ঢাকা, বুধবার, ৮ মাঘ ১৪৩১, ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ২১ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

কোটি টাকা দাম পেলে খাটটি বিক্রি করবেন আ.লীগ নেতা!

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৯ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০২১
কোটি টাকা দাম পেলে খাটটি বিক্রি করবেন আ.লীগ নেতা! পরী পালং খাট। ছবি: বাংলানিউজ

খাগড়াছড়ি: ‘খাটের চার কোণে পায়া থাকার কথা সেখানে শোভা পাচ্ছে ডানা মেলে দাঁড়ানো অবস্থায় চারটি কাঠের তৈরি পরী। সেই পরীদের ডান হতে রয়েছে আবার প্রজাপতি।

ওই চারটি পরীর মাথার ওপর থেকে পরষ্পরের সঙ্গে সংযুক্ত কাঠের ফ্রেম। খাটের চারপাশজুড়ে ছোট ছোট পরী এবং দৃষ্টিনন্দন নকশা। যদি কোনো রাজা মহারাজা থাকতেন তবে, দৃষ্টিনন্দন ওই খাটের দিকে তাদের নজর আটকে যেতো। রাজার শোয়ার ঘরেই শোভা পেতো খাটটি। তা যত দামই হোক না কেন’।  

সেগুন গাছ দিয়ে সম্পূর্ণ হাতে খোদাই করে বানানো রাজকীয় ওই খাট। যা নজর কাড়ছে খাগড়াছড়িবাসীর।   খাগড়াছড়ির গুইমারা ইউনিয়নের মুসলিমপাড়া এলাকার বাসিন্দা কাঠমিস্ত্রি মো. আবু বক্কর (৩৫) খাটটি তৈরি করেছেন।

সম্প্রতি ‘পরী পালং খাটটির’ ছবি সামাজিক যোগোযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায় খাটটি। সেটির কথা পাশের গ্রামে ছড়িয়ে পড়লে তা দেখার জন্য ভিড় করছেন।

এ খাটটি বানিয়েছেন জেলা গুইমারা উপজেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও যোগাযোগ বিষয়ক সম্পাদক মো. নুরন্নবী। মূলত শখের বসে কাঠমিস্ত্রি আবু বক্করকে দিয়ে কাঠটি বানিয়েছেন তিনি।  

তার দাবি, কাঠের খাটটি বানাতে তার খরচ হয়েছে ৪০ লাখ টাকা। পারিশ্রমিক বাবদ দেওয়া হয়েছে ৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা। আর খাটটি তৈরিতে সময় লেগেছে ৩ বছরেরও বেশি। জানা যায়, ২০১৭ সালে নুরন্নবী নিজের শখের কথা স্থানীয় কাঠমিস্ত্রি আবু বক্করকে জানান। তারপর শুরু হয় কর্মযজ্ঞ। সম্পূর্ণ নিজের ডিজাইনে হাতে খোদাই করে সেগুন গাছের রাজকীয় খাটটি তৈরি করে। কাঠ তৈরিতে বিভিন্ন সময় অন্য শ্রমিকদের সহযোগিতা নেয় আবু বক্কর। প্রায় ৩ বছর ৩ মাস ধরে চলে এই কাজ। কাঠ তৈরিতে প্রয়োজন হয়েছে প্রায় ১শ ফুট সেগুন গাছ। পুরো খাটজুড়ে রয়েছে খোদায় করা নকশা। বড় চারটি পরী ছাড়াও খাটটির পায়ের পাখা, জলম এবং বক্সের অংশে রয়েছে ছোট বড় আরও ১২টি পরী সদৃশ্য। সর্বশেষ গত ১৬ মার্চ খাটটি তৈরি শেষে নুরন্নবীকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়।   আবু বক্করও কিশোর বয়সে কাঠের শ্রমিক হিসেবে কাজ শুরু করে। তারপর দেশের বিভিন্ন জায়গায় কাজ করার অভিজ্ঞতা নিয়ে এখন গুইমারাতে কাঠমিস্ত্রি হয়ে কাজ করছেন তিনি।  আবু বক্কর জানান, চুক্তিবদ্ধ হওয়ার পর থেকে পুরো সময় খাট বানাতে মনযোগ দিয়েছি। সম্পূর্ণ নিজস্ব ডিজাইন দিয়ে বানানো খাটটি। খোদাই করে নকশাগুলো বের করতেই সবচেয়ে বেশি সময় লেগেছে। চুক্তি অনুসারে পেয়েছি ৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এমন কাঠের তৈরি খাটটি বানাতে পেরে নিজের সন্তুষ্টির কথাও জানান তিনি। মো. নূরন্নবী জানান, শখের বসে খাটটি বানিয়েছি। সম্পূর্ণ হাতে খোদায় করে পরী পালং খাটটি বানানো। এখন প্রতিদিন বিভিন্ন জায়গা থেকে উৎসুক লোকজন খাটটি দেখতে আসছেন। এমন খাট আর একটাও নেই বললে চলে। ইতোমধ্যে ঢাকার এক ব্যক্তি ৭০ লাখ টাকা বলেছেন। আমি এক কোটি হলে খাটটি বিক্রি করবো। নাহলে ঢাকার আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলায় খাটটি বিক্রির জন্য নেবো।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৮ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০২১
এডি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।