ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

নিরানন্দেও আনন্দের ঈদ

ইসমাইল হোসেন, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪৯ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০২১
নিরানন্দেও আনন্দের ঈদ ছবি: ডি এইচ বাদল

ঢাকা: উনত্রিশ রোজার সন্ধ্যায় এবছর আকাশে ঈদের চাঁদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। রোজা একদিন বেড়ে যাওয়ায় আনন্দ উঁকি দেয় বিপণি বিতানের ব্যবসায়ীদের চোখে-মুখে।

যারা ঈদে কিছুই কিনবেন না তারাও হয়েছেন মার্কেটমুখী। তাই চাঁদ রাত ছিল দু’দিন। মহামারিকালে আনন্দ বেড়ে যায় পাড়া-মহল্লার শিশু-কিশোরদের মনে। ঈদের দিন সকাল থেকেই সেই আনন্দ পূর্ণতা পায় প্রায় শতভাগ।
ঈদগাহে যাওয়া যাবে না- সরকারি এমন বিধি-নিষেধের লাগাম ছিল, মাস্ক পরে যেতে হবে। এসব মেনেছেন নগরবাসী। ঈদের দিন রৌদ্র করোজ্জল সকালে নতুন পাজামা-পাঞ্জাবি পরে মাথায় টুপি দিয়ে গায়ে সুবাস মেখে দলে দলে মসজিদে ছুটেছেন ছেলে-যুবা-বুড়োরা। নতুন পোশাক আর সুরমা-আতরের সুগন্ধে এক কাতারে সবাই।

বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদসহ মসজিদে মসজিদে নামাজ হলো, দোয়া-মোনাজাত হলো করোনা মহামারির মুক্তির জন্য, মহামারিতে মারা যাওয়া মানুষের জন্য। ফিলিস্তিনে হামলায় নিহতের জন্যও দোয়া করেছেন মুসলিম উম্মাহ।
ঈদের নামাজের আনুষ্ঠানিকতা শেষে ঐতিহ্যের হাত মেলানো-কোলাকুলি হয়নি খুব বেশি। বড়রা ঘরে ফেরার আগে কবরস্তানে গিয়ে দোয়া করেছেন কবরবাসীর জন্য, সঙ্গে শিশু-কিশোররাও। পাড়া-মহল্লায় ঈদের মেলা বসেনি। তবে রাজধানীর বিভিন্ন গলির মধ্যে কেউ কেউ বসেছেন ছেলে ভুলানো ভুভুজেলা কিংবা খেলানার পসরা নিয়ে। পুরান ঢাকার অলিগলিতে দেখা মিলেছে এমন চিত্র। আবার কেউ সামিয়ানা টানিয়ে বিকেল থেকেই একসাথে বসে আনন্দ ভাগাভাগি করছেন।

মহামারি থেকে দূরে থাকতে এবারের ঈদে বিনোদন পার্কগুলো বন্ধ। কিন্তু মানুষ বেরিয়ে পড়েছেন কিছুটা মুক্ত হাওয়ায় হাতিরঝিল কিংবা লেক-পার্কে। ছেলে-মেয়েদের হাতে ধরিয়ে দিয়েছেন খেলনাসামগ্রী।
সরকারি বিধি-নিষেধে গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও মানুষ নিজস্ব উপায়ে আগেই গেছেন গ্রামের বাড়ি। তারা বাবা-মাসহ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঈদ করছেন, ঈদের পূর্ণতা তো তাদের সেখানেই!

রাষ্ট্রের শীর্ষ কর্তারা এবার সাধারণের সঙ্গে ঈদের আনন্দ সরাসরি বিনিময় করতে পারেননি। তবে ইমেইল, ই-কার্ড, এসএমএস কিংবা ফোনকলে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন তারা। প্রধানমন্ত্রীর ঈদ শুভেচ্ছা এসেছে ভিডিওবার্তায় ও মোবাইল ফোনের কলে। আনন্দের বার্তা দেওয়ার পাশাপাশি তারা সতর্ক করেছেন করোনা নিয়েও।

ঈদে রাজধানী ছেড়ে যাওয়া ষাট লাখের বেশি মানুষ যেভাবে বাড়ি গেছেন তারা আবারও সেভাবে ফিরলে আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন স্বাস্থ্যবিদরা। আর দেশে করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট আরও ভাবিয়ে তুলেছে। তাই ‘লকডাউন’ আগামী ১৬ মের পর আরেক দফা বাড়তে পারে বলে চিন্তা করছে সরকার।

পরস্পরকে ‘ঈদ মোবারক’ শুভেচ্ছা জানিয়ে মানুষের চলাফেরায় সতর্কতা অবলম্বন করে নিপাত যাক করোনা- সেই প্রত্যাশাই এখন সবার।  

বাংলাদেশ সময়: ২০৪০ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০২১
এমআইএইচ/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।