টাঙ্গাইল: কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, দেশে আখ উৎপাদন এবং মাড়াই বা চিনিকল-দুই জায়গাতেই আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করতে হবে। এতে দুই জায়গাতে যদি উৎপাদন ও উৎপাদনশীলতা বাড়ে, তাহলে আখ চাষ লাভজনক হবে।
একইসঙ্গে সাথী ফসল চাষ করতে হবে। বিএসআরআই উদ্ভাবিত উন্নত জাতের সঙ্গে সাথী ফসল চাষ করলে আখ চাষ লাভজনক হবে। কৃষকরা আখ চাষে উদ্বুদ্ধ হবে।
শুক্রবার (৩ সেপ্টেম্বর) টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে বাংলাদেশ সুগারক্রপ গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএসআরআই) আয়োজিত ‘সুগারক্রপ চাষের আধুনিক প্রযুক্তি’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এ কথা বলেন। তিনি ঢাকা থেকে ভার্চ্যুয়ালি এ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
মন্ত্রী বলেন, দেশের সুগারমিলগুলো অনেক পুরোনো। চিনি উৎপাদন প্রযুক্তিও আধুনিক নয়। অন্যদিকে মাঠে আখের উৎপাদনশীলতা কম। এতে চিনি উৎপাদনে খরচ অনেক বেশি হয়। বর্তমানে এক কেজি চিনি উৎপাদন করতে যে খরচ পড়ে তা কমিয়ে আনা যায় কিনা যাচাই করা দরকার। প্রয়োজনে ‘আধুনিক প্রযুক্তির একটি মডেল সুগারমিল’ পরীক্ষামূলকভাবে স্থাপন করা যেতে পারে। এর সঙ্গে মাঠে উন্নত জাতের আখের চাষ। তারপরও যদি দেখা যায়, চিনির উৎপাদন খরচ কমছে না ও আখ চাষ লাভজনক নয়, তাহলে দেশে চিনিকল বন্ধ করে দেওয়া দরকার।
বিএসআরআইর মহাপরিচালক আমজাদ হোসেনের সভাপতিত্বে বিএসআরআইর পরিচালক সমজিৎ কুমার পাল, জামালপুর উপকেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা খন্দকার মহিউল আলম, টাঙ্গাইল কৃষি সম্প্রসারণের উপপরিচালক আহসানুল বাশার প্রমুখ বক্তব্য দেন।
বিএসআরআই কর্মকর্তারা জানায়, খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) সুপারিশ অনুযায়ী জনপ্রতি বছরে ১৩ কেজি চিনি/গুড় গ্রহণ করা প্রয়োজন। সে হিসেবে দেশে প্রতি বছর প্রায় ২০ লাখ টন চিনি/গুড় প্রয়োজন। বর্তমানে উৎপাদিত হয় প্রায় ছয় লাখ টন (০.৬৮ লাখ টন চিনি আর ৫.৩২ লাখ টন গুড়)। বছরে ঘাটতি ১৪ লাখ টন।
ঘাটতি পূরণের জন্য দরকার আরো বেশি গবেষণা ও উদ্ভাবিত প্রযুক্তি সম্প্রসারণ। সেলক্ষ্যে বিএসআরআই কাজ করে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে আখের ৪৮টি জাত উদ্ভাবন করেছে। এর মধ্যে চিবিয়ে খাওয়া ও রস পান উপযোগী তিনটি, বন্যা সহিষ্ণু নয়টি, জলাবদ্ধতা সহিষ্ণু ১০টি, খরা সহিষ্ণু সাতটি, লবণাক্ততা সহিষ্ণু ছয়টি উল্লেখযোগ্য।
আখের সঙ্গে সাথী ফসল হিসেবে আলু, পেঁয়াজ, রসুন, ফুলকপি, বাঁধাকপি, ডাল, মশলা প্রভৃতি ফসল চাষের প্রযুক্তিও উদ্ভাবন করেছে সংস্থাটি।
বিএসআরআইর মহাপরিচালক ড. আমজাদ হোসেন জানান, যেসব স্থানে অন্যান্য ফসল কম চাষ হয় সেখানে চাষের উপযোগী জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও সম্প্রসারণে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। খরাপীড়িত, বন্যাপ্রবণ, জলাবদ্ধতা, চর, হাওর, লবণাক্ত ও পাহাড়ি এলাকায় আখ চাষে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০০২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৩, ২০২১
আরএ