ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৮ মাঘ ১৪৩১, ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ২২ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

শ্যালকের সঙ্গে দেবেন বিয়ে, এমন আশ্বাসে টাকা হাতালেন যুবলীগ নেতা!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩৫ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০২১
শ্যালকের সঙ্গে দেবেন বিয়ে, এমন আশ্বাসে টাকা হাতালেন যুবলীগ নেতা!

লালমনিরহাট: লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলায় শ্যালকের সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে এনজিও কর্মীর পাঁচ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে শামল চন্দ্র (৩৮) নামে এক যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে।

শনিবার (২৭ মার্চ) বিকেলে টাকা উদ্ধার ও ন্যায় বিচার চেয়ে আদিতমারী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগী এনজিও কর্মী রবিতা রানী।

অভিযুক্ত শ্যামল চন্দ্র উপজেলার পলাশী ইউনিয়নের মহিষাশ্বহর বড়াইবাড়ি গ্রামের মৃত নিরঞ্জন রায়ের ছেলে। তিনি ওই ইউনিয়ন আওয়ামী যুবলীগের সহ সাংগঠনিক সম্পাদক।

ভুক্তভোগী রবিতা রানী কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার পুটিমারী এলাকার মৃত বীরেন্দ্রনাথ রায়ের মেয়ে। তিনি স্থানীয় এনজিও আরডিআরএস বাংলাদেশ আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ব্রাঞ্চে কর্মরত।

থানায় দায়ের করা অভিযোগে বলা হয়, আরডিআরএস বাংলাদেশ নামে স্থানীয় একটি এনজিও'র আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা শাখায় কর্মরত রয়েছেন রবিতা রানী। এনজিওটির ঋণ প্রদান ও কিস্তি আদায় নিয়ে পরিচয় হয় যুবলীগ নেতা শ্যামলের সঙ্গে। পরিচয়ের এক পর্যয়ে শ্যালক মোহন চন্দ্রের সঙ্গে ওই এনজিও কর্মীর বিয়ের প্রস্তাব দেন যুবলীগ নেতা শ্যামল চন্দ্র। বিবাহযোগ্য শ্যালক মোহন চন্দ্রের অফিস সহকারী পদে মহিষাশ্বহর উচ্চ বিদ্যালয়ে চাকরির কথা রয়েছে। এজন্য কিছু টাকা প্রয়োজন, টাকা হলে চাকরি হয়ে যাবে। চাকরি হলেই রবিতার সঙ্গে শ্যালকের বিয়ে দেবেন যুবলীগ নেতা। তার এমন প্রস্তাবে রাজি হন এনজিও কর্মী রবিতা রানী।

সেই অনুযায়ী চাকরির জন্য ২০১৯ সালের ১০ নভেম্বর থেকে ২০২০ সালের ১৭ জুন পর্যন্ত বিভিন্ন অজুহাতে রবিতার কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন যুবলীগ নেতা শ্যামল। গত মাসে বিয়ের দিনক্ষণ ঠিক করার কথা থাকলেও করা হয়নি। অবশেষে চাকরির জন্য নেওয়া ৫ লাখ টাকা ফেরত চাইলে উল্টো এনজিও কর্মীকে হুমকি দেন যুবলীগ নেতা শ্যামল চন্দ্র। তার অব্যহত হুমকিতে রবিতা রানী এনজিও'র চাকরিও ছেড়ে দেন বলেও অভিযোগ করেন।

শ্যালকের সঙ্গে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে হাতিয়ে নেওয়া টাকা উদ্ধার করতে স্থানীয়ভাবে বৈঠক বসলে আজ কাল বলে টালবাহনা করেন। অবশেষে নিরুপায় হয়ে টাকা ৫ লাখ উদ্ধার ও প্রতারক শ্যামল চন্দ্র এবং তার শ্যালক মোহন চন্দ্রের বিরুদ্ধে আদিতমারী থানায় লিখিত একটি অভিযোগ দায়ের করেন রবিতা রানী।

ভুক্তভোগী রবিতা রানী বলেন, বিয়ের প্রস্তাব দেওয়ায় ছেলের চাকরির জন্য ৫ লাখ টাকা দিয়েছি শ্যামলকে। বিয়ে তো করলই না। এখন খোঁজ নিয়ে দেখি তার শ্যালকের অনেক আগে বিয়ে হয়েছে। মোহন নামে যে শ্যালকের পরিচয় দিয়ে কথা বলেছি তা শ্যামল নিজেই। মুলত প্রতারণা করে টাকাগুলো হাতিয়ে নিয়েছে। ভাল ছেলের সঙ্গে বিয়ের আশায় ধার-দেনা করে টাকা দিয়েছি। টাকাও নেই, বিয়েও হলো না। এসব বিষয়ের প্রমাণ স্বরূপ তার সঙ্গে কথা বলার মোবাইল রেকর্ড রয়েছে। টাকা ফেরত না দিলে যুবলীগ নেতা শ্যামলের বাড়িতে বিষপানে আত্মহত্যার হুমকি দেন তিনি।

অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা শ্যামল চন্দ্র বলেন, আমি যুবলীগের ইউনিয়ন কমিটির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক। টাকা নিয়েছি, তার কি প্রমাণ আছে?। কোনো স্বাক্ষী নেই। মুলত আমার অভিযোগের কারণে রবিতা রানী চাকরিচ্যুত হয়েছেন। তাই প্রতিশোধ নিতে এ অভিযোগ দায়ের করেছেন।

আদিতমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৪ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০২১
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।