করেন। তারপর দোকানে থাকা স্কস্টেপ মুখে লাগানোর চেষ্টাকালে হানজালাল চিৎকার দেয় এবং ছোটাছুটির চেষ্টা করে। পরে হানজালালকে গলা টিপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন মনজু।

হত্যার পর মরদেহ স্কস্টেপ দিয়ে মুড়িয়ে গুমের জন্য দোকানের একটি তাকের মধ্যে রেখে বাড়িতে চলে যান মনজু। পরে বাড়ি থেকে বস্তা নিয়ে এসে মরদেহ সেখানে ভরে ইটযুক্ত করে পাশের পুকুরের পানিতে ফেলে দেন তিনি।

তিনি জানান, ঘটনার কয়েকদিন পরে আনন্দ কুমার দাশ নামে এক ভিক্ষুককে ভাতা দেওয়ার কথা বলে তার ভোটার আইডি কার্ড এবং আঙুলের ছাপ দিয়ে শহরের সাতমাথা এলাকা থেকে একটি সিমকার্ড সংগ্রহ করেন মনজু। পরে শহর থেকে ভয়েস পরিবর্তন করে কথা বলা যায় এমন একটি মোবাইল ফোন ক্রয় করে মনজু। নতুন কেনা ফোন দিয়ে কণ্ঠ পরিবর্তন করে হানজালালের মায়ের কাছে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেনি তিনি।

পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা আরও জানান, খুনি অনেক চালাক প্রকৃতির। মুক্তিপণের টাকা দাবির সময় বার বার স্থান ও কণ্ঠ পরিবর্তন করে আসছিলেন। তাই রহস্য উন্মোচনে সময় লেগেছে। আটক আসামি মনজুকে শনিবার (২০ মার্চ) সকালে আদালতে পাঠানো হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১০১৫ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০২১
আরআইএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।