নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে মাদকসক্ত ছেলের হাতে গুরুতর আহত হয়েছেন এক মা। শুধু তাই নয়, দিন দুপুরে প্রকাশ্যে মায়ের মুখ বেঁধে বটি দিয়ে গলা কেটে হত্যার চেষ্টার সময় প্রতিবেশীদের প্রতিরোধে উদ্ধার হন সেই মা।
শুক্রবার (২১ মে) সকালে উপজেলার দাউদপুর ইউনিয়নের বীর হাটাবো নাগদা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী মা রাবেয়া বেগমের স্বীকারোক্তি ও রূপগঞ্জ থানায় তার অভিযোগ দায়ের পর সূত্রে জানা যায়, রাবেয়া বেগমের স্বামী নুরুল ইসলাম জীবিত থাকাকালে বড় আমদিয়া মৌজায় আরএস ১৪৫৮ নম্বর দাগে চার শতক জমিসহ বসতঘর তার নামে হেবানামা দলিল করে মালিকানা দিয়ে যান। তবে একমাত্র মেয়ে ঝর্ণা আক্তারকে জমি না দিয়ে শুধুমাত্র তিন ছেলেদের নামে দেন তিনি। কিন্তু ওই তিন ছেলের কেউই নিজ মা হিসেবে রাবেয়া বেগমের ভরণ-পোষণ না করায় বাধ্য হয়ে মেয়ে ঝর্ণার বাড়িতে বসবাস করে আসছিলেন তিনি। তাই ভরণ-পোষণ সন্তুষ্টির জন্য মেয়ে ঝর্ণাকে তার মালিকানা থেকে দুই শতক লিখে দেওয়ার জেরে তার তিন ছেলে কমল (৩৫), আব্দুর রাজ্জাক (৩২), জহিরুল ইসলামের সঙ্গে বিরোধ তৈরি হয়। ওই বিরোধের জেরে গত ২১ মে সকাল ৯টার দিকে কিছু বুঝে ওঠার আগেই তিন ছেলে মিলে মাকে জেরা করতে থাকেন। এক সময় মায়ের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে প্রথমে লাঠি দিয়ে আঘাত করেন। পরে মুখে কাপড় বেঁধে বটি দিয়ে জবাই করার চেষ্টা করেন তারা। এ সময় পাশের বাড়ির লোকজন এগিয়ে এসে তার ছেলেদের হাত থেকে মা রাবেয়া বেগমকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়।
এ খবর শুনে মেয়ে ঝর্ণা আক্তার ও তার স্বামী বাড়িতে প্রবেশ করতে চাইলে তাদের লাঠিসোটা দিয়ে ধাওয়া দিয়ে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। পরে এ ঘটনায় মা রাবেয়া বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
রাবেয়া বেগমের দাবি, তাদের মধ্যে মেঝ ছেলে আব্দুর রাজ্জাক ও ছোট ছেলে জহিরুর ইসলাম নিয়মিত মাদকসেবন করেন। তাই তাদের আচরণ ভালো ছিল না কখনো। তারা বিভিন্ন কারণে আমাকে মারধর করতেন।
এদিকে হামলাকারী তিন ছেলে পলাতক থাকায় তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
রূপগঞ্জ থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আশরাফুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, এ ধরনের অভিযোগ পেয়ে তদন্ত করছি। বিষয়টি জমি সংক্রান্ত বিরোধ। আহত মায়ের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০০ ঘণ্টা, মে ২১, ২০২১
আরআইএস