বগুড়া: বগুড়ায় যমুনা নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমার ৬৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে জেলার সারিয়াকান্দি পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি বেড়েছে।
শুক্রবার (৩ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বিষয়টি বাংলানিউজকে নিশ্চিত করেন বগুড়া জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৗশলী মো. মাহবুবুর রহমান।
জানা যায়, গেল কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টির সঙ্গে উজান থেকে নেমে আসা ঢলে বগুড়ায় যমুনা নদীর পানি বেড়েই চলেছে। পানি বাড়া অব্যাহত থাকায় নদী তীরবর্তী বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ সংলগ্ন নিচু এলাকার বসত-বাড়ি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং দূরবর্তী চরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের ফসলি জমি প্লাবিত হয়ে পড়েছে। নিম্নাঞ্চলগুলো এবং এসব এলাকার রোপা, মাশকলাই, মরিচ, স্থানীয় জাতের গাঞ্জিয়া ধানসহ ফসলি জমিতে পানি ঢুকেছে। অনেকে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে আশ্রয় নিতে শুরু করেছে। বগুড়ায় মূলত আগস্টের মাঝামাঝি সময় থেকেই যমুনায় পানি বাড়া শুরু হয়। তবে গত ২৬ আগস্ট দুপুরে তা বিপৎসীমা অতিক্রম করে।
সারিয়াকান্দি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন, কৃষি কর্মকর্তা ও শিক্ষা অফিসার জানান, বন্যায় এ উপজেলার চালুয়াবাড়ী, কর্নিবাড়ী, বোহাইল, কাজলা, চন্দনবাইশা, সারিয়াকান্দি সদর, হাটরশরপুর, কুতুবপুর ও কামালপুর ইউনিয়নের ৬৮টি গ্রামের ১২ হাজার ৭০০ পরিবারের ৫০ হাজার ৮০০ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মধ্যে জি আরের ৫২ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হয়েছে। যমুনা নদীতে পানি বাড়ার ফলে এ উপজেলায় ১৩৫ হেক্টর রোপা আমান, ১২ হেক্টর বীজতলা, ১০ হেক্টর সবজি, ২০ হেক্টর জমির মাসকালাইসহ সর্বমোট ১৭৭ হেক্টর ফসলি জমি বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। সারিয়াকান্দি উপজেলায় ২৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দু’টি উচ্চ বিদ্যালয়, একটি মাদরাসায় বন্যার পানি ঢুকেছে। এছাড়া বন্যায় ৪৪টি পুকুরের ১০ মেট্রিক টন মাছ বন্যায় ভেসে গেছে।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহবুবুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, যমুনা নদীতে বিপৎসীমা নির্ধারণ করা হয় ১৬ দশমিক ৭০ মিটার। শুক্রবার দুপুর ৩টার হিসেব অনুযায়ী নদীর পানি ১৭.৩৯ মিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অর্থাৎ বিপৎসীমার ৬৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যদিকে বাঙ্গালী নদীতে বিপৎসীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫.৮৫ মিটার। এ নদীর পানি বাড়লেও বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, উজানে যে পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছিল তাতে যমুনায় পানি বাড়ে। তবে তার দাবি পানি বাড়লেও বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে ভাঙনের কোনো আশঙ্কা নেই। পানি আর বাড়বে না বলেও মন্তব্য করেন মাহবুবুর রহমান।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৩, ২০২১
কেইউএ/আরবি