রাজশাহী: করোনা সংক্রমণরোধে শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করে রাজশাহীতে প্রথমদিন গণপরিবহনে তেমন কোনো পরিবর্তন দেখা যায়নি। অনেকটা আগের নিয়মেই চলছে গণপরিবহন।
বাসে ওঠার আগে হাত সেনিটাইজার করছেন না কেউই। কেউ কেউ মাস্ক পরলেও বেশিরভাগ মানুষেরই মাস্ক থাকছে থুতনিতে। বলা যায়- স্বাস্থ্যবিধি মানার বালাই নেই।
এরপরও আন্তঃজেলা রুটের গণপরিবহনে পরিবহনে ৬০ শতাংশ হারে বেশি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। আর আসন ফাঁকা রাখা নিয়ে বাসের সুপারভাইজার ও হেলপারের সঙ্গে যাত্রীদের তর্কবিতর্কের সৃষ্টি হচ্ছে। অনেক যাত্রী পাশাপাশি বসতে চাইছেন, কিন্তু বাড়তি ভাড়া দিতে রাজি হচ্ছেন না। আবার অনেক যাত্রী বাড়তি ভাড়া দেওয়ার পর পাশের আসন যাত্রী তোলায় সুপারভাইজার-হেলপারের সঙ্গে বিতর্কে জড়িয়ে পড়ছেন। অনেক যাত্রী আবার প্রথমদিনে ভাড়া বাড়া সম্পর্কে জানেন না দাবি করে বাড়তি ভাড়া দিতে চাচ্ছেন না। এ নিয়ে হট্টগোল চলছেই।
এদিকে, বৃহস্পতিবার (৬ মে) থেকে শহরে গণপরিবহন ও আন্তঃজেলা রুটের পরিবহন চালুর সরকারি নির্দেশনা থাকলেও ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করছেন মোটরশ্রমিকরা। তারা গণপরিবহন চালুর পাশাপাশি দূরপাল্লার বাসও ছাড়ছেন। সকাল থেকে রাজশাহীর শিরোইলে থাকা কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল, নওদাপাড়া বাস টার্মিনাল ও ভদ্রা স্মৃতি অম্লান চত্বরে থাকা বাস স্টপেজে ঘুরে এমন চিত্রই পাওয়া গেছে।
দেখা গেছে, রাজশাহী থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, জয়পুরহাট, নাটোর, বগুড়া, পাবনা ও সিরাজগঞ্জের পাশাপাশি রংপুর, কুষ্টিয়া, ফরিদপুরসহ বিভিন্ন দূরপাল্লার রুটের বাসও একটি দু’টি করে ছাড়ছে। তবে এখন পর্যন্ত ঢাকা-রাজশাহী, রাজশাহী-খুলনা, রাজশাহী-চট্টগ্রাম, রাজশাহী-সিলেট, রাজশাহী-বরিশাল রুটের কোনো দূরপাল্লার বাস ছাড়তে দেখা যায়নি।
যদিও বৃহস্পতিবার রাজশাহী থেকে যেকোনো মূল্যে সব রুটের বাস চলাচল শুরু করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন রাজশাহী মোটরশ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মাহাতাব হোসেন। মঙ্গলবার (৪ মে) বিকেলে তিনি এ ঘোষণা দিয়েছিলেন। ওই দিন তিনি সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছিলেন, বাস চলাচলে কোনো ধরনের বাধা মানা হবে না। যেখানে বাস চলাচলে বাধা দেওয়া হবে, সেখানেই ব্যারিকেড গড়ে তোলা হবে।
মাহতাব হোসেনের ভাষ্য- আন্তঃজেলা বাস যদি চলে, তাহলে দূরপাল্লার বাস চললে সমস্যাটা কোথায়? বরং দূরপাল্লার বাসেই ক্ষতির আশঙ্কা কম। বাসেই সবচেয়ে বেশি স্বাস্থ্যবিধি মানা হয়। কাউন্টার থেকে শুরু করে বসার আসন পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মানে পরিবহন শ্রমিকরা এতে কোনো সন্দেহ নেই। পরিবহন শ্রমিকরা মাস্ক ছাড়া কোনো যাত্রী কাউন্টারে প্রবেশ করতে দেয় না। এছাড়া বাসে উঠার আগেই হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করানো হয় প্রতিটি যাত্রীকে।
তিনি বলেন, করোনাকালে মোটরশ্রমিকরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমাদের যানবাহন চলছে না দীর্ঘদিন থেকে। শ্রমিকদের কাজ নেই, তারা আর্থিকভাবে ক্ষতির মধ্যে আছে। এর মধ্যে সামনে ইদ। সবমিলে আমরা শ্রমিকরা ভীষণ কষ্টে আছেন। তাই কোনো বাধা মানা হবে না। তবে বাস চালুর পর আজ তিনি কোনো বক্তব্য দিতে চাননি।
এদিকে, দূরপাল্লার বাস ছাড়ার বিষয়ে রাজশাহী বাস মালিক সমিতির সভাপতি মতিউল হক টিটোর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনিও এ ব্যাপারে কথা বলতে রাজি হননি।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৫ ঘণ্টা, মে ০৬, ২০২১
এসএস/ওএইচ/