হবিগঞ্জ: ১৮ আগস্ট হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার মালকান্দি গণহত্যা দিবস। একাত্তরের এই দিনে গ্রামটির দুই শতাধিক নারী-পুরুষকে গুলিবর্ষণ ও বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করে পাকিস্তানি বাহিনী।
বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাসুদ রানা বাংলানিউজকে জানান, সেদিন মাকালকান্দিতে দুই শতাধিক নারী-পরুষকে হত্যা করা হয়েছিল। তবে সরকারের তালিকায় ১১০ জনের নাম লিপিবদ্ধ। বাকিদের পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৮ আগস্ট সকালে গ্রামটির চন্ডি মন্দিরে মনসা ও চন্ডিপূজার প্রস্ততি চলছিল। এ সময় স্থানীয় রাজাকারদের সহযোগিতায় ৪০ থেকে ৫০টি নৌকায় পাকবাহিনী এসে গ্রামে হামলা চালায়। চন্ডি মন্দিরের সামনে দাঁড় করিয়ে তরনী দাশ, দীনেশ দাশ, ঠাকুর চান দাশ, মনোরঞ্জন দাশ, প্রভাসিনী বালা দাশ, চিত্রাঙ্গ বালা দাশ, সোহাগী বালা দাশসহ দুই শতাধিক মানুষকে ব্রাশ ফায়ারে হত্যা করে।
এমনকি চারদিনের শিশু পর্যন্ত রেহাই পায়নি তাদের হাত থেকে। মায়ের কোল থেকে কেড়ে নিয়ে বেওনেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করা হয় তাকে। শিশুটির মা হৃদয় বিদারক সেই স্মৃতি নিয়ে আজও বেঁচে আছেন মিনতি রানী চৌধুরী।
ওই এলাকা হিন্দু অধ্যুষিত হওয়ায় রাজাকার এবং পাকিস্তানিদের প্রধান টার্গেট ছিল ওই এলাকা। শুধু মাকালকান্দি নয়, ওই সময়ে কাগাপাশা ইউনিয়নের নজিরপুর ও কাগাপাশা গ্রামেও হয় গণহত্যা। তবে মুসলমান পরিচয় দিলে অনেককে ছেড়ে দেয় পাক বাহিনী।
উপজেলা প্রশাসন জানায়, মাকালকান্দি গণহত্যার স্থানটিতে এ বছর একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণসহ নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৮ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০২১
কেএআর