ঢাকা, রবিবার, ২৫ মাঘ ১৪৩১, ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

‘কর্মচারীদের বেতন দিতে না পারলে মেয়রদের বিদেশ ভ্রমণ বন্ধ’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৪, ২০২১
‘কর্মচারীদের বেতন দিতে না পারলে মেয়রদের বিদেশ ভ্রমণ বন্ধ’ বক্তব্য রাখছেন এলজিইডি মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম

ঢাকা: স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিইডি) মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, পৌরসভাগুলো যখন তৈরি হয় তখন বলা হয়, নিজেদের টাকা দিয়ে চলতে হবে। কিন্তু অনেক পৌরসভাই তাদের কর্মচারী-কর্মকর্তাদের বেতন দিতে পারে না।

তাই এসব পৌরসভার মেয়রদের বিদেশ ভ্রমণ বন্ধ করে দিয়েছি।

শনিবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এলজিইডি ভবনে স্থানীয় সরকার বিভাগের উদ্যোগে বাস্তবায়নাধীন বিভিন্ন প্রকল্পের ব্যবস্থাপনা ও জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল বাস্তবায়ন বিষয়ক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এমন কথা বলেন।

এ সময় পরিকল্পনা এবং পর্যাপ্ত যাচাই-বাছাই করে উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করতে এলজিইডিসহ স্থানীয় সরকার বিভাগের অধীন সব প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলীদের নির্দেশ দেন মন্ত্রী।

মো. তাজুল ইসলাম বলেন, এর আগে বিদেশ ভ্রমণের অনুমতি নিতে চারজন মেয়র আমার কাছে এসেছিলেন। আমি খোঁজ নিয়ে দেখলাম তাদের পৌরসভার কর্মচারী-কর্মকর্তাদের বেতন পরিশোধ নেই। সে কারণে ওই চার মেয়রের বিদেশ ভ্রমণ বন্ধ করে দিয়েছি।  

মন্ত্রী বলেন, অপরিকল্পিতভাবে প্রকল্প নিয়ে অবকাঠামোসহ যে কোনো উন্নয়ন কাজ করলে তা যেমন টেকসই হয় না, তেমনি উন্নয়নের সুফলও মানুষের কাছে পৌঁছানো যায় না। বরং কুফল বয়ে আনে। তাই সব উন্নয়ন প্রকল্প নেওয়ার আগে তার ফিজিবিলিটি স্টাডি করতে হবে।

ফিজিবিলিটি স্টাডির গুরুত্ব তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, ইনভায়রনমেন্টাল, জিওলজিক্যাল, হাইড্রোলোজিক্যাল, সোশ্যাল ইমপ্যাক্ট, ডেমোগ্রাফিক সাইজ এবং ইকোনমিক আউটপুট বিবেচনায় নিয়ে প্রকল্প নিতে হবে। এসব বিষয়ে স্ট্যাডি না করে প্রকল্প নেওয়া যাবে না, নিলে সুফল মেলবে না।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গৃহীত প্রকল্পগুলো যদি উৎপাদনশীল, ইনকাম জেনারেটিং, টেকসই এবং সময়মত শেষ না হয় তাহলে কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছানো অসম্ভব হবে।

প্রকল্পের ডিজাইনে কোনো ত্রুটি রাখা যাবে না উল্লেখ করে মন্ত্রী আরও বলেন, গ্রামীণ, ইউনিয়ন ও উপজেলার রাস্তার ডিজাইনে পরিবর্তন আনা হয়েছে। নেভিগেশন সুযোগ রেখে ব্রিজ নির্মাণ করে নৌ পথগুলো চালু করার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

কাজের গুণগত মান নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি জানান, নিম্নমানের কাজের সঙ্গে জড়িত থাকলে অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে। বিভিন্ন ভাটায় ইট তৈরি করা হচ্ছে, কিন্তু সেগুলোর গুণগতমান পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে না। ফলে এসব ইট দিয়ে রাস্তা পাকা করায় তা টেকসই হচ্ছে না। তাই বিষয়টি আমলে নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন মন্ত্রী।

এলজিইডির সব রাস্তা আইডিভুক্ত করার পর নির্মাণ কাজ করা হচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভাসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের রাস্তা আইডিভুক্ত করা নেই। এ কারণে এসব প্রতিষ্ঠানের সব রাস্তা আইডিভুক্ত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আইডি নম্বর অনুযায়ী বরাদ্দ দেওয়া হলে সুষ্ঠুভাবে রাস্তা নির্মাণ এবং সংস্কার কাজ সম্পন্ন হবে। এ ক্ষেত্রে এক রাস্তায় দুই প্রতিষ্ঠান অথবা দুইবার, তিনবার কাজ করার কোনো সুযোগ থাকবে না।

মো. তাজুল ইসলাম বলেন, শহরের সব সুযোগ-সুবিধা প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে পৌঁছে দিতে সরকার ‘আমার গ্রাম আমার শহর’ দর্শন বাস্তবায়ন করছে। এই দর্শন বাস্তবায়নে জনপ্রতিনিধিসহ সব শ্রেণি পেশার মানুষকে সম্পৃক্ত করতে হবে। আর এই কাজ করলে ২০৪১ সালের আগেই জাতির পিতার স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ গড়ে ওঠবে।

স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এবং পরিকল্পনা বিভাগের সচিব মোহাম্মদ জয়নুল বারী।

এছাড়া এলজিইডি, ডিপিএইচই, সব সিটি কর্পোরেশন ও ওয়াসাসহ স্থানীয় সরকার বিভাগের অধীন প্রতিষ্ঠানের প্রধান/প্রতিনিধি এবং চলমান প্রকল্পগুলোর প্রকল্প পরিচালকরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৪, ২০২১
এমআইএস/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ