ঢাকা, রবিবার, ১৪ পৌষ ১৪৩১, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

‘টাকার দরকার নেই, মেয়েকে ফিরিয়ে দিন’

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪১ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০২১
‘টাকার দরকার নেই, মেয়েকে ফিরিয়ে দিন’ সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন আনছার আলী খান। ছবি: বাংলানিউজ

বাগেরহাট: ‘টাকার দরকার নেই, আমার মেয়েকে ফিরিয়ে দিন। ’ ঢাকায় গৃহপরিচারিকার কাজ করতে গিয়ে নিখোঁজ হওয়া আনজুমান আরার (১৬) মা টুকটুকি বেগম এ কথা বলেই কান্নায় ভেঙে পড়েন।

বুধবার (১১ আগস্ট) দুপুরে বাগেরহাট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে নিখোঁজ আনজুমানের পরিবার। এ সময় তার মা ছাড়াও বাবা আনছার আলী খান, চাচা মো. আছাদসহ নিকটাত্মীয় মামুন ও এমরান শেখ উপস্থিত ছিলেন।

জেলার মোরেলগঞ্জ উপজেলার তেলিগাতী ইউনিয়নের মেয়ে আনজুমান। তার বাবা আনছার আলী খান বলেন, পার্শ্ববর্তী কচুয়া উপজেলার যশোরদি গ্রামের স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা লুৎফার রহমান সরদার আনজুমানকে তার মেয়ে পলি বেগমের ঢাকার বাসায় নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দেন। ২০১৯ সালের প্রথম দিকে পলি ও তার স্বজনরা আনজুমানকে ঢাকার কল্যাণপুর ১১ নম্বর রোডের ৪৭ নম্বর বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে নানা সমস্যার কথা আনজুমান আমাদের জানাতো।

তিনি বলেন, পলি আমার মেয়েকে বাড়ি আসতে দিতেন না। বিভিন্ন সময় আমরা মেয়েকে বাড়ি ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য বলেছি। পলি তাকে ফিরিয়ে দেয়নি। সর্বশেষ গত ২০ জুলাই সকাল ১১টায় পলি ফোন করে জানায়, আনজুমানকে খুঁজে পাচ্ছে না। সেই থেকে আমরা বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ করেও মেয়েকে পায়নি। পরবর্তীতে লুৎফার রহমান সরদার ও তার মেয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন। আমাদের বিশ্বাস পলি আমার মেয়েকে কোথাও লুকিয়ে রেখেছেন বা ভারতে পাচার করে দিয়েছেন।

আনছার আলী খান আরও বলেন, কয়েক বছর আগে লুৎফার রহমান সরদার মোরেলগঞ্জের চাপড়ি গ্রামের ইকবাল গাজীর মেয়েকে পাচারের উদ্দেশ্যে নিয়ে যায়। তখন ইকবাল গাজীর মামলায় তাকে পুলিশ গ্রেফতার করেছিল। মেয়ে আনজুমানকে ফিরে পাওয়ার পাশাপাশি আমি এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

এ বিষয়ে পলি বেগম বলেন, আনজুমানকে ঢাকায় আনার পরে সন্তানের মতন রেখেছি। বাসার সিসিটিভি ফুটেজে দেখেছি, ২০ জুলাই বাসা থেকে বের হয়ে একটি ছেলের সঙ্গে সিএনজিতে উঠেছে। আসলে আমাদের বিপদে ফেলতে আনজুমানের মা-বাবা এসব মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছেন।

পলির বাবা লুৎফার রহমান সরদার বলেন, আনজুমান নিজেই আমার মেয়ের বাসা থেকে চলে গেছে। তাকে আমরা লুকিয়ে রাখিনি বা পাচার করিনি। কোনো অন্যায় কাজের সঙ্গে আমরা জড়িত না। আমাকে হেয়-প্রতিপন্ন করতে তারা এ অপপ্রচার করছেন। যে অভিযোগে পুলিশ আমাকে গ্রেফতার করেছিল ওটা ছিল মিথ্যা মামলা। ওই মামলায় মাত্র একদিন জেল খেটেছি। পরবর্তীতে মামলা থেকে অব্যাহতিও পেয়েছি।

এ ব্যাপারে কচুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, আনছার আলী খানের অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। নিখোঁজ মেয়েটিকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৮ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০২১
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।