ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

তিন দিন পানি নেই, হুমায়ুন রোডের সরকারি ভবনে ঈদ পণ্ড!

স্পেশাল করেসপেন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪১ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০২১
তিন দিন পানি নেই, হুমায়ুন রোডের সরকারি ভবনে ঈদ পণ্ড!

ঢাকা: মোহাম্মদপুর এলাকার ৪/১০ নম্বর হুমায়ুন রোডের সরকারি দ্বিতল ভবনে গত তিনদিন ওয়াসার কোনো পানি সরবরাহ নেই। এই অবস্থা ঈদের দিনেও অব্যাহত থাকায় ওই সরকারি ভবনের বাসিন্দা ও আশপাশের এলাকার অন্তত ৫০ পরিবারের ঈদ পণ্ড হয়ে গেছে।

বাসিন্দাদের অভিযোগ, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বারবার অনুরোধ করেও পানির সমস্যার সমাধান পাননি। ঈদের দিনটিতেও পানি না পাওয়ায় গোসলসহ রান্নাবান্নার কাজে ব্যাঘাত ঘটে নিরানন্দ ঈদ কাটছে সেই পরিবারগুলোর।

ওই সরকারি ভবনের একজন বাসিন্দা ঈদের দিন শুক্রবার (১৪ মে) বাংলানিউজকে বলেন, আমরা ২৮ রমজান থেকে পানিবিহীন দিন কাটাচ্ছি এবং ইফতার ও সাহরির খাবার রান্না করেছি কেনা পানি দিয়ে। এমনকী পানিবিহীন ইফতারির পর গতরাতে (১৩ মে) কোনো রান্নাবান্না করাও সম্ভব হয়নি। ফলে পরিবারের পাঁজজন সদস্য না খেয়েই ছিলাম।

তিনি জানান, ২০ বছর যাবত এই বাসায় বসবাসরত থাকাবস্থায় এ ধরনের সংকটে কখনো পড়িনি। ফলে পানি সংরক্ষণ ব্যবস্থাও গড়ে তোলা হয়নি। আগে মাঝে মধ্যে পানির অভাব ঘটলেও একসময় পানি সরবরাহ স্বাভাবিক হলে পানি সংকট ঘটতো না। তবে রোজার মাসে এতদিন দিনে কোনো পানি সরবরাহ না থাকলেও রাতে পাওয়া যেত।

‘কিন্তু গত তিনদিনসহ ঈদুল ফিতরের দিনও ওয়াসার লাইনে কোনো পানি সরবরাহ নেই। ফলে নামাজ-রোজা, গোসল, রান্নাবান্নার কী অবস্থা, তা সহজে অনুমেয়। এই তিন-চারদিন আমরা পানির মেশিন চালু করে সারা রাত-দিন পানির আশায় বিনিদ্র রজনী কাটিয়েছে। ’

ভবনের বাসিন্দা ওই কর্মকর্তা জানান, তিনদিনের চরম কষ্টের মধ্যে গত রাত ৩টার দিকে সামান্য কিছু পানি পাওয়া গেছে। তা দিয়েই চলছে পবিত্র ঈদুল ফিতরের আয়োজন। এই পানিটুকু শেষ হলে সারাদিন আবার নিদারুণ কষ্ট করতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, রোজার শেষের দিকে কোনো ঘোষণা ছাড়াই ওয়াসা কেন পানি সরবরাহ বন্ধ করে কারবালার কষ্ট দিচ্ছে, তা বোধগম্য নয়। এটি সরকারি বাসা হওয়ায় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত রক্ষণাবেক্ষণ বিভাগের সংশ্লিষ্ট উপবিভাগীয় প্রকৌশলী তোফায়েল আহমেদসহ পানির মিস্ত্রি শফিকেও এই সমস্যা জানিয়ে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে ঈদের দিন সংশ্লিষ্ট উপবিভাগীয় প্রকৌশলী তোফায়েল আহমেদকে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
 
এই পরিবারের পাঁচজন সদস্য করোনা আক্রান্ত হয়ে এরআগে বিদ্যুতের সমস্যার জন্য সমাধান পাননি বলে অভিযোগ তার। তিনি বলেন, ২০ মার্চ থেকে ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়ে ঘরবন্দি থাকাবস্থায় তিনটি রুমের মধ্যে দুই রুমেরই এলইডি লাইট নষ্ট হয়ে যায়। তখন রক্ষণাবেক্ষণ বিভাগের সংশ্লিষ্টদের জানালেও সমাধান হয়নি। শেষমেষ অসুস্থ শরীর নিয়ে অনেক জায়গায় দৌড়াদৌড়ি করে লাইট সমস্যার সমাধান করতে বাধ্য হয়েছি।

রক্ষণাবেক্ষণ কর্মকর্তাদের এমন অমানবিকতা ও দায়িত্বে অবহেলার তদন্ত করে শাস্তি দাবি করেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৭ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০২১
এমআইএইচ/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।