ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৯ ফাল্গুন ১৪৩১, ০৪ মার্চ ২০২৫, ০৩ রমজান ১৪৪৬

জাতীয়

মেরিন ড্রাইভ সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে ভাঙন

সুনীল বড়ুয়া, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪৬ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০২১
মেরিন ড্রাইভ সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে ভাঙন

কক্সবাজার: ঘূর্ণিঝড় ইয়াস এবং পূর্ণিমার প্রভাবে বঙ্গোপসাগরের প্রবল ঢেউয়ের ধাক্কায় কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের বেশ কয়েকটি পয়েন্টে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে।

উত্তাল সাগরের ঢেউ আছড়ে পড়ায় সড়ক রক্ষায় বসানো জিওব্যাগ ছিঁড়ে বিভিন্নস্থানে মাটি সরে গেছে।

উপড়ে গেছে রাস্তার পাশের ঝাউগাছ। এ অবস্থায় দ্রুত ভাঙন ঠেকানো না গেলে হুমকির মুখে পড়বে অপার সৌন্দর্যের সড়কটি।

বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের তীর ঘেঁষে কলাতলী মোড় থেকে তৈরি করা হয়েছে ৮০ কিলোমিটার কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়ক। এ সড়ক ধরে যেতে যেতে চোখে পড়ে পাহাড় সমুদ্রের অপূর্ব মেলবন্ধন। পাহাড় ও সমুদ্রের মিতালী। যা পর্যটকদের বিমোহিত করে।

চার বছর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সড়কটি উদ্বোধন করেন। প্রায় ২৫ বছর ধরে তিন ধাপে এক হাজার ৫০ কোটি ব্যয়ে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে সড়কটি নির্মাণ করা হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে সাগরের পানির উচ্চতা ৭-৮ ফুট বেড়ে কক্সবাজার উপকূল প্লাবিত হয়। গত মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তিনদিনে হিমছড়ি, ইনানী, পাতুয়ারটেক ও টেকনাফ অংশে কয়েকটি স্থানে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার (২৭ মে) দুপুরে এ সড়কের আট কিলোমিটার এলাকায় হিমছড়ি সৈকতে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে অন্তত ৩০০ মিটার এলাকায় বেশ কয়েকটি বড় ভাঙন তৈরি হয়েছে। হিমছড়ি জাতীয় উদ্যান ও পুলিশ ফাঁড়ির সামনে জিওব্যাগ ছিঁড়ে সড়কের মাটি খুঁড়ে নেমে গেছে। পাশে সৈকত তীরে গড়ে তোলা জেলা পরিষদের দুতলা গেষ্টহাউসটি ভাঙনের মুখে হেলে পড়েছে।

হিমছড়ির ব্যবসায়ী মো. আলম (৪০) জানান, এবারের ঘূর্ণিঝড়ে জোয়ারের তীব্রতা ছিল বেশ অস্বাভাবিক। জোয়ারের পানি সড়ক উপচে রাস্তার উপরে চলে এসেছে।

হিমছড়ি বাজার সংলগ্ন জেলা পরিষদের গেষ্ট হাউসের সঙ্গে লাগোয়া ছোট চায়ের দোকানদার হাফিজুর রহমান জানান, হিমছড়ি সৈকত বছর-দুয়েক ধরে ভাঙনের মুখে রয়েছে। এবার ভাঙন সড়ক পর্যন্ত চলে এসেছে। কক্সবাজার সৈকতের পর হিমছড়ি সৈকত, জাতীয় উদ্যান ও পাহাড়ি ঝর্ণা পর্যটকদের আকর্ষণীয় স্থান।

স্থানীয় বাসিন্দা মোস্তাক আহমদ জানান, চার বছর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সৈকতে নেমেছিলেন। তখনও সৈকত সড়ক থেকে অনেক দূরে ছিল। এখন সাগর একেবারে কাছে চলে এসেছে।

মেরিন ড্রাইভ সড়কের লাগোয়া গ্রাম দরিয়ানগরের বাসিন্দা সাংবাদিক ও প্রকৃতি গবেষক আহমদ গিয়াস বলেন, গত ২৪ বছরের মধ্যে এবার সবচেয়ে বেশি জোয়ারের প্রভাব দেখা গেছে।

হিমছড়ি এলাকায় ভাঙন রোধে সেনা সদস্যরা ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছেন। একটি সূত্র জানায়, সেনাবাহিনীর তরফ থেকে জিওব্যাগ সংগ্রহ করা হচ্ছে। এরপর ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

উখিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী বলেন, সমুদ্রের জোয়ার মেরিন ড্রাইভে ধাক্কা খেয়ে সড়কটির বিভিন্ন পয়েন্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এটি রক্ষায় স্থায়ী সুরক্ষা দরকার।

কক্সবাজার পানি সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার গোলাম মোস্তফা বাংলানিউজকে জানান, সড়কটি সড়ক বিভাগের হলেও এটি এখনো আমাদের হস্তান্তর করা হয়নি। যে কারণে ওই সড়কে আমরা কিছু করতে পারি না। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানেই আছে, তারাই এটি রক্ষণাবেক্ষণ করছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪৫ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০২১
এসবি/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।