ঢাকা, বুধবার, ২৯ মাঘ ১৪৩১, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

পদ্মায় ট্রলারডুবি: ১৬ ঘণ্টায়ও সন্ধান মেলেনি ২ শিক্ষকের

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৩ ঘণ্টা, আগস্ট ২৬, ২০২১
পদ্মায় ট্রলারডুবি: ১৬ ঘণ্টায়ও সন্ধান মেলেনি ২ শিক্ষকের

ফরিদপুর: ফরিদপুর সদরের তাইজউদ্দীন মুন্সীর ডাঙ্গী এলাকায় পদ্মা নদীতে ট্রলারডুবির ঘটনায় নিখোঁজ দুই শিক্ষকের সন্ধান গত ১৬ ঘণ্টায়ও পাওয়া যায়নি।

বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) ফরিদপুর ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র কর্মকর্তা সুভাষ বাড়ৈ এ তথ্য জানান।

এর আগে, বুধবার (২৫ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টায় নিখোঁজ হন তারা।

নিখোঁজ ওই দুই শিক্ষক হলেন- ফরিদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সহকারী শিক্ষক আলমগীর হোসেন (৪১) ও সারদা সুন্দরী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের সহকারী শিক্ষক আজমল হোসেন শেখ (৪৪)।

আজমল হোসেনের বাড়ি সদর উপজেলার খলিলপুরে। তবে তিনি জেলা শহরের গোয়ালচামটে ভাড়া বাসায় থাকতেন। আর আলমগীর হোসেনের বাড়ি খলিল মন্ডলের হাট এলাকায়। তিনি ঝিলটুলি পুরাতন পাসপোর্ট অফিস এলাকায় থাকতেন।

ট্রলার ডুবি থেকে বেঁচে যাওয়া শিক্ষক রেজাউল করিম বাংলানিউজকে বলেন,  আমি এবং শোভারামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক সালাউদ্দিন, সাঈদ সারদা সুন্দরী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক সাইদুর প্রামানিক, আইয়ুব, জাহাঙ্গীর, আবুল হাসান, সাইফুল ইসলাম, আজমল হোসেন, ঈশান ইনস্টিটিউশনের শিক্ষক শাহিন, সাদীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক সুশান্ত, বলাই, ফরিদপুর হাই স্কুলের ইংরেজি শিক্ষক আলমগীর হোসেন ও আজাদ বিকেলে নৌকা ভ্রমণে বের হই। স্রোতের কারণে হঠাৎ করে ট্রলারটি উল্টে যায়। আর কিছু মনে নেই। পরে জ্ঞান ফিরে দেখি নদীর পাড়ে লোকজন আমাদের ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে।

প্রত্যক্ষদর্শী আসলাম শেখ বাংলানিউজকে বলেন, আমরা সিঅ্যান্ডবি ঘাটে জাহাজে রং করছিলাম। হঠাৎ করে চেঁচামেচি শুনে এগিয়ে এসে দেখি ট্রলার ডুবে গেছে। পরে আমরা কয়েকজনকে উদ্ধার করতে সক্ষম হই।

মাঝি নাজমুল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, আমি নদীতে নৌকা চালাচ্ছিলাম। তখন নদীতে অনেক স্রোত ছিল। দুর্ঘটনার পর দুইজনকে উদ্ধার করতে পেরেছি।

ফরিদপুর ২ নম্বর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. রাকিব হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ১৪ জন শিক্ষক এবং মাঝিসহ ট্রলারটি ডুবে যায়। পুলিশ স্থানীয়দের সহায়তায় উদ্ধার কাজে অংশ নেয়। ১৩ জনকে উদ্ধার করতে পারলেও দুই জন শিক্ষককে এখনও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

ফরিদপুর ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র কর্মকর্তা সুভাষ বাড়ৈ বাংলানিউজকে বলেন, ঘটনাস্থল থেকে দুই কিলোমিটার পর্যন্ত ট্রলার নিয়ে খোঁজ চালিয়েছি। আসলে সেদিন কি ঘটেছে তা এখনো বলা যাচ্ছে না। রাত ১২টা পর্যন্ত যতোটুকু সম্ভব উদ্ধার কাজ চালানো হয়।

তিনি আরও বলেন, ফরিদপুরে আমাদের কোনো ডুবুরি নেই। পাটুরিয়া ঘাট থেকে ডুবুরি আনা হলেও রাতের বেলায় উদ্ধার কাজ চালানো সম্ভব হয়নি। ডুবুরি দল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে উদ্ধার কাজ শুরু করেছে।

ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুমন রঞ্জন সরকার বাংলানিউজকে বলেন, নিখোঁজ দুই শিক্ষককে উদ্ধারে নৌ-পুলিশ, জেলা পুলিশ ও দমকল বাহিনীর কয়েকটি দল কাজ করছে।

প্রসঙ্গত, ফরিদপুর শহর থেকে বিকেল ৩টায় ট্রলার ভাড়া করে পদ্মা ভ্রমণে যান বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১৪ জন শিক্ষক। ভ্রমণ শেষে বাড়ি ফেরার পথে তীব্র স্রোতের মুখে ৩ নম্বর পন্টুনের সঙ্গে সংঘর্ষে ট্রলারটি ডুবে যায়। এ সময় ১২ জন শিক্ষক পাড়ে উঠতে পারলেও আজমল ও আলমগীর নামের দুই শিক্ষক নিখোঁজ হন।

বাংলাদেশ সময়: ২০১০ ঘণ্টা, আগস্ট ২৬, ২০২১
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।