ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

বর্ষবরণ হচ্ছে ভার্চ্যুয়াল আয়োজনে

ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮২৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৪, ২০২১
বর্ষবরণ হচ্ছে ভার্চ্যুয়াল আয়োজনে

ঢাকা: বাঙালির সবচেয়ে বড় উৎসবের নাম নববর্ষ। এ উৎসবকে বড় করেছি আমরাই; পূর্ব বাংলার বাঙালিরা।

বিশেষ করে বর্তমান সময়ে এসে ছায়ানট এবং মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়জন স্থান করে নিয়েছে বিশ্ব দরবারে।

করোনা পরিস্থিতির কারণে প্রতিবছরের মতো এবার হচ্ছে না সেসব আয়োজন। তবে থেমে থাকবে না বর্ষবরণও। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী বর্ষবরণের যাবতীয় অনুষ্ঠান করা হবে ভার্চ্যুয়ালভাবে।

ছায়ানটের আয়োজন:
১৯৬৭ সাল থেকে প্রতিবছর পহেলা বৈশাখে রমনার বটমূলে ভোরে অনাগত ভবিষ্যতকে স্বাগত জানিয়ে আসছে ঐতিহ্যবাহী সংগঠন ছায়ানট। ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধকালীন সময় আর গত বছরের করোনার কারণে আয়োজন বন্ধ হওয়া ছাড়া সত্য সুন্দরের গান একবারও থামেনি। তবে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে দ্বিতীয়বারের মতো থেমে গেল ছায়ানটের বাংলা বর্ষবরণের আয়োজন। গেল বছরের মতো এবারও রমনার বটমূলে ছায়ানটের ঐতিহ্যবাহী অনুষ্ঠান হচ্ছে না। তবে ছায়ানটের আয়োজন তুলে ধরা হবে বাংলাদেশ টেলিভিশনে। সকাল ৭টা থেকে বিটিভিতে ৫০ মিনিটের আয়োজনের মধ্য দিয়েই বৈশাখের পুরো অনুষ্ঠান ভার্চুয়ালি তুলে ধরবে ছায়ানট। ছায়ানটের ইউটিউব চ্যানেলেও অনুষ্ঠানটি দেখা যাবে।

এ বিষয়ে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক খায়রুল আনাম শাকিল জানান, আমাদের পরিকল্পনা ছিল রমনার বটমূলেই জনশূন্য অবস্থায় যদি অনুষ্ঠানটা করতে পারতাম, তাহলে আমাদের মন খুব ভালো থাকত। কিন্তু বর্তমানে যা পরিস্থিতি তাতে করে মানুষের মনে পহেলা বৈশাখ উদযাপন করার মতো সেই আনন্দটা নাই। মাহামারীকে যেন কাটিয়ে উঠতে পারি সেইধরণের কিছু গান দিয়ে সাজিয়েছি পহেলা বৈশাখের আয়োজনকে।

মঙ্গলশোভাযাত্রার আয়োজন:
এ বছরই মঙ্গলশোভাযাত্রার তিরিশ বছর পূর্তি হচ্ছে। করোনা মহামারির কারণে এবারও জাতিসংঘের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ইউনেসকোর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজনও বাতিল করা হয়েছে। তবে জনসমাগমে সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকায় চারুকলা থেকে প্রতীকীভাবে বর্ষবরণের আয়োজনের একটি অনুষ্ঠান বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচার করা হবে।

দেয়ালে আলপনা:
পহেলা বৈশাখের চিরন্তন রূপকে তুলে ধরতে বরাবরের মতো এবারও উদ্যোগ নিয়েছেন চারুকলার শিক্ষার্থীরা। সপ্তাহখানেক আগে থেকেই তারা চারুকলার দেয়াল রাঙিয়ে তুলেছেন। এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় ‘কাল ভয়ংকরের বেশে এবার ওই আসে সুন্দর’। এই বিষয়কে অনুসর করে উজ্জ্বল রঙয়ের পরিবর্তে ধূসর রঙ ব্যবহার করা হয়েছে। আর এসব আল্পনার মধ্য দিয়েই করোনাকালিন বর্ষবরণের আয়োজন করছেন শিক্ষার্থীরা।

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর:
সকাল ১১টায় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ফেসবুক পাতায় অনলাইনে সরাসরি ‘নববর্ষ বরণ ১৪২৮’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করবেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের অন্যতম ট্রাস্টি আসাদুজ্জামান নূর। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন লেখক, সাংবাদিক আবুল মোমেন। অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করবেন শিল্পী বুলবুল ইসলাম, অদ্বিতি মহসিন, শারমিন সাথী ইসলাম ময়না ও বিমান চন্দ্র বিশ্বাস। নৃত্য পরিবেশন করবে স্পন্দন, আবৃত্তি পরিবেশন করবেন আবৃত্তিশিল্পী ইকবাল খোরশেদ জাফর ও অনন্যা লাবনী পুতুল। বাউল গান পরিবেশন করবেন বাউল দেলোয়ার ও সোনিয়া।

এদিকে, করোনাকালের মন্দা হওয়ায় বিবর্ণ এবার পহেলা বৈশাখের সব উৎসব আয়োজন। ইলিশের বাজারে ধুম নেই, ফুলের দোকানেও নেই ক্রেতা। পহেলা বৈশাখের অন্যতম অনুষঙ্গ হালখাতার পাতাও এবার খোলা হবে না। গ্রাম-বাঙলার জীবনেও মেলা আর নানা উৎসবে পড়ছে ভাটা।

বাংলাদেশ সময়: ০৮০৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৪, ২০২১
এইচএমএস/এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।