ঢাকা, রবিবার, ২৬ মাঘ ১৪৩১, ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

কুড়িগ্রামে বন্যার অবনতি, নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটছে মানুষ

ফজলে ইলাহী স্বপন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩, ২০২১
কুড়িগ্রামে বন্যার অবনতি, নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটছে মানুষ ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার হাতিয়ায় বন্যায় প্লাবিত গ্রাম

কুড়িগ্রাম: উজানের ঢলে কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বাড়তে থাকায় উলিপুর, চিলমারী, রৌমারী ও চর রাজিবপুরে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। অপর দিকে আবারো ধরলায় পানি বাড়তে শুরু করেছে।

এতে ধরলা ও ব্রহ্মপুত্র অববাহিকায় প্রায় ৮০ হাজার মানুষ পানিবন্দি রয়েছে।

বাড়ি-ঘরে পানি ওঠায় বন্যার্ত মানুষজন পরিবার-পরিজন নিয়ে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধসহ নিরাপদ স্থানে বা আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। চারদিকে পানি ওঠায় দেখা দিয়েছে খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকট।

বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে বয়স্ক ও নারীদের জন্য শৌচাগার সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করেছে। তৃণভূমি তলিয়ে যাওয়ায় গবাদিপশুর তীব্র খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। অনেকে আশ্রয় নিয়েছেন নৌকায়।

শুক্রবার (০৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৪৯ সেন্টিমিটার এবং ধরলা নদীর পানি ব্রিজ পয়েন্টে ৪১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ধরলায় পানি বেড়েছে ৩০ সেন্টিমিটার ও ব্রহ্মপুত্রে কমেছে ২ সেন্টিমিটার।

উলিপুরের ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার হাতিয়া ইউনিয়নের নিলকণ্ঠ গ্রামের বেলাল হোসেন ও কলাতিপাড়ার খলিলুর রহমান জানান, বাড়ির চারিদিকে পানি থৈ থৈ করছে। বাড়ি-ঘরে পানি, তলিয়ে গেছে টিউবয়েল। ঘরের ভিতর অনেকে মাচা পেতে থাকলেও পরিবার পরিজনকে পাঠিয়েছেন নিরাপদ আশ্রয়ে।

কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার হাতিয়া ইউনিয়নে বাঁধে আশ্রিতরা জানান, বাড়ি-ঘরে পানি ওঠায় শতাধিক পরিবার বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে। পানি বাড়তে থাকায় আরও অনেক পরিবার আসছে বাঁধে আশ্রয় নিতে। পরিবারগুলোর জন্য বিশুদ্ধ পানি ও ল্যাট্রিন সমস্যা দেখা দিয়েছে।

উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিএম আবুল হোসেন বাংলানিউজকে জানান, উজান ঢলে ব্রহ্মপুত্রে পানি বাড়ায় তার ইউনিয়নে আড়াই থেকে তিন হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়েছে। বন্যা কবলিতদের জন্য উপজেলা পরিষদ থেকে ৬ মে.টন চাল বরাদ্দ পেয়েছি। যা বিতরণ করা হচ্ছে।

উলিপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান গোলাম হোসেন মন্টু বাংলানিউজকে জানান, উলিপুরে ৮টি ইউনিয়নে প্রায় ৩০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়েছে। বিশুদ্ধ পানি ও শৌচাগারের ব্যবস্থা করার কাজ চলছে।

কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মঞ্জুরুল হক বাংলানিউজকে জানান, বন্যার ফলে জেলায় প্রায় ২৮ হাজার হেক্টর রোপা আমন ক্ষেত, শাকসবজি ও বীজতলা তলিয়ে গেছে।

কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, বন্যা দুর্গতদের আশ্রয়কেন্দ্রে স্থানান্তরসহ তাদের জন্য বিশুদ্ধ পানি ও ভ্রাম্যমাণ ল্যাট্রিনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। উপ-বরাদ্ধকৃত ২৮০ মে.টন চাল ও ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকা বন্যাকবলিত এলাকায় বিতরণ শুরু হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০০১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৩, ২০২১
এফইএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ