ঢাকা, মঙ্গলবার, ২১ মাঘ ১৪৩১, ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৪ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

তেরখাদায় চরমপন্থি পরিবারের হাত থেকে মুক্তি চায় এলাকাবাসী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪১ ঘণ্টা, আগস্ট ৭, ২০২১
তেরখাদায় চরমপন্থি পরিবারের হাত থেকে মুক্তি চায় এলাকাবাসী

খুলনা: খুলনার তেরখাদা উপজেলার মাশশিকুল চৌধুরী ওরফে জয় ও তার স্ত্রী তেরখাদা উপজেলার দুই নম্বর বারাসাত ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সদস্য রিনা বেগমের অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। নিরীহ মানুষের পক্ষে কথা বলায় প্রতিবাদকারীদের একের পর এক মিথ্যা অভিযোগ, সংবাদ সম্মেলন ও হয়রানিমূলক মামলা দিয়ে দমিয়ে রাখে এই পরিবারটি।

শনিবার (৭ আগস্ট) দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে তেরখাদা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বারাসাত ইউপি চেয়ারম্যান কে এম আলমগীর হোসেনের পক্ষে লিখিত বক্তব্যে আওয়ামী লীগ নেতাদ হাজী মকবুল হোসেন এসব অভিযোগ করেন।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টি (এমএল-জনযুদ্ধ) রশিদ গ্রুপের সেকেন্ড ইন কমান্ড মাশশিকুল চৌধুরী জয় ও তার স্ত্রী ইউনিয়ন পরিষদের ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য রিনা আমার বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন ও হয়রানিমূলক মামলা করে আমার সামাজিক ও রাজনৈতিক ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আমার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার লক্ষ্যে সম্ভাব্য প্রতিপক্ষ প্রার্থীর হয়ে আমার বিরুদ্ধে এহেন অপতৎপরতা চালাচ্ছে। আর এসব কর্মকাণ্ডে  অর্থের যোগান দিচ্ছে আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থী আল-আমিন হোসেন অপুর ভাই তেরখাদা থানা জামায়াতের সাবেক আমীর শারাফাত হোসেন দিপু। দিপুর দাদা ছিলেন স্বাধীনতা যুদ্ধে পিস কমিটির চেয়ারম্যান। সেই সূত্রে এই পরিবারটি যুদ্ধাপরাধী হিসেবে চিহ্নিত।  

তিনি আরও বলেন, রিনা বেগম পরিষদের আরও সাতজন ইউপি মেম্বরকে ভুল বুঝিয়ে আমার বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ও জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেন। যা পরবর্তীতে তদন্তে সবই মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। ওই অভিযোগে উল্লেখ করেন আমি নাকি এলজিএসপির ছয় লাখ ২৭ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছি। তার এই অভিযোগের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসক দপ্তরের সহকারী কমিশনার নুরী তাছমিন উর্মির অফিসে তদন্তের জন্য ২৮ জুলাই সকালে রওয়ানা হই। পাঁচ জন মেম্বর এবং অভিযোগে উল্লেখিত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গসহ সকাল সাড়ে ১০টায় জেলখানা ঘাট পৌঁছালে মেম্বর রিনা ও তার স্বামী মাশশিকুল চৌধুরী জয় আমার সঙ্গে থাকা মেম্বরদের ভয়ভীতি ও হুমকি দেন। আমরা তাদের হুমকি-ধামকি উপেক্ষা করে পৌনে ১১টায় সহকারী কমিশনার নুরী তাছমিন উর্মির অফিসে হাজির হই। ওই তদন্তেও তাদের অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হয়। এর আগে গত ২১ জুন আমার বিরুদ্ধে এই প্রেসক্লাবে একটি মনগড়া সংবাদ সম্মেলন করেন তারা। ওই সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করেছে তার কোনোটাই সঠিক না। সবই মনগড়া, মিথ্যা, কাল্পনিক ও ভিত্তিহীন।

তিনি আরও বলেন, একের পর এক মিথ্যা অভিযোগকারী রিনা বেগমকে সহযোগিতা করছে চিহ্নিত ইয়াবা বিক্রেতা ছয় নম্বর ইউপি মেম্বর তৌহিদুজ্জামান। এই তৌহিদ ২০০ পিস ইয়াবা ও তার ভাই অরিসুল ইসলাম এক হাজার ৮০০ পিস ইয়াবাসহ গ্রেফতার হন। এই তৌহিদ ও তার ভাই অরিসুলের বিরুদ্ধে, মাদক, হত্যা, লুটপাটসহ বিভিন্ন অভিযোগ ১৪টি মামলা রয়েছে। রিনা বেগমের আরও একজন সহযোগী হলেন নয় নম্বর ইউপি সদস্য আরিফ মোল্লা। যিনি বারাসাত এলাকার ত্রাস। নাশকতা মামলার আসামিসহ পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী।

অপরদিকে রিনা বেগমের স্বামী মাশশিকুল ইসলাম জয় চাঁদাবাজি,  পুলিশসহ একাধিক হত্যা, নারী ধর্ষণসহ বিভিন্ন মামলার আসামি। মাশশিকুল চৌধুরী জয় ডিএসবির তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী। তিনি জোড়া পুলিশ হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলার আসামি ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা আলী শেখ, আজগড়া ইউপি চেয়ারম্যান কৃষ্ণ মেনন রায়, আওয়ামী লীগ নেতা শেখ রাজা মিয়া, এম ফরিদ আহমেদ, শওকত মোল্লা, কাজী আক্তার হোসেন, শহিদ মোল্লা, বাসিতুল হাবিব প্রিন্স, সবুর সিদ্দিকী, আরিফ হাসান, ফরিদ মোল্লা, সন্তোষ সমাজপতি, বলয় লাল বালা, বাবলু শেখ, শাহাবুদ্দীন, ফরিদ মিনা, মোহাম্মদ আলী মোল্লা, আরিফুজ্জামান অপু, ইউপি মেম্বর বারাসাত জুয়েল বালা প্রমুখ।

অভিযোগের বিষয়ে মাশশিকুল চৌধুরী জয় বাংলানিউজকে বলেন, ২০১০ সাল থেকে আমি সব মামলায় খালাস। এর আগে কয়েকটি মামলা ছিল। পুলিশ হত্যা মামলার আসামি আমি না। উদ্দেশ্যমূলকভাবে আমার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ আনা হয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৫ ঘণ্টা, আগস্ট ০৭, ২০২১
এমআরএম/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।