গাইবান্ধা: গাইবান্ধা বুদ্ধি প্রতিবন্ধী স্কুলের ছাত্র রিয়াদ স্পষ্ট করে কথা বলতে পারে না। শুভসংঘের খাদ্যসামগ্রী হাতে পেয়ে বলল, ‘এই যে এত্তোগুল্যা খাদ্য খানা দিলেন, আল্লাহ তোমাদের ভালো করুক।
শারীরিক প্রতিবন্ধী আখতারি বেগম জানাল, ‘দুই বছর ধরে আমাদের বাড়িতে সব কিছু আর আগের মতো নেই। এই চাল, ডাল, আটা দিয়ে তিন চারদিন খুব ভালো চলবে। ’
সোমবার (২৩ আগস্ট) কালের কণ্ঠ শুভসংঘের উদ্যোগে অর্ধশতাধিক দুস্থ প্রতিবন্ধী শিশু শিক্ষার্থী, নারী-পুরুষকে চাল, আটা, ডালসহ অন্যান্য নিত্যপণ্য সহায়তা দেওয়া হয়। জেলা শুভসংঘের অস্থায়ী কার্যালয় চত্বরে অতিথি হিসেবে এসব সামগ্রী বিতরণ করেন সাবেক ক্রিকেটার ও পরিবেশ আন্দোলনের আহ্বায়ক ওয়াজিউর রহমান রাফেল, গাইবান্ধা বুদ্ধি প্রতিবন্ধী স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. ইদরিস আলী, সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী রিকতু প্রসাদ।
শুভসংঘের জেলা সভাপতি তৌহিদা মাহমুদের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন শুভসংঘের জেলা সম্পাদক লতা সরকার, সহসম্পাদক সামিউল ইসলাম সাকিব, সাংস্কৃতিক সম্পাদক দেবী সাহা, নারী সম্পাদক রেহেনা রিসাত, গাইবান্ধা সরকারি কলেজ শাখার সহসম্পাদক রওজাতুন্নাহার লাবন্য, ফুলছড়ি উপজেলা সভাপতি শিমুল হাওলিদারসহ অন্যরা।
মানবাধিকার কর্মী রিকতু প্রসাদ বলেন, করোনাকালে প্রতিবন্ধীরা ভালো নেই। তাদের বাবা-মা বা অভিভাবকরা অনেকেই কর্মহীন। এসময়ে শুভসংঘ যেভাবে তাদের পাশে দাঁড়াল তার প্রশংসা করতেই হয়। তিনি জেলার সব দুস্থ ও অসহায় প্রতিবন্ধীদের পাশে থাকাতে শুভসংঘের কর্মীদের আহ্বান জানান।
বুদ্ধি প্রতিবন্ধী স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. ইদরিস আলী বলেন, স্কুল খোলা নেই। তারপরও এইসব শিশু কিশোর, বুদ্ধি, শ্রবণ ও শারীরিক প্রতিবন্ধী স্কুলে আসে। আমরা সাধ্যমত চেষ্টা করি। তারপরও অসহায় এসব শিক্ষার্থীদের জন্য তা নেহায়েতই অপ্রতুল। শুভসংঘ ওদের মনে রেখে পাশে দাঁড়াল, এটি অনেক বড় ব্যাপার। আমি সবার জন্য দোয়া করছি।
পরিবেশ আন্দোলনের আহ্বায়ক ওয়াজিউর রহমান রাফেল করোনার সময় সারাদেশে কালের কণ্ঠ শুভসংঘের ত্রাণ বিতরণ কর্মসূচির প্রশংসা করে বলেন, ‘এই সব তরুণ-তরুণীরা যেভাবে মানবিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিচ্ছে তা মন ভরিয়ে দেয়। ’ তিনি গাইবান্ধায় শুভসংঘের নানা সৃজনশীল কাজের উল্লেখ করে বলেন, যেকোনো দুর্যোগ বা মহামারির সময় তরুণরাই পারে মানবিক বিপর্যয় প্রতিরোধ করতে। শুভসংঘ তা তাদের মতো করে প্রমাণ করছে। তিনি প্রতিবন্ধীদের সারাদেশের শুভসংঘ কর্মীদের জন্য দোয়া করতে বলেন।
শুভসংঘের সাধারণ সম্পাদক লতা সরকার বলেন, শুভসংঘের কেন্দ্রীয় কমিটির সহযোগিতায় করোনায় কর্মহীন শিশু নারী পুরুষদের জন্য খাদ্যসামগ্রী বিতরণের কয়েকটি কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। প্রতিবন্ধীদের সহায়তা দেওয়ার মাধ্যমে এই কাজ শুরু হলো। তাদের পাশে দাঁড়াতে পেরে আমরাও গর্ববোধ করছি।
এদিকে, খাদ্যসামগ্রী বিতরণের আগে প্রতিবন্ধী ও তাদের অভিভাবকদের মধ্যে করোনা সুরক্ষার জন্য মাস্ক বিতরণ করা হয়। এ কর্মসূচি সমন্বয় করেন শুভসংঘের সদস্য ও কর্মী উম্মে সালমা বৃষ্টি, মীম, আতিক ও ফরিদ।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫০ ঘণ্টা, আগস্ট ২৩, ২০২১
আরএ