হবিগঞ্জ: হবিগঞ্জের নয়টি উপজেলার ওপর দিয়ে মঙ্গলবার (৩০ মার্চ) দিনগত রাতে বয়ে যাওয়া ১৫ মিনিটের ঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর তালিকা পুরোপুরিভাবে সম্পন্ন না হলেও ধারণা করা হচ্ছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ এক হাজারেরও বেশি টিনের ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে ঝড়ে।
বুধবার (৩১ মার্চ) দুপুরে হবিগঞ্জ সদর উপজেলার ছোট বহুলা গ্রামে গেলে স্থানীয়রা জানান, গ্রামটিতে পাঁচ শতাধিক টিনের ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সীমানা প্রাচীর ও বিদ্যুতের অনেকগুলো খুঁটি ভঙে মাটিতে পড়েছে। বিদ্যুতের তার পড়ে রয়েছে বাড়ি ও গাছের ওপর। প্রায় পাঁচশ’ গাছ লণ্ডভণ্ড হয়েছে। একইভাবে ক্ষতি হয়েছে নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি এলাকায়ও। এছাড়া জেলার নয়টি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ঝড়ে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
ছোট বহুলা এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, ঝড়ে ভেঙে পড়া বাসগৃহের ধ্বংস্তূপে বসে আছেন নারী-পুরুষ ও শিশুরা। কেউ কেউ নিজেদের অর্থে মেরামত শুরু করেছেন। তবে ঘর মেরামত করার সামর্থ্য না থাকায় অনেকেই বিপাকে পড়েছেন।
এলাকার লোকজন জানিয়েছেন, মঙ্গলবার রাতে প্রায় দেড় মিনিটের ঝড়ে ছোট বহুলা গ্রামের কিছু অংশ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। দু’জন জনপ্রতিনিধির বাড়ি ও একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ পাঁচ শতাধিক ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। অনেকগুলো বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পড়েছে।
হবিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার মো. মোতাহার হোসেন বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, জেলায় বিদ্যুতের ৪১টি খুঁটি ভেঙে পড়েছে। ১২০টি স্থানে গাছ ভেঙে পড়েছে লাইনের ওপর। আরও ৯৮টি স্পটে নানা ধরনের সমস্যা বের হয়েছে। মেরামত কাজ চলছে, পর্যায়ক্রমে কিছু কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ চালু করা হচ্ছে। জেলাজুড়ে এক হাজারেরও বেশি ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড হবিগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আব্দুল মজিদ বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, জেলা শহরে ১০টি খুঁটি ভেঙে পড়েছে। লাইনে গাছ পড়েছে প্রায় ৬০টি এলাকায়। ডালাপালা অপসারণের কাজ চলছে। এ পর্যন্ত শহরের ৬০ শতাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ এসেছে। বাকিগুলোতে পর্যায়ক্রমে দেওয়া হচ্ছে।
এদিকে, ক্ষতিগ্রস্ত ছোট বহুলা এলাকা পরিদর্শন করেছেন হবিগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য মো. আবু জাহির। তিনি ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে দ্রুত সহায়তা দিতে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়েছেন। ব্যক্তিগতভাবেও সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
এ বিষয়ে হবিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মর্জিনা আক্তার বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, প্রতিটি উপজেলায় ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করা হচ্ছে। দ্রুত এ তালিকা সম্পন্ন হবে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা দেওয়া হবে।
মঙ্গলবার (৩০ মার্চ) দিনগত রাত জেলাটির অধিকাংশ এলাকায় প্রায় ১৫ মিনিট ধরে প্রবল ঝড় ও প্রায় আধাঘণ্টা ধরে বৃষ্টির সঙ্গে ধমকা হওয়া বয়ে যায়। তখন থেকেই বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে ২০ লক্ষাধিক মানুষের বসবাসরত এ জেলা।
বাংলাদেশ: ১৬৩৯ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০২১
এসআই