ঢাকা, বুধবার, ২৯ মাঘ ১৪৩১, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

হাসপাতালের সাড়ে ৪ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০১ ঘণ্টা, আগস্ট ২৪, ২০২১
হাসপাতালের সাড়ে ৪ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ 

কুমিল্লা: কুমিল্লার একটি বেসরকারি হাসপাতালের কয়েকজন শেয়ারহোল্ডারের বিরুদ্ধে সাড়ে চার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।  

মিডল্যান্ড হসপিটাল নামে ওই প্রতিষ্ঠানটি কুমিল্লার কান্দিরপাড় এলাকার রামঘাটে অবস্থিত।

মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট) নগরীর হাউজিং এস্টেট এলাকার লাইফ কেয়ার হাসপাতালে এক সংবাদ সম্মেলনে এ বি এম খোরশেদ আলম নামে একজন চিকিৎসক এ অভিযোগ করেন।  

তিনি নিজেকে মিডল্যান্ড হাসপতালের পরিচালক (অর্থ ও কোম্পানি অ্যাফেয়ার্স) বলে দাবি করেন। এ ঘটনায় কুমিল্লা কোতোয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগও করেছেন ওই চিকিৎসক।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ডা. খোরশেদ বলেন, হাসপাতালের ৪০টি শেয়ারের মালিক ২৩ ব্যক্তি। পাঁচজন শেয়ারহোল্ডার ও শেয়ারহোল্ডার প্রতিনিধিসহ আরও কয়েকজন মিলে অর্থ আত্মসাৎ ও অবৈধ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন। ২০০৫ সাল থেকে ২০২০ সালের ৩০ নভেম্বরের মধ্যে চক্রটি চার কোটি ৫২ লাখ ৯৩ হাজার ১০ টাকা আত্মসাৎ করেছে।  

এর মধ্যে ২০০৬ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি হাসপাতালের অংশীদার ডা. মহসিনুজ্জামান চৌধুরী জেলার লাকসাম উপজেলার মুদাফ্ফরগঞ্জে মিডল্যান্ড হসপিটাল ইউনিট-২ নাম দিয়ে ২৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন। পরে তিনি ১০টি দোকান বরাদ্দের নামে অসত্য তথ্য দিয়ে আরও ৩০ লাখ টাকা নেন। কিন্তু হাসপাতালের অর্থ ও কোম্পানি অ্যাফেয়ার্সসহ আমরা বিষয়টি জানতাম না। আরেক অংশীদার ডা. মো. শহীদুল্লাহ ১৫ লাখ টাকা হাসপাতালের চেয়ারম্যান হিসেবে নগদ গ্রহণ করেন।
    
ডা. খোরশেদ আরও বলেন, হাসপাতালের শেয়ারহোল্ডার ডা. মো. মুজিবুর রহমান ২০১৯ সালের ২৯ মার্চ পরিচালনা পর্ষদ নির্বাচনে চারটি জাল ভোট দেন। বিধি লঙ্ঘন করে ২০২০ সালের ২৯ ডিসেম্বর অবৈধ অ্যাডহক কমিটির অর্থ ও কোম্পানি অ্যাফেয়ার্স পরিচালক হন তিনি।  

তিনি অভিযোগ করেন, ডা. মো.শহীদুল্লাহও বিধি লঙ্ঘন করে চেয়ারম্যান হয়েছেন। পরে চলতি বছরের ৩০ জুন ডা. মো. মুজিবুর রহমান পদত্যাগ করেছেন। কমিটির সদস্যদের তিনজনের মধ্যে নাছিমা আক্তার নামে একজনও পদত্যাগ করেছেন। ২০০৬ সালে ডা. সমীর কান্তি সরকার অর্থ ও কোম্পানি অ্যাফেয়ার্স পরিচালক এবং পরিচালক ডা. গোলাম মোর্শেদ তাদের সহযোগিতা করেন এবং চক্রটির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এছাড়া হাসপাতালের কর্মচারী সৈয়দ নুরুল ইসলাম, অমল চন্দ্র দেবনাথ, আবদুল জলিল ও সাইফুল ইসলাম ওই পাঁচ অংশীদারের যোগসাজশে ২০০৫ সাল থেকে ২০২০ সালের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত সময়ে চার কোটি ৫২ লাখ ৯৩ হাজার ১০ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।    

তিনি বলেন, ২০১৯ সালের ২৬ জুলাই তিনি সর্বাধিক ভোট পেয়ে হাসপাতালের অর্থ ও কোম্পানি অ্যাফেয়ার্স পদে নির্বাচিত হন। এরপর ওই বছরের ১ আগস্ট দায়িত্ব নিয়ে টাকা আত্মসাতের বিষয়টি দেখতে পান। এসব নিয়ে প্রতিবাদ করায় চক্রটি এখন তাকে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে।  

এ সময় তিনি প্রশাসনের কাছে দায়ের করা অভিযোগটি মামলা হিসেবে নিয়ে তদন্তের পর জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।  

এ বিষয়ে ডা. মহসিনুজ্জামান চৌধুরীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এ হাসপাতালের কোনো শেয়ারহোল্ডার বা মালিক না। সুতরাং টাকা আত্মসাতের কোনো প্রশ্নই ওঠে না। মূলত আমার স্ত্রী ওই হাসপাতালের শেয়ারহোল্ডার।  

তিনি আরও বলেন, গত বছরের ডিসেম্বরে পরিচালনা পর্ষদ নির্বাচনে আমার স্ত্রী চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ছিলেন। ওই নির্বাচনে ডা. খোরশেদও একই পদে প্রার্থী হন। কিন্তু নিজের অবস্থান নড়বড়ে দেখে তিনি নির্বাচনের সব কাগজপত্র চুরি করে পালিয়ে যান। এরপর থেকে বিভিন্নভাবে আমাদের নামে মিথ্যাচার এবং হয়রানি করছেন। হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডা. মো. শহীদুল্লাহ এসব বিষয়ে আরও ভালো বলতে পারবেন।

অপরদিকে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডা. মো. শহীদুল্লাহর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার ফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৮ ঘণ্টা, আগস্ট ২৪, ২০২১
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।