ঢাকা: যেকোনো মূল্যে দেশের বনভূমি অবৈধ দখলমুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন। তিনি বলেন, বন দখলকারী ও দখলে সহায়তাকারী উভয়ের বিরুদ্ধেই আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
রোববার (২১ মার্চ) দুপুরে ‘বন পুনরুদ্ধার: উত্তরণ ও কল্যাণের পথ’ প্রতিপাদ্য ধারণ করে আন্তর্জাতিক বন দিবস-২০২১ উপলক্ষে বন অধিদপ্তরে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বনমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বন বিভাগের যেসব কর্মী বন রক্ষায় আহত হবেন তাদের পুরস্কৃত করা হবে। অন্যদিকে বন দখলে সহায়তা করার অভিযোগে অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে। সংশ্লিষ্ট সবার ঐকান্তিক সহযোগিতায় বনভূমি পুনরুদ্ধারে সফল হবে সরকার।
বনমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন কারণে জবরদখলকৃত এক লাখ ৩৮ হাজার ৬১৩ একর সংরক্ষিত বনভুমির মধ্যে ইতোমধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশ দখলমুক্ত করা হয়েছে। বর্তমান সরকারের নানাবিধ কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে সুন্দরবনের বৃক্ষ সম্পদের পরিমাণ বেড়েছে। ২০১৯ সালে প্রকাশিত জাতীয় বন জরিপের তথ্য মতে সুন্দরবনে মোট কার্বন মজুদের পরিমাণ ১৩৯ মিলিয়ন টন, যেখানে ২০০৯ সালে পরিচালিত জরিপ অনুসারে এর পরিমাণ ছিল ১০৭ মিলিয়ন টন।
তিনি বলেন, বৃক্ষরোপণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উদ্যোগ অনুসরণ করে জনগণের অংশগ্রহণের মাধ্যমে একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে বর্তমান সরকার দেশের বিদ্যমান বনাঞ্চল সংরক্ষণ এবং বনায়ন কার্যক্রম জোরদার করেছে। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে টেকসই পরিবেশ ও বন উন্নয়ন এবং জলবায়ু পরিবর্তনজনিত দুর্যোগ মোকাবিলা করে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বাসযোগ্য সুন্দর পৃথিবী নির্মাণে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান।
সভায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপ-মন্ত্রী হাবিবুন নাহার বলেন, উন্নয়নের নামে বৃক্ষনিধন ও বনের মধ্যে স্থাপনা নির্মাণ নিরুৎসাহিত করছে তার মন্ত্রণালয়।
বন রক্ষায় নিহত বনকর্মীদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে তিনি বলেন, বনভূমি অবৈধ দখলমুক্ত করতে সরকারের সফলতা আছে।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, এক ইঞ্চি বনের জমিও বেহাত বা জবর দখল অবস্থায় রাখা হবে না। এ লক্ষ্যে বন অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের বন পুনরুদ্ধারে অবদান মূল্যায়ন করা হবে।
বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপ-মন্ত্রী হাবিবুন নাহার, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আহমদ শামীম আল রাজী প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বন অধিদপ্তরের বন সংরক্ষক হোসাইন মুহম্মদ নিশাদ। প্রতিপাদ্য বিষয় উপস্থাপনা করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ফরেস্ট্রি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সের অধ্যাপক ড. মো. কামাল হোসাইন এবং বন অধিদপ্তরের সামগ্রিক কার্যক্রম উপস্থাপন করেন উপ-প্রধান বন সংরক্ষক ও সুফল প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক গোবিন্দ রায়। অনুষ্ঠানে সামাজিক বনায়নে পাঁচজন উপকারভোগীর মধ্যে ১৫ লাখ টাকার চেক বিতরণ করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫১ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০২১
জিসিজি/আরবি