ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৩০ মাঘ ১৪৩১, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৩ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

কুষ্টিয়ায় ১৭ গ্রাম প্লাবিত, ২৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০২১
কুষ্টিয়ায় ১৭ গ্রাম প্লাবিত, ২৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি

কুষ্টিয়া: পদ্মা নদীতে অস্বাভাবিকভাবে পানি বৃদ্ধির ফলে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার চরাঞ্চলের রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন এবং চিলমারী ইউনিয়নের প্রায় ১৭টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে ওই অঞ্চলের প্রায় ২৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।

বেশিরভাগ জমির ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। এসব বন্যা কবলিত এলাকায় দেখা দিয়েছে খাবার ও পানির অভাব।

কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, বেশ কয়েকদিন ধরে পদ্মা নদীর পানি বেড়েছে। মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টায় কুষ্টিয়ার হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানি প্রবাহের মাত্রা ছিলো ১৩ দশমিক ৭৮ সেন্টিমিটার। যেখানে বিপৎসীমা ১৪ দশমিক ২৫ সেন্টিমিটার। মঙ্গলবার হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে বিপৎসীমার দশমিক ৪৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

বুধবার (১৮ আগস্ট) সকাল ৬টায় কুষ্টিয়ার হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানি প্রবাহের মাত্রা ছিলো ১৩ দশমিক ৮৮ সেন্টিমিটার। যা বিপৎসীমার দশমিক ৩৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

কুষ্টিয়ার পদ্মানদীর চর অঞ্চল ও পদ্মাপাড় ঘেষা রামকৃষ্ণপুর এবং চিলমারী ইউনিয়ন। পদ্মায় পানি বৃদ্ধির ফলে দুই ইউনিয়নের প্রায় ১৭টি গ্রামের মানুষেরা পানিবন্দি হয়ে পেড়েছে। ডুবে গেছে কয়েক হাজার একর জমির উঠতি ফসল। এতে তাদের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।

বানভাসী মকছেদ আলী বাংলানিউজকে জানান, পানিতে বাড়ি ঘরে থাকতে পারছি না। ঘরের মধ্যে পানি ঢুকে গেছে। মাঠের পাট কাটতে পারছি না। কাঁচা মরিচের ক্ষেত তো সব নষ্ট হয়ে গেছে। আমাদের এখানে খাবারের সমস্যা, খাবার পানি ও ওষুধের সমস্যা বেশি।

আরেকজন আকুবার আলী জানান, পানির কারণে কোথাও যেতে পারছি না। কেউ অসুস্থ হলে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে পারছি না। আমরা চরের মানুষ পানিতে ডুবে মানবেতর জীবনযাপন করছি।

শরিফা খাতুন বাংলানিউজকে জানান, পানিতে রান্নাঘর, টয়লেট, টিউবওয়েল ডুবে রয়েছে। ঘরের মধ্যে কোনরকমে রান্না করছি সিমেন্টের চুলা দিয়ে। পানির কারণে সাপ দেখা যাচ্ছে মাঝে মাঝে। সাপ আতঙ্কে রয়েছি। সেই সঙ্গে শুকনো খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে।

রফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, পানিবন্দি হয়ে আমরা খাবারের অভাবে খুবই কষ্টে আছি। সরকার এবং বিত্তবান মানুষ আমাদের পাশে এগিয়ে না এলে আমরা না খেতে পেয়ে মারা যাবো।

রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সিরাজ মণ্ডল জানান, ১৭টি গ্রামের ৬০ ভাগ বসত বাড়ি পনিতে তলিয়ে গেছে। এতে প্রায় ২৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তাদের কাজের অভাব, খাদ্যের অভাব দেখা দিয়েছে। বেশিরভাগ মাঠের ফসল তলিয়ে গেছে। এতে তাদের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। এসব বানভাসিদের মধ্যে জরুরি ভিত্তিতে ত্রাণ তৎপরতা শুরু অনুরোধ জানান।

দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শারমিন আক্তার বাংলানিউজকে জানান, রামকৃষ্ণপুর এবং চিলমারী ইউনিয়নের বেশকিছু এলাকার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যে আমরা এলাকা পরিদর্শন করে জেলা প্রশাসকের কাছে রিপোর্ট দিয়েছি। খুব শিগগিরই আমরা ত্রাণ নিয়ে বন্যা কবলিত মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়াবো।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০২১
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।