ঢাকা, বুধবার, ২৪ পৌষ ১৪৩১, ০৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০৭ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

দশানীর ভাঙনে অস্তিত্ব সংকটে আইরমারী খান গ্রাম

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০০৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৭, ২০২১
দশানীর ভাঙনে অস্তিত্ব সংকটে আইরমারী খান গ্রাম

জামালপুর: জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলায় নদী ভাঙন রোধে ব্যাম্বো ব্যান্ডেলিং প্রকল্পের কাজ করলেও দশানী নদীর ভাঙন রোধ করা যায়নি। প্রকল্পের কাজে অনিয়ম এবং সরকারি অর্থ নয়-ছয় হওয়ার খবর প্রকাশিত হলেও কর্তৃপক্ষ কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়নি।

এতে মানচিত্র থেকে মুছে যাচ্ছে সাধুরপাড়া ইউনিয়নের আইরমারী খান গ্রাম।

গত পাঁচ বছরে প্রায় ৫ শতাধিক বসত ভিটা ফসলের মাঠ, বিভিন্ন স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। সচেতন মহলের ধারণা, বর্ষার আগেই কাজ সম্পন্ন করলে কিছুটা ফলপ্রসু হতো।

বকশীগঞ্জ উপজেলার সাধুরপাড়া ইউনিয়নের আইরমারী খান গ্রামের বুক চিরে বয়ে গেছে দশানী নদী। নদীর কড়াল গ্রাসে প্রতি বছরই নদী ভাঙনের স্বীকার হয় গ্রামটি। শুধু খানপাড়া গ্রাম নয় পাশ্ববর্তী আইরমারী, খেওয়ারচর গ্রামের নদী ভাঙন শুরু হয়েছে।

আইরমারী খানপাড়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা একেএম আসাদুজ্জামান খান খোকা বাংলানিউজকে জানান, এ পর্যন্ত আমার বাড়ি-ঘর ৪ বার নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এবারও দশানীর পেটে গেছে আমার ভিটে মাটি। আমি এখন বাড়ি-ঘর অন্যত্র সরিয়ে নুতন ঠিকানা খুঁজে বেড়াচ্ছি।

স্থানীয়দের দাবি ভাঙন অব্যাহত থাকলে আগামি দুই বছরের মধ্যে খানপাড়া গ্রাম বলে কোনো কিছু থাকবে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডে দশানী নদী ভাঙন রোধে ৩০০ মিটার জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। নিম্নমানের কাজে কারণে কোনো সুফল আসছে না।

এদিকে বছরের পর বছর নদী ভাঙনের শিকার খানপাড়া গ্রামের রেজাউল করিম, শান্তি বেগম, আফসার আলী, কালু মিয়া, জিয়াউল খানের মত আরো অনেকেই বাংলানিউজকে জানান, সরকারের পক্ষ থেকে ভাঙন রোধে স্থায়ী টেকসই কার্যকর কোনো পদক্ষেপ না নেওয়া হলে কয়েকশত পরিবার বসত ভিটা হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যাবে। দ্রুত সময়ের মধ্যে আইরমারী খান পাড়া হয়ে জব্বারগঞ্জ বাজার পর্যন্ত উঁচু বাঁধ নির্মাণ করা না গেলে অচিরেই গ্রামটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। ভাঙন রোধে পদক্ষেপ নিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।

এ বিষয়ে বকশীগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মেহেদী হাসান টিটু জানান, আইরমারী খানপাড়া গ্রামসহ ব্রহ্মপুত্র নদ ও দশানীর তীরবর্তী আরও কয়েকটি গ্রামে নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। এ পর্যন্ত প্রায় ২২০টি বসত ভিটা ও বাড়ি-ঘর নদীতে সম্পূর্ণ বিলীন ও আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইতোমধ্যে ইউনিয়ন পরিষদে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতা করা হবে।

জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবু সাঈদ বাংলানিউজকে জানান, আইরমারী খান পাড়া গ্রামের নদী ভাঙনের বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। নদী ভাঙন রোধে যে পরিমাণ জিও ব্যাগ ফেলা দরকার ছিলো তা ফেলা সম্ভব হয়নি।

বাংলাদেশ সময়: ২৩৫৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৬, ২০২১
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।