ঢাকা, বুধবার, ২৯ মাঘ ১৪৩১, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

কেশবপুরে মেয়রের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলা করে বিপাকে বাদী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৫৮ ঘণ্টা, আগস্ট ২৩, ২০২১
কেশবপুরে মেয়রের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলা করে বিপাকে বাদী ...

যশোর: যশোরের কেশবপুর পৌরসভার মেয়র রফিকুল ইসলাম ও তার দুই সহযোগীর নামে চাঁদাবাজির মামলা করে বিপাকে পড়েছেন বাদী। মামলার স্বাক্ষীরাও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

আদালতে মামলা করার পর বাদীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও দখল করে নিয়েছে আসামিরা।

সোমবার (২৩ আগস্ট) বিকেলে প্রেসক্লাব যশোরে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন কেশবপুরের ব্রক্ষ্মকাটি গ্রামের বাসিন্দা ও মিশাল ক্যাবল নেটওয়ার্ক এন্ড এন্টারপ্রাইজের মালিক খন্দকার মফিদুল ইসলাম।

এর আগে, গত ১৭ আগস্ট যশোরের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মেয়র রফিকুল ইসলামসহ তিন জনের নামে চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা করেন। মামলাটি সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গৌতম মল্লিক গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে খন্দকার মফিদুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘ ১২ বছর ধরে উপজেলার ব্রক্ষ্মকাটি, বালিয়াডাঙ্গা ও রামচন্দ্রপুরসহ বেশ কয়েকটি গ্রামে সুনামের সঙ্গে ডিস (ক্যাবল) ব্যবসা করে আসছেন। চলতি বছরের শুরুর দিকে পৌরসভার মেয়র রফিকুল ইসলাম তার দুই সহযোগী মফিজুর রহমান ও আলমগীর সিদ্দিক টিটুকে পাঠিয়ে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করেন।

মাসে মাসে চাঁদার টাকা না দিলে ভয়ভীতি দেখাতো। শান্তিতে ব্যবসা করার জন্য তিনি মফিজুর ও আলমগীরকে এক লাখ টাকা চাঁদা দেন। কিছুদিন পর আলমগীর এক লাখ টাকা নিয়ে মেয়রের সঙ্গে তাকে দেখা করতে বলেন। চাঁদার টাকা দিতে অস্বীকার করায় গত ১৫ জুন মফিজুলকে পুরাতন বাসস্টান্ডে একা পেয়ে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে স্টাম্পে স্বাক্ষর করে নেন। ৩০ জুলাই আসামিরা লোকজন নিয়ে তার ডিস ব্যবসার অফিসে গিয়ে তাকে মারপিট করে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদার টাকা না দিলে খুন জখম করবে বলে হুমকি দেন। এরমধ্যে লোকজন এগিয়ে আসলে আসামিরা চলে যায়।

এ ব্যাপারে থানায় অভিযোগ দিলে পুলিশ আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেয়। এরপর যশোরের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা করায় আমার বাড়িতে মেয়রের সন্ত্রাসী বাহিনী অব্যহত জীবননাশের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। একইসঙ্গে আমার ডিশ ব্যবসা দখল করে নিয়ে গ্রাহকদের লাইন ভাড়া আদায় করার জন্য তাদের উপর চাপ সৃষ্টি করছেন। মেয়রের সন্ত্রাসীদের নির্যাতনে আমার পরিবার এলাকা ছেড়ে যেতে বাধ্য হচ্ছে। এখন নিজ পরিবারের নিরাপত্তা ও ব্যবসা ফিরিয়ে দিতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগী খন্দকার মফিদুল ইসলাম।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে খন্দকার মফিদুল ইসলাম বলেন, আমার ভাই আজিজ উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক। কয়েক মাস আগে মেয়র রফিকুল ইসলামের মদ্যপানের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করে দেয়। যদিও আমার ভাই এলাকায় থাকে না। এজন্য ক্ষুব্ধ হয়ে আমাকে অত্যাচার করছে।

অভিযোগ প্রসঙ্গে মেয়র রফিকুল ইসলামের বলেন, কেশবপুরের হাতুড়ি বাহিনীর প্রধান আজিজের ভাই মফিদুল। তাদের সঙ্গে আমার কখনো বিরোধ ছিল না। মূলত মফিদুল তার ভাই আজিজকে দিয়ে হাতুড়ি বাহিনী পরিচালনা করতো। শাহীন চাকলাদার এমপি হওয়ার পর হাতুড়ি বাহিনীর সদস্যরা কেশবপুর আসতে পারে না। এজন্য আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট অভিযোগ করছে। মামলার স্বাক্ষী নিজেই আমার কাছে এসে বলেছে, অভিযোগের ব্যাপারে সে কিছুই জানে না।

প্রসঙ্গত, যশোরের কেশবপুর পৌরসভার মেয়র রফিকুল ইসলাম যেন কোনোভাবেই বিতর্ক পিছু হটছে না। তার মদ্যপানের ছবি ফেসবুকে ভাইরালকে কেন্দ্র করে সন্দেহজনকভাবে উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান মুকুলকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও প্রাণনাশের হুমকির কল রেকর্ড ভাইরালের ঘটনায় সাধারণ ডায়েরির রেশ না কাটতেই নতুন করে যোগ হয়েছে চাঁদাবাজি-দখলবাজির মতো মামলা।

বাংলাদেশ সময়:  ২৩৫৮ ঘণ্টা, আগস্ট ২৩, ২০২১
ইউজি/এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।