মাগুরা: মাগুরার মহম্মপুর উপজেলায় মধুমতি নদীর তীব্র ভাঙন শুরু হওয়ায় মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাচ্ছে রুইজানি, ভুলানাথপুর, কাশিপুর, হরে কৃষ্ণপুর গ্রাম। এর মধ্যে আরো রয়েছে কবরস্থান, মন্দির, মসজিদ, মাদ্ররাসাসহ গুরুত্বপূণ স্থাপনা।
ইতোমধ্যে মধুমতি নদীর তীব্র স্রোতের কারণে রুইজানি, কাশিপুর, ঝামা, হরে কৃষ্ণপুর গ্রামের নদী পাড়ের ফসলি জমি বিলীন হয়ে যাচ্ছে। বাড়িঘর ভেঙে যাওয়া অর্ধশত পরিবার অন্যত্র চলে গেছে।
এলাকাবাসী জানান, চলতি বর্ষা মৌসুমে মধুমতি নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় নদী তীরের মাটি ধসে যাচ্ছে। তীরবতী এলাকায় বড় বড় ফাটল দেখা দিয়েছে। এতে স্থানীয়দের মনে আতঙ্ক দেখা দেওয়ায় নদী তীরবর্তী বাসিন্দারা বাড়ি-ঘর অন্যত্র সরিয়ে নিতে শুরু করেছেন।
মহম্মদপুর সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আনোয়ার হোসেন শাহীন বলেন, একাধিক পরিবার তাদের ঘরবাড়ি অন্যত্র নিয়ে গেছে। গৃহহীন হয়ে পড়েছে রুইজানি গ্রামে বাসিন্দা সুকুমার সরকার, কাঞ্চিরাম সরকার, মনিন্দ্রনাথ সরকারসহ আরো অনেকে।
রুইজানি গ্রামের বাসিন্দা হাসি রানী বাংলানিউজকে বলেন, আমরা গরিব মানুষ আমাদের ফসলি জমিও নদীতে চলে গেছে।
ঝামা গ্রামের বিষ্ণু সরকার বলেন, আমার বাড়িতে প্রচুর গাছগাছালি ছিল। কোনোকিছু সরাতে পারিনি। রাতের অন্ধকারে আমার বাড়িঘর নদীগর্ভে চলে গেছে। তাই অন্যের জায়গা চেয়ে সেখানে ঘর তুলতে হবে। প্রতি বছর বিভিন্ন লোক আসে নদী পাড় দেখে চলে যায়। আর বলে বালুর বস্তা ফেলা হবে। কিন্তু ফেলা আর হয় না। আমরা এলাকাবাসী চাই এর স্থায়ী সমাধান হোক।
মহম্মপুর উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুলাহেল কাফি বাংলানিউজকে বলেন, মধুমতির করাল গ্রাসে প্রতিবছরই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মানুষ। আমরা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করে এর স্থায়ী সমাধান করা যায় সেই চেষ্টা করছি। আমাদের পার্শ্ববর্তী উপজেলার সঙ্গে সীমানা নিয়ে বিরোধ চলছে। প্রতিবছর ভাঙনের কারণে গৃহহারা মানুষগুলোর স্থায়ী থাকার জায়গা দিতে পারছি না। প্রতি বছর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধ করার চেষ্টা করি। আমাদের মাগুরা-২ আসনের এমপি ও জেলা প্রশাসকের সঙ্গে আলাপ করে স্থায়ীভাবে ভাঙন রোধ করা যায় সেই চেষ্টা অবাহত রয়েছে।
মহম্মদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রামান্দ পাল বাংলানিউজকে বলেন, মধুমতি নদী তীরবর্তী ভাঙনকবলিত যে সব এলাকা রয়েছে যেমন রুইজানি, ভুলানাথপুর, কাশিপুর, হরে কৃষ্ণপুর এলাকা পরিদর্শন করেছি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীকে সঙ্গে নিয়ে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধ করার চেষ্টা করছি।
বাংলাদেশ সময়: ১২৪৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২৪, ২০২১
আরএ