ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৯ মাঘ ১৪৩১, ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ২২ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

বরিশাল নগরের বিভিন্ন স্থানে আবর্জনার স্তুপ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২৪ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০২১
বরিশাল নগরের বিভিন্ন স্থানে আবর্জনার স্তুপ বরিশাল নগরের বিভিন্ন স্থানে আবর্জনার স্তুপ। ছবি: বাংলানিউজ

বরিশাল: বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদে (থানা কাউন্সিল) অবৈধ ব্যানার অপসারণ করতে গিয়ে গত বুধবার রাতে আনসারদের গুলি এবং এরপরই পুলিশ, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া এবং সংঘর্ষের ঘটনার পর নগর থেকে বর্জ্য অপসারণের কাজটি বন্ধ রয়েছে।

যেখানে বরিশাল নগর থেকে একযোগে প্রতিরাতে বর্জ্য অপসারণ করতেন সিটি করপোরেশনের কয়েকশ শ্রমিক, সেখানে গত তিনদিন ধরে কোনো ধরণের বর্জ্য অপসারণ করছে না কেউ।

আর এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ নগরবাসী। বিভিন্ন বাজারের সামনে ও সড়কের বিভিন্ন নির্দিষ্ট পয়েন্টে বাজার ও বাসা বাড়ির বর্জ্যের স্তুপের পরিমাণ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। পঁচা দুর্গন্ধে সেখানে সাধারণ মানুষকে নাক চেপে যাতায়াত করতে হচ্ছে।

আর এ বিষয়ে জানতে বরিশাল সি‌টি কর‌পো‌রেশ‌নের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ ফারুক হো‌সেন ও প্রধান প‌রিচ্ছন্ন কর্মকর্তা ডা. র‌বিউল ইসলামের মোবাইলে একা‌ধিকবার কল করা হলেও তারা তা রিসিভ করেননি।

তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে পরিচ্ছন্নতা বিভাগে চল্লিশোর্ধ এক শ্রমিক জানান, ব্যানার অপসারণ অভিযানে বুধবার রাতে প্রশাসনিক কর্মকর্তার সঙ্গে সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা বিভাগের কর্মচারীরাই ছিলেন। থানা কাউন্সিলে ব্যানার খুলতে যখন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বাধা দেন এবং আনসাররা গুলি করে তখনই বিষয়টি ছড়িয়ে পরে। এরপর মেয়রকে লক্ষ্য করে গুলি করা হলে শ্রমিকরা যে যেখান থেকে খবর পেয়েছে ঘটনাস্থলে গিয়েছে। মেয়র ও শ্রমিকদের ওপর গুলির প্রতিবাদে তখন থানা কাউন্সিলের সামনের রাস্তার ওপর ময়লা ফেলে ও বর্জ্য পরিবহনের গাড়ি দিয়ে সড়ক অবরোধ করা হয়। কিন্তু কিছু পরে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরাসহ শ্রমিকদের পুলিশ যখন ধাওয়া দিয়ে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেয়।

এই শ্রমিক আরো জানান, এরপর পরের দিন বিকেলের দিকে কোতোয়ালি মডেল থানায় দুটি মামলায় সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীসহ জ্ঞাত-অজ্ঞাত ৬ শতাধিক আসামী করা হয়। তারপর তো এখন সিটি করপোরেশনের স্টাফরা একরকম পালিয়ে বেড়াচ্ছে। কারণ সেখানে অনেকেই গিয়েছিল, আর অজ্ঞাত আসামীর ক্ষেত্রে কাকে গ্রেফতার করা হবে, কাকে করা হবেনা সেটাও বলা যাচ্ছে না। এরইমধ্যে  কাউন্সিলর শেখ সাই‌য়েদ আহ‌ম্মেদ মান্না‌সহ বেশকিছু লোককে গ্রেফতারও করা হয়েছে। আর গেল দুই রাতে পুলিশ অনেক স্টাফের বাসায়ই হানা দিয়েছে, এজন্য সবাই গ্রেফতার এড়াতে আত্মগোপনে থাকছেন। যে কারণে নগরের ময়লা-আর্বজনা অপসারণের কাজটি এককথায় বন্ধ রয়েছে।  

নগরের জিয়া সড়ক এলাকার বাসিন্দা বাদল হাওলাদার বলেন, আমাদের আশ-পাশের বাসা-বাড়িগুলো থেকে সিটি করপোরেশন ময়লা-আবর্জনা নিয়ে যেতো, কিন্তু তিনদিন ধরে তারা ময়লা নিচ্ছে না।

ব্যাটারিচালিত রিকশা চালক মানিক বলেন, থানা কাউন্সিলের সামনে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের মাঝামাঝি ময়লা ফেলা রয়েছে। এছাড়া প্রতিটি বাজার ও মহল্লার নির্দিষ্ট স্থানে ময়লার স্তুপ দিনে দিনে বাড়ছে। সেইসঙ্গে পঁচা দুর্গন্ধ বৃদ্ধি পাওয়ায় ময়লার স্তুপের পাশ দিয়ে নাক চেপে খুব কষ্টে যাতায়াত করতে হচ্ছে। আর দুদিন আগেও এ সমস্যা ছিল না।

শুধু বাজার বা মহল্লা নির্দিষ্ট স্থান নয়, দোকানপাট ও মার্কেটের সামনেও বর্জ্যের পরিমাণ দিন দিন বাড়ছে, ফলে সদররোড, চকবাজার, ফলপট্টি, পুলিশ লাইন রোড, পোর্টরোডের ফুটপাত দিয়েও দুর্গন্ধে হাটা কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন বগুরা রোডের বাসিন্দা মারুফা বেগম। তিনি দ্রুত ময়লা অপসারণের দাবি জানিয়েছেন।

এদিকে গ্রেফতার আতঙ্কে ব‌রিশাল সি‌টি কর‌পো‌রেশ‌ন এলাকায় ২৪টি টিকা কেন্দ্র থে‌কে বৃহস্প‌তিবারই স‌রে যায় স্বেচ্ছা‌সেবকরা। এতে করে টিকা গ্রহীতা‌দের ভোগা‌ন্তি ও বিশৃঙ্খলার সৃ‌ষ্টি হচ্ছে কেন্দ্রগুলোতে।

বাংলাদেশ সময়: ১২২৪ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০২১
এমএস/কেএআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।