ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ইঞ্জিন স্টার্ট দিয়েই সচল রাখা হয়েছে ‘কার্ডিয়াক অ্যাম্বুলেন্স’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩, ২০২১
ইঞ্জিন স্টার্ট দিয়েই সচল রাখা হয়েছে ‘কার্ডিয়াক অ্যাম্বুলেন্স’ আইসিইউ’র সুবিধা-সংবলিত দেড় কোটি টাকার ‘কার্ডিয়াক অ্যাম্বুলেন্স’। ছবি: বাংলানিউজ

রাজশাহী: রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে দুই বছর ধরে পড়ে আছে অত্যাধুনিক ‘কার্ডিয়াক অ্যাম্বুলেন্স’।

আইসিইউ’র সুবিধা-সংবলিত অ্যাম্বুলেন্সটিতে রয়েছে হৃদরোগ রোগীদের চিকিৎসার জন্য সব রকমের আধুনিক ব্যবস্থা।

শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত (এসি) অ্যাম্বুলেন্সটির ভেতরে উন্নত প্রযুক্তির ইসিজি, ভ্যান্টিলেটর ও সাকার যন্ত্র এবং সিরিঞ্জ পাম্প, মনিটর, অক্সিজেন সিলিন্ডারসহ জীবনরক্ষাকারী বিভিন্ন যন্ত্রপাতি রয়েছে। অথচ দক্ষ চিকিৎসক-নার্সের অভাবে এটি চালানো যাচ্ছে না।

কেনার পর একদিনের জন্যও এটি রোগী আনা-নেওয়ার কাজে ব্যবহৃত হয়নি। কেবল ইঞ্জিন স্টার্ট দিয়েই সচল রাখা হয়েছে অ্যাম্বুলেন্সটি।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ১ কোটি ৫০ লাখ ৪৪ হাজার ৮৫৫ টাকা দামের অ্যাম্বুলেন্সটি ২০১৯ সালের ৬ মে পাঠানো হয়। ওই বছর ইতালিয়ান ব্র্যান্ড আইভেকোর পাঁচটি কার্ডিয়াক অ্যাম্বুলেন্স স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে সরবরাহ করে মেসার্স ফেরিটেক প্রাইভেট লিমিটেড। এর মধ্যে একটি অ্যাম্বুলেন্স রামেক হাসপাতালে দেওয়া হয়। অ্যাম্বুলেন্সটিতে প্রায় ৪০ ধরনের চিকিৎসার সুবিধা রয়েছে, যা রামেক হাসপাতালের আইসিইউ’র চেয়ে বেশি।

তবে অ্যাম্বুলেন্সটিতে রোগী বহন করতে হলে প্রয়োজন দক্ষ চিকিৎসক ও নার্স। সে রকম জনবল রামেক হাসপাতালে নেই। পাশাপাশি চিকিৎসক-নার্সকে সম্মানি দেওয়ার কথা থাকলেও তার পরিমাণ নির্ধারিত হয়নি। নির্ধারিত হয়নি কিলোমিটার প্রতি কার্ডিয়াক অ্যাম্বুলেন্সের ভাড়াও।



চিকিৎসক-নার্স চেয়ে এবং ভাড়া নির্ধারণ করে দেওয়ার জন্য হাসপাতালের পক্ষ থেকে মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি দেওয়া হয়। তবে এ বিষয়ে এখনও কোনো অগ্রগতি হয়নি।

শুক্রবার (০৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রামেক হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের পেছনের একটি গ্যারেজে অ্যাম্বুলেন্সটি রাখা হয়েছে।

এ সময় হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স চালকদের ইনচার্জ আশরাফুল আলী বাংলানিউজকে জানান, অ্যাম্বুলেন্সটি সচল রাখতে প্রতিদিন সকালে ইঞ্জিন স্টার্ট দেওয়া হয়। ভেতরে থাকা আইসিইউ’র সব যন্ত্রপাতিতেও বৈদ্যুতিক লাইন দেন তিনি। যন্ত্রপাতিগুলো সচল হচ্ছে কিনা দেখেন। মাঝে মধ্যে অ্যাম্বুলেন্সটি বের করে হাসপাতালের আশপাশের রাস্তায় চালান।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) রাজশাহীর সাবেক সভাপতি ডা. ওয়াসিম হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, কার্ডিয়াক অ্যাম্বুলেন্সে রোগী তোলার সঙ্গে সঙ্গে তার সর্বোচ্চ চিকিৎসা শুরু হয়। এতে রোগীর প্রাণ বাঁচার সম্ভাবনা আছে। কিন্তু সদিচ্ছার অভাবে জনগণের এমন একটা সম্পদ পড়ে আছে। যত দ্রুত সম্ভব অ্যাম্বুলেন্সটি চালু করা দরকার।

রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বাংলানিউজকে বলেন, হাসপাতালে যে আইসিইউ ইউনিট, তার তুলনায় অ্যাম্বুলেন্সে চিকিৎসা সরঞ্জাম বেশি। ফলে সেটি চালানোর মতো দক্ষ জনবল আমাদের নেই। বিষয়টি জানিয়ে অনেকদিন আগেই মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখনও কোনো অগ্রগতি হয়নি। এ ধরনের নানা জটিলতায় অত্যাধুনিক এই অ্যাম্বুলেন্সটি ব্যবহার করা যাচ্ছে না বলে উল্লেখ করেন রামেক হাসপাতাল পরিচালক।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৩, ২০২১
এসএস/এনএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।