ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

সড়কবাতি পোড়ানো মামলার আসামিকেই পরামর্শক বানালো রাসিক

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ৯, ২০২১
সড়কবাতি পোড়ানো মামলার আসামিকেই পরামর্শক বানালো রাসিক

রাজশাহী: রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) সড়কবাতি পোড়ানোর মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামিকে পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। প্রায় তিন হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে রাসিকের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম মুর্শেদকে।

নিয়োগ পাওয়া গোলাম মুর্শেদ রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সড়কবাতি পোড়ানোর মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি।  

পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) মামলাটির তদন্ত করে গত বছরের ৭ ডিসেম্বর আদালতে চার্জশিট দিয়েছে।

অভিযুক্ত গোলাম মুর্শেদ রাজশাহী সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী পদ থেকে গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর অবসরকালীন ছুটিতে যান। এর পর গত ৪ এপ্রিল তাকে পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।

এদিকে পিবিআই সূত্র জানায়, রাসিক কর্তৃপক্ষ লক্ষ্য করে তাদের উদ্যোগে নগরের বিভিন্ন সড়কে লাগানো দামি এলইডি লাইটগুলো অকারণেই ঘন ঘন নষ্ট হচ্ছে। কারণ জানার জন্য রাসিকের সংশ্লিষ্ট বিভাগ নষ্ট লাইটগুলোর নমুনা বুয়েটে পাঠান। পরীক্ষার পর গত ১৭ সেপ্টেম্বর বুয়েট থেকে প্রতিবেদন দিয়ে জানানো হয় ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত বৈদ্যুতিক ভোল্টেজ পুশ করার কারণে সড়কে লাগানো এলইডি ও এলসিডি বাতিগুলো দ্রুত নষ্ট হয়েছে।  

রহস্যজনকভাবে পুড়তে পুড়তে গত এক বছরে রাসিকের কোটি টাকার সড়কবাতি পুড়ে গেছে। এরপর টনক নড়ে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের। এ নিয়ে গত বছরের ১৯ মে বোয়ালিয়া মডেল থানায় মামলা করেন সিটি করপোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সমর কুমার পাল। মামলাটির তদন্তভার পায় পিবিআই। এরপর ২০ মে রাসিকের বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মচারী মিজানুর রহমান শাহীন, ১৭ সেপ্টেম্বর উপ-সহকারী প্রকৌশলী শফিকুল হাসান ও ২১ অক্টোবর ইব্রাহিম হোসেনকে গ্রেফতার করে পিবিআই।

এরপরই বেড়িয়ে আসতে শুরু করে নেপথ্যে থেকে কারা এতদিন পুড়িয়েছেন নগর সড়কের বাতি। চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে, গ্রেফতারকৃতরা সড়কবাতি পোড়ানোর ঘটনায় নিজেদের জড়িত থাকার পাশাপাশি নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম মুর্শেদের জড়িত থাকার বিষয়টি উল্লেখ করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

গোলাম মুর্শেদকে বিদ্যুৎ শাখা থেকে অপসারণ করায় ক্ষোভে বিদ্যুৎ শাখার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ব্যবহার করে সড়কবাড়ি পুড়িয়েছেন বলেও এতে উল্লেখ করা হয়েছে।

সুশাসন বিশ্লেষক সুব্রত পাল বলেন, যে প্রতিষ্ঠান ওই ব্যক্তির নামে মামলা করলো, পুলিশ তদন্ত করে তার অপরাধ পেয়ে চার্জশিট দিলো, এমন একজন ব্যক্তিকে একই প্রতিষ্ঠানের পরামর্শক নিয়োগ দেওয়ার বিষয়টি হাস্যকর। এছাড়া এটি স্ববিরোধীতা। মামলা নিষ্পত্তি পর্যন্ত অপেক্ষা করে নিয়োগ দিলে এ নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ থাকতো না।

আর নিজেদের করা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামিকে পরামর্শক হিসেবে আবার সিটি করপোরেশনেই নিয়োগ দেওয়া প্রসঙ্গে প্রকল্প পরিচালক ও রাসিকের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী নূর ইসলাম তুষার বলেন ভিন্ন কথা।  

তিনি বলেন, আমরা তো বিষয়টা এভাবে ভেবে দেখিনি। তবে বিষয়টি আমাদের ভাবা দরকার ছিল। এখন যেহেতু প্রশ্ন উঠেছে, আমি বিষয়টি আমার ঊর্ধ্বতনদের জানাবো।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৯, ২০২১
এসএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad