ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জাদুকাটা নদীতে হাজারো মানুষের পূণ্যস্নান

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩১ ঘণ্টা, এপ্রিল ৯, ২০২১
নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জাদুকাটা নদীতে হাজারো মানুষের পূণ্যস্নান জাদুকাটা নদীতে মানুষের ঢল। ছবি: বাংলানিউজ

সুনামগঞ্জ: লকডাউনের মধ্যে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সুনামগঞ্জ সীমান্তের তাহিরপুরের জাদুকাটা নদীতে পূণ্যস্নানের জন্য সমবেত হয়েছে হাজারো মানুষ।

শুক্রবার (০৯ এপ্রিল) সকাল থেকে জাদুকাটা নদীতে পূণ্যস্নানের জন্য সমবেত হন এসব ধর্মপ্রাণ হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন।

 

করোনা সংক্রমণ রোধে সুনামগঞ্জে সব ধরনের গণজমায়েত, সভা, সমাবেশ এবং পর্যটন স্থানগুলোতে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। সেইসঙ্গে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সবচেয়ে বড় তীর্থস্থান সুনামগঞ্জ সীমান্তের তাহিরপুরের জাদুকাটা নদীতে হিন্দু সম্প্রদায়ের পূণ্যস্নানও।  

হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা জানান, চৈত্র মাসের মধুকৃষ্ণা ত্রয়োদশী তিথিতে জাদুকাটা নদীতে স্নান করলে সব পাপ মোচন হয় বলে প্রচলিত আছে। পূণ্য লাভের আশায় প্রতিবছরই দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে এ সময়ে লাখো মানুষ আসেন জাদুকাটা বা পূণ্যতীর্থে স্নান করতে। এ নদীতে স্নান করাকে অনেকে গঙ্গাস্নানের সমতুল্য মনে করেন। কিন্তু করোনার জন্য গত বছরও পূণ্যতীর্থে স্নানের অনুষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। এ বছরও একই অবস্থা তাই লকডাউনের মধ্যেও অনেকে ঝুঁকি নিয়ে পূণ্যস্নানের জন্য হাজারো হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ একত্রিত হয়েছে।

প্রচলিত আছে, ১৪০০ খ্রিস্টাব্দের মাঝামাঝি সময়ে মাকে গঙ্গাস্নান করানোর জন্য যোগ সাধনা বলে পৃথিবীর সমস্ত তীর্থের জল জাদুকাটা নদীর প্রবাহমান জলের ধারায় একত্রিত করে মাতৃআজ্ঞা পূরণ করেছিলেন তখনকার লাউর রাজ্যের সাধক ও সিদ্ধপুরুষ অদ্বৈতচার্য। তার সাধনাসিদ্ধ ফল বারুনী যোগ নামে অভিহিত। চৈত্র মাসের মধুকৃষ্ণা ত্রয়োদশী তিথিতে গঙ্গা, যমুনা, সরস্বতীসহ সাত পূণ্যনদীর প্রবাহ একসঙ্গে জাদুকাটায় (পূণ্যতীর্থে) এসে মিশে যায় বলেও বিশ্বাস করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। এজন্য তারা মনে করেন সব তীর্থের সেরা তীর্থ এটি। এখানে স্নান করলে গঙ্গাস্নানের চেয়েও বেশি পূণ্য হয় বলে বিশ্বাস রয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে।

সিলেট থেকে আসা সীমান্ত চক্রবর্তী বাংলানিউজকে বলেন, অনেক কষ্ট করে পরিবারকে নিয়ে গঙ্গাস্নান করতে এসেছি, গত বছর আসার কথা ছিল, কিন্তু করোনার জন্য লকডাউন ছিল তাই আসতে পারিনি। কিন্তু এ বছর বেশি টাকা খরচ করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মনের আশা পূরণ করতে এসেছি।

দোয়ারা বাজার থেকে আসা নিতিশ দে বলেন, আগামী বছর বাঁচব কি না জানিনা তাই লকডাউনের মধ্যেও গঙ্গাস্নান করতে চলে আসছি যা হবার হবে।

সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, আমরা সব রকমের চেষ্টা করছি জাদুকাটায় (পূণ্যতীর্থে) যাতে কেউ গণজমায়েত না করে কিন্তু সরকারি বিধি নিষেধ উপেক্ষা করেও অনেকেই সেখানে জমায়েত হয়ে পূণ্যস্নান করছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৯, ২০২১
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।