পিরোজপুর: পিরোজপুরে পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে এহসান গ্রুপের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছেন ভুক্তভোগী সদস্য ও কর্মীরা।
রোববার (১৮ জুলাই) সকালে পৌর শহরের উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন (পুরাতন সিও অফিস) এহসান গ্রুপের কার্যালয়ের সামনে ভুক্তভোগী নারী ও পুরুষদের অংশগ্রহণে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য দেন জামানত সংগ্রহকারী ফিল্ড অফিসার (এফও) ও পুঁজি ফেরত পাওয়ার জন্য আন্দোলন কমিটির আহ্বায়ক মো. রফিকুল ইসলাম, ফিল্ড কর্মী মাওলানা মো. হারুন অর রশিদ, মো. জালাল উদ্দিন, সার্জেন্ট আব্দুর রশিদ প্রমুখ।
জেলার সদর উপজেলার জুজখোলা গ্রামের মো. মোস্তফা কামাল জানান, তার ২০ লাখ টাকা এহসান গ্রুপের কাছে ব্যবসার জন্য জমা দেওয়া আছে। কিন্তু এহসান গ্রুপ গত দুই বছর ধরে তার জমাকৃত টাকার কোনো লভ্যাংশ দিচ্ছে না। এমন কি পুঁজির আসল টাকাও ফেরত দিচ্ছে না। তিনি এখন চরম অসহায় অবস্থায় রয়েছেন।
পৌর শহরের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের অসহায় ফেরদাউস মোল্লা জানান, ব্যবসার জন্য তার এক লাখ টাকা জমা দেওয়া আছে। এর বিপরীতে তিনিও কোনো লভ্যাংশ পাচ্ছেন না।
জানা গেছে, পৌর শহরের পুরাতন সিও অফিস সংলগ্ন অবস্থিত কার্যালয় ‘এহসান গ্রুপ’এর উদ্যোগে অধিক মুনফা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ১২ হাজার মাঠকর্মী (এফও) নিয়োগ দেন। ওই সব মাঠকর্মীদের মাধ্যমে জেলা ও জেলার পার্শ্ববর্তী বাগেরহাট, ঝালকাঠী, বরগুনা ও পটুয়াখালীর প্রায় লক্ষাধীক গ্রহকের কাছ থেকে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেন। দুই বছর আগে প্রতিষ্ঠানটি হঠাৎ আমানতকারীদের লভ্যাংশ দেওয়া বন্ধ করে দেয়। এরপর আমানতকারীরা টাকা ফেরত চাইলে প্রতিষ্ঠানের মালিক রাগীব আহসান গা ঢাকা দেন।
গ্রাহকদের টাকা উদ্ধার কমিটির আহ্বায়ক মাওলানা মো. রফিকুল ইসলাম জানান, প্রতিষ্ঠানটির এহসান মাল্টিপারপাস কো–অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড, এহসান সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি লিমিটেড, ডেফোডিল মাল্টিপারপাস কো–অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড, এহসান বেসিক সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি লিমিটেড এবং এহসান রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড বিল্ডার্স লিমিটেডের নামের পাঁচটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানগুলোর নামে আমানত সঞ্চয়ের কথা বলে গ্রাহকের কাছ থেকে ১০ বছর ধরে টাকা নেওয়া হয়েছে। এছাড়া এহসান গ্রুপের ক্যাডেট একাডেমি, গার্মেন্টস ও প্রসাধনসামগ্রীর ব্যবসা, স্যানিটারি ও হার্ডওয়্যার ব্যবসা, মহিলা মাদরাসাসহ ১৬টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। বর্তমানে এসব প্রতিষ্ঠানের বেশির ভাগের অস্তিত্ব নেই।
তিনি গ্রাহকের টাকা জমা নিয়ে তা আত্মসাতের উদ্দেশে বর্তমানে আত্মগোপনে রয়েছেন। তাছাড়া তিনি গ্রাহকের টাকা নিয়ে তা বিদেশে পাচার করেছেন। বিভিন্ন সময় ওই টাকা ফেরত দেওয়ার তারিখ দিয়েও তিনি তা ফেরত দিচ্ছেন না। এমন কি প্রশাসনের সঙ্গে প্রতারণা করে তার ও প্রতিষ্ঠানের নামে থাকা বিভিন্ন সম্পদ তার নিকটআত্মীয়সহ ঘনিষ্ট জনের নামে লিখে দিচ্ছেন।
এ ব্যাপারে জানতে রাগীব আহসানের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধীকবার ফোন দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। এমন কি তার কার্যালয়ের গেটও বন্ধ রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩০২ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০২১
আরএ