জয়পুরহাট: ২০২০ সালের ১৯ ডিসেম্বর সকালে গেটম্যানের গাফিলতির কারণে জয়পুরহাটের পুরানাপৈল রেলক্রসিংয়ে ট্রেন-বাসের সংঘর্ষে বেঁচে থাকা একমাত্র যাত্রী ফারুক হোসেনের পাশে দাঁড়ালেন স্থানীয় সংসদ সদস্য (এমপি) অ্যাডভোকেট সামছুল আলম দুদু।
বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) বিকেল ৫টায় পাঁচবিবিস্থ তার বাস ভবনে আহত ফারুক হোসেনকে নগদ ২০ হাজার টাকা দেন তিনি।
জানা যায়, জয়পুরহাট থেকে হিলির উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া বাঁধন পরিবহনের বাসটি পুরানাপৈল রেলক্রসিং পার হওয়ার সময় পার্বতীপুর থেকে ছেড়ে আসা রাজশাহীগামী উত্তরা এক্সপ্রেস ট্রেনের সঙ্গে ধাক্কা লেগে। এতে ঘটনাস্থলেই ১০ জন যাত্রী নিহত হন। আহতাবস্থায় আরও ৪ জন জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতাল ও বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। কিন্তু ভাগ্যক্রমে ওই দুর্ঘটনায় ১৫ জনের মধ্যে পাঁচবিবি উপজেলার মালঞ্চা গ্রামের মোফাজ্জল হোসেনের ছেলে ফারুক হোসেন এখনো বেঁচে আছেন। তবে, নিদারুণ কষ্টের মধ্যে তাকে দিনপার করতে হচ্ছে।
জানা যায়, ফারুক হোসেন পেশায় একজন পাইকারী সবজি ব্যবসায়ী। দুর্ঘটনার দিন তিনিও ছিলেন ওই বাসে। ফায়ার সার্ভিসকর্মীরা অন্যদের মতো তাকেও ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে প্রথমে জয়পুরহাট আধুনিক আধুনিক জেলা হাসপাতাল ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য শজিমেক হাসপাতালে ভর্তি করেন। সবাই যখন মৃত্যুর মিছিলে চলে যায়, ফারুক হোসেন দীর্ঘদিন চিকিৎসা শেষে সম্প্রতি বাড়ি ফিরেছেন। কিন্তু সংসার চালানোর মতো আগের সেই অবস্থায় নেই ফারুক হোসেন। কারণ এ দুর্ঘটনায় তার ৬টি দাঁত, হাত-পা ও শরীরের বিভিন্ন অংশের হাড় ভেঙে গেছে।
চিকিৎসকরা বলেছেন, ফারুকের সুস্থ স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে সময় লাগবে এবং আরও উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন। কিন্তু তার সহায় সম্বল বলতে আর কিছুই নেই। একমাত্র উপার্জনক্ষম ফারুকের আয়েই চলতো দুই ছেলে-মেয়েসহ অভাবের সংসার। চিকিৎসা তো দূরের কথা, ফারুকের সংসারই যেন থমকে যেতে বসেছে। তার এমন দুর্বিষহভাবে বেঁচে থাকার বিষয়টি স্থানীয় এমপি অ্যাডভোকেট সামছুল আলম দুদুর নজরে এলে বৃহস্পতিবার বিকেলে ফারুককে পাঁচবিবিস্থ তার বাস ভবনে ডেকে নগদ ২০ হাজার টাকা তুলে দেন।
এ সময় অসহায় ফারুকের পাশে দাঁড়াতে সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসারও উদাত্ত আহ্বান জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ২৩৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৮, ২০২১
এএটি