ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

মাসে ২৫ লাখ টিকাকরণ: ব্যবসায়ী-অর্থনীতিবিদদের উদ্বেগ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৫৪ ঘণ্টা, জুন ৭, ২০২১
মাসে ২৫ লাখ টিকাকরণ: ব্যবসায়ী-অর্থনীতিবিদদের উদ্বেগ

ঢাকা: মাসে ২৫ লাখ টিকাকরণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ী- অর্থনীতিবিদরা। দেশে মোট ১৬ কোটি জনসংখ্যা নির্ধারণ করে ৮০ শতাংশ মানুষকে টিকা দিলে সংখ্যা দাঁড়ায় ১২ কোটি।

প্রতি মাসে ২৫ লাখ টিকাকরণে সময় লাগবে চার বছর।

প্রাণঘাতি করোনাকে মাথায় রেখে প্রস্তাবিত ২০২১–২২ অর্থবছরের বাজেটে স্বাস্থ্যখাতে যতটা নজর দেওয়া উচিত ছিল, ততটা দেওয়া হয়নি। বাজেটে সবার টিকার প্রাপ্তির বিষয়েও সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ নেই। আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ইন বাংলাদেশ (অ্যামচেম) আয়োজিত রোববার (০৬ জুন) বাজেট পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবিদরা এসব কথা বলেন।

বাজেটে বলা হয়েছে, প্রতি মাসে ২৫ লাখ মানুষ টিকা পাবে। প্রতি মাসে মাত্র ২৫ লাখ মানুষকে টিকা দিলে শেষ কবে হবে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ববসায়ী ও অর্থনীতিবিদরা। ততদিনে করোনার অবস্থান এবং আক্রান্তের হার কোথায় যায় তা নিয়ে উদ্বেগ জানান তারা। আগামী অর্থবছরের মধ্যেই তারা টিকার কার্যক্রম শেষ করার তাগিদ দিয়েছেন। অ্যামচেমের সভাপতি সৈয়দ এরশাহ আহমেদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক আফতাব উল ইসলাম, অ্যামচেমের ভাইস প্রেসিডেন্ট সৈয়দ কামাল, স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) নাসের এজাজ বিজয়, পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আতিউর রহমান। পিআরআই নির্বাহী পরিচালক বলেন, অর্থমন্ত্রী প্রস্তাবিত বাজেটে প্রতি মাসে ২৫ লাখ করে টিকা দেওয়ার কথা বলেছেন। মোট জনসংখ্যার ৮০ শতাংশ মানুষকে টিকা দিলে এর কার্যক্রম শেষ করতে সময় লাগবে চার বছর। ততদিনে করোনার কী অবস্থা হয় কেউ জানে না। অথচ যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিদিন টিকা দেওয়া হয় ২০ লাখ মানুষকে। পরে সেটি বাড়িয়ে প্রতিদিন করা হচ্ছে ৪০ লাখ করে। টিকা প্রাপ্তিতে এত সময় না নিয়ে আগামী অর্থবছরের মধ্যেই টিকার কার্যক্রম শেষ করার তাগিদ দেন আহসান এইচ মনসুর।

যদিও প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন, টিকা নিয়ে বিশ্বব্যাপীই রাজনীতি চলছে। সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে আমরা প্রতিশ্রুত টিকা পাইনি। তবে টিকা পাওয়ার বিকল্প চেষ্টা করছি। আশা করছি শিগগিরই অন্য দেশের টিকা মিলবে।

আতিউর রহমান মূল প্রবন্ধে বলেন, করোনার সময়ে সরকার স্বাস্থ্যখাতে যতটা বরাদ্দ দেওয়া উচিত ছিল, ততটা দেওয়া হয়নি। বাজেটে টিকা প্রাপ্তির বিষয়ে সুনির্দিষ্টি পরিকল্পনা নেই। বাজেটে স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি করেন তিনি।

মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোকে (এমএফএস) করপোরেট কর ৭.৫ শতাংশ বাড়ানোর কঠোর সমালোচনা করা হয় আজকের বাজেট প্রতিক্রিয়া অনুষ্ঠানে। আতিউর রহমান বলেন, মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর করপোরেট কর এখন ৩২ দশমিক ৫ শতাংশ। এটাকে বাজেটে বাড়িয়ে ৪০ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। সরকার যেখানে ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা বলছে, সেখানে এমএফএসের ওপর করপোরেট কর বাড়ানোর প্রস্তাব সাংঘর্ষিক। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়ের ওপর ১৫ শতাংশ কর বসানো অযৌক্তিক বলেও মন্তব্য করেন আতিউর রহমান।

আফতাব উল ইসলাম বলেন, করোনায় নতুন করে অনেকে দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে গেছে। সরকার দেশে ধনী দরিদ্রের একটি তালিকা করছে। তবে এখনো ওই তালিকা প্রকাশ হয়নি। করোনার এই সময়ে ধনী দরিদ্র্যের একটি তালিকা থাকা জরুরি বলে মত দেন তিনি। ওয়েবিনারে প্রস্তাবিত বাজেট বাস্তবায়ন চ্যালেঞ্জ হবে বলে কেউ কেউ মত দেন।  

বাংলাদেশ সময়: ০০৫৪ ঘণ্টা, জুন ০৭, ২০২১
এমআইএস/এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।