ঢাকা, সোমবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

নৌভ্রমণের চাঁদা ফেরত চাওয়ায় যুবককে পিটিয়ে হত্যা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৪ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০২১
নৌভ্রমণের চাঁদা ফেরত চাওয়ায় যুবককে পিটিয়ে হত্যা

নরসিংদী: নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলায় ঈদ পরবর্তী নৌভ্রমণের জন্য দেওয়া চাঁদার টাকা ফেরত চাওয়ায় আকরাম হোসেন শ্রাবণ (২২) নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করেছেন বখাটেরা। এসময় শ্রাবণের মামা সাখাওয়াত হোসেনকেও পিটিয়ে আহত করা হয়।

 

সোমবার (২৬ জুলাই) রাত ৯টায় উপজেলার একদুয়ারিয়া ইউনিয়নের একদুয়ারিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে।  

নিহত আকরাম হোসেন শ্রাবণ উপজেলার একদুয়ারিয়া ইউনিয়নের কামার আলগী এলাকার মো. শাহজাহানের ছেলে।

এ ঘটনায় মঙ্গলবার সকালে কাপাসিয়ার সনমানিয়া থেকে দু’জনকে আটক করেছে পুলিশ। তারা হলেন উপজেলার একদুয়ারিয়া ইউনিয়নের আসাদ মিয়ার ছেলে হৃদয় মিয়া (১৮) ও রান্দনদিয়া এলাকার জাকির হোসেনের ছেলে মৃদুল মিয়া (১৬)।
 
পরে মঙ্গলবার দুপুরে শ্রাবণের বাবা মো. শাহজাহান দু’জনের নাম উল্লেখ করে চার-পাঁচজনকে আসামি করে মনোহরদী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, গত ২৫ জুলাই রোববার হৃদয়ের নেতৃত্বে একদুয়ারিয়া এলাকার ৭৩ জন তরুণ পাশের শিবপুর উপজেলার লাখপুরে শীতলক্ষ্যা নদীতে নৌকা ভ্রমণে যান। এজন্য সবার কাছ থেকে ৫০০ করে টাকা নেওয়া হয়। কামার আলগী এলাকার বায়েজিদ (১৪) ও ইয়াছিন (১৭) নৌকা ভ্রমণে তাদের সঙ্গে গিয়েছিল। করোনাকালে সরকারি বিধি-নিষেধ অমান্য করায় নরসিংদী জেলার নির্বাহী ম্যাজিস্টেট রিনাত ফৌজিয়া লাখপুর বেড়িবাঁধ এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে নৌকাটি আটক করেন। এসময় বিধি-নিষেধ ভঙ্গের কারণে হৃদয়, মৃদুল, বায়েজিদ ও ইয়াছিনসহ ৩২ জনকে আর্থিক জরিমানা করা হয়। যার ফলে নৌকা ভ্রমণ পণ্ড হয়ে যায়। পরে বায়েজিদ ও ইয়াছিন নৌকা ভ্রমণ না করার কারণে হৃদয়কে তাদের চাঁদা ও জরিমানার টাকা ফেরত দিতে বলে। কিন্তু হৃদয় তা দিতে অপরাগত জানান। পরে তারা টাকা উদ্ধারের জন্য শ্রাবণের কাছে বিচার দেয়। শ্রাবণ টাকার জন্য হৃদয়কে চাপ দেয়। পরে হৃদয় জরিমানার টাকা নেওয়ার জন্য শ্রাবণকে সোমবার রাতে একদুয়ারিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে আসতে বলেন। পরে রাতে শ্রাবণ তার মামা সাখাওয়াতকে নিয়ে স্কুলের সামনে গেলে হৃদয় ও মুদুলসহ চার-পাঁচজন তাদের ওপর হামলা চালান। তারা বাঁশের লাঠি দিয়ে শ্রাবণ ও সাখাওয়াতকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে রাস্তায় ফেলে রেখে পালিয়ে যান। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে শিবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক শ্রাবণকে মৃত ঘোষণা করেন। আর সাখাওয়াত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।

নিহতের বাবা শাহজাহান বলেন, আমার ছেলে নৌ-ভ্রমণে যায়নি। সে অন্যের ভালো করতে গিয়েছিল। কিন্তু সামান্য কয়েকটা টাকার জন্য তারা আমার ছেলেকে পিটিয়ে মেরে ফেললো। আমি ছেলে হত্যার বিচার চাই।

মনোহরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিচুর রহমান বলেন, সকালে অভিযান চালিয়ে হৃদয় ও মৃদুলকে আটক করা হয়। তাদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে  পাঠানো হচ্ছে। আর নিহত শ্রাবণের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫২ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০২১
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।