কক্সবাজার: প্রথম দিন একটু কড়াকড়ি লক্ষ্য করা গেলেও দ্বিতীয় দিন এসে কক্সবাজারে ‘সর্বাত্মক লকডাউন’ চলেছে ঢিমেতালে। নানা অজুহাতে মানুষ ঘর থেকে বেরিয়ে পড়েছেন।
মানুষকে ঘরে রাখার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে নানা তৎপরতা দেখা গেলেও মানুষ তা মানছে না। অনেকেই দেখা গেছে প্রধান সড়কে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর টহল টিমকে দেখে গলিতে ঢুকে পড়ছেন, পরক্ষণেই আবার রাস্তায় বের হয়ে আসছেন। আর এ কারণে অনেককে ভ্রাম্যমাণ আদালতের হাতে জরিমানাও গুণতে হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে শহরের কালুর দোকান, বার্মিজ মার্কেট, বাজারঘাটা, বড়বাজার ও লালদীঘি এলাকায় ঘুরে মানুষের আনাগোনা দেখা গেছে।
প্রধান সড়কের চেয়ে শহরের আবাসিক এলাকা ও অলিগলিতে লোকসমাগম ছিল বেশি। শহরের প্রধান সড়ক ও অলিগলিগুলোতে ব্যাটারি চালিত রিকশা, টমটম ও সিএনজি চালিত অটোরিকশা চলাচল করতে দেখা গেছে।
এ অবস্থায় প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সরকারের আরোপিত বিধি-নিষেধ মানাতে হিমশিম খেয়েছেন।
ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে শহরের হলিডে মোড়, লাবনী, সুগন্ধা ও কলাতলী সৈকত এলাকায়। সেখানে একেবারে শুনশান নীরবতা। সৈকতের পর্যটনকে ঘিরে গড়ে ওঠা এসব এলাকা একেবারে ফাঁকা। পাশের পুরো সৈকতও জনশূন্য। এখানকার হোটেল-মোটেল জোনের প্রায় ৪৫০টি হোটেল ও অন্তত দুই হাজার দোকান–রেস্তোরাঁ গত ১ এপ্রিল থেকে বন্ধ রয়েছে।
দুপুরে শহরের কলাতলী ডলফিন মোড়, বাসটার্মিনাল ও লিংক রোড পর্যন্ত সড়কে দেখা যায়, পুলিশ শহরের প্রবেশদ্বার লিংক রোড় ও কলাতলীর মেরিন ড্রাইভ রোডের মাথায় কড়া পাহারা বসিয়েছে। লিংক রোড চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক ও কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়কের সংযোগস্থল। পুলিশ সেখানে চেকপোস্ট বসিয়ে যাতায়াত নিয়ন্ত্রণ করছে। সেখানে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালতও টহল দিচ্ছে।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান সকাল থেকে মাঠে নেমে পরিস্থিতি তদারকি করছিলেন। তিনি চলাচলকারী যানবাহন ও পথচারীদের থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন এবং জনসাধারণকে বিধিনিষেধ মেনে চলতে উদ্বুদ্ধ করেন।
পুলিশ সুপার বাংলানিউজকে জানান, করোনা সংক্রমণ রোধে পুলিশের একাধিক টিম মাঠে রয়েছে। সরকারের আরোপিত বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে পুলিশ কঠোর ভূমিকা পালন করছে। পাশাপাশি ভ্রাম্যামাণ আদালতকে সহযোগিতা ও জনসাধারণকে স্বাস্থ্যবিধি মানতে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. আমিন আল পারভেজ বাংলানিউজকে বলেন, জেলা প্রশাসনের পাঁচটি ভ্রাম্যমাণ টিম শহরে কাজ করছে। এছাড়া জেলার আট উপজেলার নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনারদের নেতৃত্বে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকারি বিধি-নিষেধ পালনে মাঠে রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৫, ২০২১
এসবি/এমজেএফ