ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

কর না দেওয়া ৮০ হাজার কোম্পানি শনাক্ত, টিআইবির সাধুবাদ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৬ ঘণ্টা, আগস্ট ২, ২০২১
কর না দেওয়া ৮০ হাজার কোম্পানি শনাক্ত, টিআইবির সাধুবাদ

ঢাকা: জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) টাস্কফোর্স কর না দেওয়া প্রায় ৮০ হাজার কোম্পানি শনাক্ত করায় এবং এসব প্রতিষ্ঠানকে কর ব্যবস্থার আওতায় আনার উদ্যোগ নেওয়ায় সাধুবাদ জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

সোমবার (২ আগস্ট) এক বিবৃতিতে এ সাধুবাদ জানায় সংস্থাটি।

এতে বিশাল সংখ্যক কোম্পানি এতদিন কীভাবে কর ব্যবস্থার বাইরে ছিলো এবং এর মাধ্যমে ঠিক কী পরিমাণ কর ফাঁকির ঘটনা ঘটেছে, তা খতিয়ে দেখার পাশাপাশি ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানের প্রক্রিয়াগত দুর্বলতা চিহ্নিতকরণ ও তা দূরীকরণে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এনবিআরের করপোরেট কমপ্লায়েন্স নিয়ে গঠিত টাস্কফোর্সের করজালের বাইরে থাকা বিপুল পরিমাণ কোম্পানি খুঁজে বের করাই প্রমাণ করে দেশে আর্থিক অনিয়ম, দুর্নীতি ও সুশাসনের ঘাটতি কতটা প্রকট। একটি নিবন্ধিত কোম্পানি অর্ধশতাব্দী ধরে ব্যবসা করছে অথচ কখনই কর দেয়নি। আবার মাত্র দু'টি ঠিকানায় ১ হাজার ৪০০ কোম্পানির নিবন্ধন কিংবা একই ব্যক্তি ৪৬টি কোম্পানির পরিচালক কিন্তু টিআইএন (ইলেট্রনিক ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নম্বর) আছে মাত্র ৪টির।

এসব তথ্য রূপকথার অনিয়ম ও আর্থিক অব্যবস্থাপনাকেও হার মানায়। একদিনে বা রাতারাতি এ বিপুল সংখ্যক কোম্পানি কর ফাঁকি দেওয়ার সংস্কৃতির চর্চা যেমন শুরু করেনি, তেমনি স্বল্পসময়ের ব্যবধানেও তারা এ অনৈতিক সুযোগ নেয়নি।

সংশ্লিষ্ট অনেকেরই যোগসাজশে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। তাদের জবাবদিহির আওতায় আনার পাশাপাশি এক্ষেত্রে প্রক্রিয়াগত প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা চিহ্নিত করে তা দ্রুত নিরসন জরুরি।

টিআইএন ছাড়া কোম্পানিগুলো সম্পর্কে টাস্কফোর্সের প্রাথমিক প্রতিবেদনে-দুর্নীতিতে নিমজ্জিত বেদনাক্রান্ত দেশের করুণ চিত্র ও দেশের আর্থিক খাতের সুশাসনের ঘাটতি- শীর্ষক মন্তব্য দু'টির সঙ্গে সম্পূর্ণ একমত পোষণ করে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এর দায় সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠান ও কর্তৃপক্ষের। কেননা এক ঠিকানায় শতাধিক কোম্পানির নিবন্ধন দেওয়া হলেও তা চিহ্নিত করার ব্যবস্থা যে যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মগুলোর পরিদফতরে (আরজেএসসি) নেই। এ বিষয়টি যেমন স্পষ্ট, তেমনি নিবন্ধনের ক্ষেত্রে সহযোগিতাকারী একশ্রেণির ‘ল’ ফার্মের দায়হীন আচরণ সমভাবে দায়ী।

আবার ৭৮ হাজারেরও অধিক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের টিআইএন থাকা সত্ত্বেও মাত্র ২৬ হাজারের আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়া এবং এর মধ্যে অর্ধেক প্রতিষ্ঠানই আবার ভুয়া নিরীক্ষা প্রতিবেদন জমা দিয়ে বিপুল কর ফাঁকি দেওয়ার বিষয় আলোচিত হলেও এসব যাচাইয়ে এনবিআরের কার্যকর উদ্যোগের ঘাটতি ছিলো এতদিন। তাই ভবিষ্যতে এমন ঘটনা প্রতিরোধে এখনই কার্যকর কর্মকৌশল নির্ধারণ ও সংস্থাগুলোর মধ্যকার প্রযুক্তিগত সংযোগ ও সমন্বয় নিশ্চিত করতে হবে।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানসহ সবাই যাতে হয়রানিমুক্ত পরিবেশে সহজ পদ্ধতিতে রাজস্ব দিয়ে দেশের অর্থনীতিতে কাঙ্ক্ষিত ভূমিকা রাখতে পারে, সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সবার আন্তরিক প্রচেষ্টা জরুরি। একইসঙ্গে করের আওতায় আনার চলমান প্রক্রিয়ায় কোনো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান যাতে হয়রানি বা হেনস্তার শিকার না হয়, সে ব্যাপারেও সচেষ্ট থাকার আহ্বান জানাই।

বাংলাদেশ সময়: ২০১১ ঘণ্টা, আগস্ট ০২, ২০২১
ইইউডি/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।