ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ঈদে অতিথি আপ্যায়নে বগুড়ার দই থাকবে না তা কী হয়!

কাওছার উল্লাহ আরিফ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৩ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০২১
ঈদে অতিথি আপ্যায়নে বগুড়ার দই থাকবে না তা কী হয়!

বগুড়া: দইয়ের নাম শুনলে জিভে জল আসে না এমন মানুষ খুব কমই আছে। অতিথি আপ্যায়নে দইয়ের বিকল্প নেই।

আর তাই ঈদে অতিথি আপ্যায়নের জন্য শেষ মুহূর্তে সবাই ছুটছেন মিষ্টান্ন সামগ্রীর দোকানগুলোতে। তবে এসব দোকানে সবার আগ্রহের কেন্দ্রে দই। তাই মিষ্টান্নের দোকানে দই ঘিরে ভিড় লেগেছে।

বৃহস্পতিবার (১৩ মে) বেলা ১১টার দিকে শহরের নামকরা বিভিন্ন হোটেল, শো-রুম ও মিষ্টির দোকানগুলোতে দেখা যায় ক্রেতাদের ভিড়।

দেশজুড়েই রয়েছে বগুড়ার দইয়ের খ্যাতি। এ জেলার দই স্বাদে ও গুণেমানে অনন্য। এ কারণে এখানকার গৃহিণীরা অতিথিকে খ্যাতির দই দিয়ে আপ্যায়ন করানোকে অনেকটা গৌরব মনে করে থাকেন। খ্যাতির এ দইয়ের জন্মস্থান জেলার শেরপুর উপজেলায়। প্রায় ২০০ বছর আগে পৌর এলাকার ঘোষপাড়ার ঘোষ বংশের লোকজন নিজেদের গৃহপালিত গাভীর দুধ থেকে দই তৈরি শুরু করে। এরপর আস্তে আস্তে এর বিস্তার হতে থাকে।

বরাবরের মতো ঈদকে ঘিরে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দইসহ বিভিন্ন ধরনের মিষ্টান্ন সামগ্রীর দাম বাড়িয়ে দেন ব্যবসায়ীরা এমন অভিযোগ করেন ক্রেতারা। আর অভিযোগ অস্বীকার করেন ব্যবসায়ীরা।

এদিকে দাম বৃদ্ধির কথা স্বীকার করলেও এর যথেষ্ট কারণ দেখাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। দেশে করোনা পরিস্থিতিতে এলোমেলো হয়ে পড়েছে ব্যবসা। এরমধ্যে রমজান মাসসহ ঈদের আগে দুধের দাম বাড়তি চলে যায়। প্রতিকেজি দুধের দাম ৪০-৪৫ টাকা থেকে বেড়ে বর্তমানে ৬০-৭০ টাকা দরে ক্রয় করতে হয়েছে। আর দই তৈরির প্রধান উপাদানই হলো দুধ। এ কারণে দুধের দামের সঙ্গে সমন্বয় করে অন্য সময়ের মতো সীমিত লাভ ধরেই তারা দই বিক্রি করছেন।

ক্রেতা ইদ্রিস ব্যাপারি, তৈয়র উদ্দিন, শেখ মান্নান বাংলানিউজকে বলেন, ঈদে প্রতিটি বাড়িতে চলে ভাল রান্নার আয়োজন। পরিবার ও আত্মীয়-স্বজন নিয়ে এক সঙ্গে চলে খাওয়া দাওয়া। খাওয়ার পর এ অঞ্চলের সিংহভাগ মানুষ দই খাওয়া পছন্দ করেন। তাই ঝাল খাওয়ানো শেষে প্রতিবেশি, আত্মীয়-স্বজন ও নিমন্ত্রণে আসা অতিথিকে খ্যাতির এই দই খাওয়ানোটা বগুড়াবাসির রেওয়াজে পরিণত হয়েছে।

তারা বলেন, ঈদ সন্নিকটে এলেও প্রায় সব দোকানেই দরদাম করে মিষ্টি কিনতে পারেন ক্রেতারা। তবে দইয়ের ক্ষেত্রে চিত্রটা পুরোটাই আলাদা। একটু নামকরা প্রতিষ্ঠান হলেই প্রতি সরা দইয়ের বিপরীতে বাড়তি টাকা গুণতে হচ্ছে যোগ করেন এসব ক্রেতা।

তারা আরও বলেন, খ্যাতি ছড়ানো বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে দইসহ এসব মিষ্টান্ন সামগ্রীর দাম কেজিপ্রতি আরও ৩০-৫০ টাকা বেশিতে বিক্রি হচ্ছে। তবুও পরিবার, আত্মীয় স্বজন, নিমন্ত্রণে আসা অতিথির জন্য বেশি টাকা গুনতে হলেও দই কিনতেই হবে।

বিক্রেতা শামীম আমম্মেদ, সাকিব বাংলানিউজকে জানান, প্রতি পিস স্পেশাল সরা দই ১৬০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৮০ টাকা, বাটি দই ৯০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১১০ টাকা, ক্ষিরসা ৩৬০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩৮০ টাকা, চমচম, মৌচাকা, কালোজাম (বড়) মিষ্টি প্রতিকেজি ২২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২৪০ টাকা, কালোজাম (ছোট) ২০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২২০ টাকা, রাজভোগ ২২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২৪০ টাকা, হাসিখুশি ২৪০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২৬০ টাকা, কমলা, (ছোট), লালমণ ২২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২৩০ টাকা, সন্দেশ ৩৬০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪০০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, দইয়ের বেলায় চিত্রটা বেশ ভিন্ন। অনেক দোকানেই প্রতি সরা স্পেশাল দই ১৬০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২৩০ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছে। সাধারণ দই ১৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে নেওয়া হচ্ছে ১৯০ টাকা।

বাংলাদেশ সময়: ১২৪৮ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০২০
কেইউএ/এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।