ঢাকা, বুধবার, ২৭ কার্তিক ১৪৩১, ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বিদ্যালয়ের মাঠ দখল করে ইটের ব্যবসা করছেন সহকারী প্রধান শিক্ষক!

সুমন রায়, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০২ ঘণ্টা, জুন ২৭, ২০২১
বিদ্যালয়ের মাঠ দখল করে ইটের ব্যবসা করছেন সহকারী প্রধান শিক্ষক! বিদ্যালয়ের মাঠে রাখা ইট, ইনসেটে সেই শিক্ষক। ছবি: বাংলানিউজ

টাঙ্গাইল:করোনার কারণে বন্ধ রয়েছে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এই সুযোগে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের খেলার মাঠ দখল করে নির্মাণসামগ্রী রেখে ব্যবসা করছেন টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার পাইকড়া ইউনিয়নের গোপালদিঘি কেপি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. হায়দার আলী।

 

এ নিয়ে বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষক ও পরিচালনা পরিষদের সদস্যদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তবে কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস না পেলেও নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন শিক্ষক বিষয়টি জানিয়েছেন।

জানা যায়, মো. হায়দার আলী মোল্লা পাইকড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি। আর সরকার দলীয় লোক হওয়ায় পুরো পাইকড়া ইউনিয়নবাসীকে জিম্মি করে রেখেছেন তিনি। ভয়ে এলাকার সাধারণ মানুষ এবং খোদ ইউপি চেয়ারম্যানও তার বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস পান না। তার বিরুদ্ধে সম্প্রতি কথা বলায় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. আজাদ হোসেনকে মারধর করে আহত করেন ১৫/২০ জন ব্যক্তি। সেই ঘটনায় চেয়ারম্যান বাদী হয়ে কালিহাতী থানায় ২০২০ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি মো. হায়দার আলী মোল্লাসহ ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা দায়ের করেন। বর্তমানে সেই মামলা বিচারাধীন।

এদিকে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে গত শুক্রবার পাইকড়া গোপালদিঘি কেপি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠ দখল নিয়ে সেখানে পাশের একটি ভাটা থেকে প্রায় ৫০ হাজার ইট নিয়ে এসে রেখে দিয়েছেন ব্যবসা করার জন্য। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও পরিচালনা পরিষদের সদস্যরা।  

তারা বলছেন, হায়দার আলী মোল্লার ভয়ে কেউ এর প্রতিবাদ করতে সাহস পায় না। তিনি এলাকায় ত্রাসের রাজস্ব কায়েম করে চলেছেন। কেউ কিছু বললে তাকে খুন করে লাশ গুম করার হুমকি দেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহআলম বাংলানিউজকে জানান, তাকে না জানিয়েই বিদ্যালয়ের মাঠে ইট রেখেছেন সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. হায়দার আলী মোল্লা।

বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি কুদরত-ই-এলাহী খান বাংলানিউজকে জানান, বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. হায়দার আলী মোল্লা জোরপূর্বক ইট রেখে ব্যবসা পরিচালনার করার বিষয়টি তিনি শুনেছেন। এ বিষয়টি নিয়ে বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষক ও সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে এবং বিদ্যালয়ের ভেতর থেকে ইট যাতে আর না বের করতে পারে সেজন্য গেটে তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. হায়দার আলী মোল্লা বাংলানিউজকে বলেন, আমার কিছু জায়গা বিদ্যালয়ের মাঠে রয়েছে। আর এলাকায় এবং আমার বুকের ওপর বিদ্যালয়, এজন্য আমি সেখানে কয়েকদিনের জন্য ইট রেখেছি। দুই একদিনের মধ্যে সেগুলো বিক্রি হয়ে যাবে। এই সামান্য বিষয় নিয়ে আমার প্রতিপক্ষ ষড়যন্ত্র শুরু করেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৬ ঘণ্টা, জুন ২৭, ২০২১
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।