ঢাকা: করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় তৃতীয় ধাপের কঠোর ‘লকডাউনে’র দ্বিতীয় দিন আজ। ‘লকডাউনে’র বিধিনিষেধ নিশ্চিতে রাজধানীর মিরপুর এলাকায় রয়েছে প্রশাসনের কড়া তদারকি।
শুক্রবার (১ জুলাই) মিরপুরের পল্লবী, টেকনিক্যাল, গাবতলী, শাহ আলী, কাফরুল, ইব্রাহিমপুর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।
টেকনিক্যাল মোড়, মিরপুর ১, ১০, ১৩ এবং ১৪ নম্বরে, পল্লবীর বঙ্গবন্ধু কলেজ মোড়ে চেকপোস্ট দেখা যায় পুলিশের। এছাড়াও বিভিন্ন পয়েন্টে যানবাহন থামিয়ে যাত্রীদের এবং চলাচলরত পথচারীদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।
নিয়মিত চেকপোস্টের পাশাপাশি টহল দিচ্ছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিরপুর বিভাগের ক্রাইম ও ট্রাফিক বিভাগের পুলিশ সদস্যরা। তাদের নেতৃত্বে রয়েছেন দু’জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। এছাড়া পুলিশের পাশাপাশি মিরপুরের রাজপথ এবং সংযোগ সড়কগুলোতে পেট্রোলিং করছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এবং সেনাবাহিনীর সদস্যরা।
গাবতলী পয়েন্টে ট্রাফিকের দায়িত্বরত সার্জেন্ট ঝোটন সিকদার বলেন, গতকালের মতো সকাল থেকেই আমরা কড়াকড়িভাবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি। যে গাড়ি বা রিকশাই যাচ্ছে, সেগুলোর যাত্রীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জরুরি সেবার সঙ্গে সম্পর্কিত না হলে বা জরুরি কাজ না হলে অথবা উপযুক্ত কারণ উল্লেখ করতে না পারলে আটক করে মামলা দায়ের করার প্রস্তুতি রয়েছে আমাদের। আগের ‘লকডাউনে’ যেমন আমরা এমন বাইরে আসা লোকদের ফিরিয়ে দিতাম, সামনে যেতে দিতাম না, কিন্তু এবার তা হচ্ছে না। এবার আটক হচ্ছেন তারা।
অবশ্য প্রধান সড়ক এবং গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে বেশ কড়াকড়ি দেখা গেলেও অলিগলি বা পাড়া মহল্লায় সাধারণ মানুষের কিছুটা উপস্থিতি দেখা যায়। বিশেষ করে খাবার বা চায়ের দোকানকে কেন্দ্র করে মানুষের এমন জটলা দেখা যায়।
মিরপুরের পল্লবী এলাকার বাসিন্দা তানভীর আহমেদ ঘর থেকে বের হওয়ার কারণ জিজ্ঞেস করলে বলেন, বাসার জন্য নাস্তা কিনতে হোটেলে এসেছি। নাস্তা হতে একটু সময় লাগছে, তাই একটু দাঁড়িয়ে চা খাচ্ছি। শুক্রবার তাই প্রতিবেশী দুই-একজনও এসেছেন। তাদের সঙ্গে একটু কথা বলছি। নাস্তা নিয়েই চলে যাব।
এছাড়াও জরুরি সেবা খাত সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত চাকরিজীবীদের সকাল বেলা অফিসে যেতে দেখা যায়। ব্যক্তিগত গাড়ি, রিকশা এবং অফিস প্রদত্ত যানবাহনে তাদের চলাচল করতে দেখা যায়। মিরপুর ১, ১০ এবং ১২ নম্বরের মতো এলাকায় সকালেই তাদের উপস্থিতি দেখা যায়। তবে সাপ্তাহিক বন্ধ শুক্রবার এবং বৃষ্টি হওয়ায় গতকালের প্রথম লক ডাউন এর চেয়েও সেই হার ছিল কম।
মিরপুর এলাকার ‘লকডাউন’ পরিস্থিতি নিয়ে ডিএমপির মিরপুর বিভাগের উপ পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মাহতাব উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, সকাল থেকে বৃষ্টি হচ্ছে এবং শুক্রবার তাই বাইরে মানুষ খুবই কম। তবুও পুলিশ এবং অন্যান্য বাহিনীর সদস্যরা কড়া অবস্থানে আছে। প্রতিটি থানায় পাঁচটি করে মোট ৩৫টি নিয়মিত চেকপোস্ট রয়েছে মিরপুর বিভাগে।
বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) ‘লকডাউনে’র প্রথম দিনে অহেতুক বাইরে আসার অপরাধে মিরপুর এলাকায় শতাধিক ব্যক্তিকে আটক করে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে পুলিশ। আটক অনেকেই জানান, ‘লকডাউন’ পরিস্থিতি দেখতে তারা বাইরে বের হয়েছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১০৩০ ঘণ্টা, জুলাই ০২, ২০২১
এস এইচ এস/এসআই