ঢাকা, শনিবার, ২৫ মাঘ ১৪৩১, ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

কম্বলচাপা দিয়ে বৃদ্ধ শ্বশুর-শাশুড়িকে খুন করে পুত্রবধূ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৭, ২০২১
কম্বলচাপা দিয়ে বৃদ্ধ শ্বশুর-শাশুড়িকে খুন করে পুত্রবধূ গ্রেফতাররা।

কুমিল্লা: পারিবারিক কলহের জেরে পূর্ব পরিকল্পনা মতো দুই সহযোগীকে সঙ্গে নিয়ে বৃদ্ধ শ্বশুর এবং শাশুড়িকে কম্বলচাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন তাদের পুত্রবধূ শিউলি (২৫)।  

গত রোববার (৫ সেপ্টেম্বর) মধ্যরাতে কুমিল্লার সুবর্ণপুরে সংঘটিত চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ।

 

গ্রেফতার করা হয়েছে হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী নাজমুন নাহার চৌধুরী ওরফে শিউলি ও তার দুই সহযোগী জহিরুল ইসলাম সানি (১৯) এবং মেহেদী হাসান তুহিনকে (১৮)।  

পুলিশ বলছে, দীর্ঘদিন ধরে নানা বিষয় নিয়ে শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গে মতবিরোধ চলছিল শিউলির। তার স্বামী সৈয়দ আমান উল্লাহ ওমান প্রবাসী। কিন্তু পারিবারিক এসব বিরোধে স্বামীকে পাশে পাচ্ছিলেন না শিউলি। এর জেরে রাগে-ক্ষোভে খালাতো ভাই সানি ও তার বন্ধু তুহিনকে সঙ্গে নিয়ে হত্যার পরিকল্পনা করেন শিউলি। খুন করা হয় শ্বশুর সুবর্ণপুর গ্রামের পল্লী চিকিৎসক সৈয়দ বিল্লাল হোসেন (৭৫) ও তার স্ত্রী সফুরা খাতুনকে (৫৫)।  

মঙ্গলবার (৭ সেপ্টেম্বর) জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) কাজী মো. আবদুর রহিম।  

এসময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) তানভীর আহমেদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সোহান সরকার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) আফজাল হোসেন, রাজন কুমার দাস, ডিআইও ওয়ান মনির আহমেদ, গোয়েন্দা পুলিশের ওসি সত্যজিৎ বড়ুয়াসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, পারিবারিক কলহের জেরে পুত্রবধূ শিউলি দীর্ঘদিন ধরে তার শ্বশুর-শাশুড়িকে হত্যার পরিকল্পনা করে আসছিল। ঘটনার দিন (৫ সেপ্টেম্বর) রাতে শিউলি কুমিল্লা শহরে বসবাসরত তার খালাতো ভাই জহিরুল ইসলাম সানি ও তার বন্ধু তুহিনকে কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে তাদের বাড়িতে আসতে বলে। কিন্তু তারা কেবল দুজনই শিউলির শ্বশুরবাড়িতে যায়। তারা ঘরে ঢোকার কিছুক্ষণের মধ্যেই শিউলি তার ওড়না দিয়ে শাশুড়ি সফুরা বেগমকে পেছন থেকে মুখ চেপে ধরে। তখন বাকি দুজন বৃদ্ধ সফুরার হাত পা বেঁধে ফেললে শিউলি কম্বল চেপে শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করে। এসময় শিউলির শ্বশুর পল্লী চিকিৎসক সৈয়দ বিল্লাল হোসেন ঘরের বাইরে ছিলেন। একটু পরে তিনি ঘরে ঢুকলে তাকেও একই কায়দায় হত্যা করা হয়।

চাঞ্চল্যকর এ জোড়া খুনের পরপরই পুলিশ সন্দেহভাজন হিসেবে শিউলিকে আটক করে। পরে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের পর হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে মুখ খোলে সে। তার দেওয়া তথ্য মতে হত্যায় আরো দুজনের জড়িত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হয় পুলিশ। পরে জেলা পুলিশ ও ডিবির যৌথ অভিযানে কুমিল্লা শহরের দক্ষিণ চর্থা এলাকা থেকে জহিরুল ইসলাম সানিকে এবং বরম্নড়া উপজেলার আড্ডা বাজার এলাকা থেকে মেহেদী হাসান তুহিনকে গ্রেফতার করা হয়।  

গ্রেফতার সানি কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার কোদালিয়া গ্রামের আবদুর রহিম মজুমদারের ছেলে এবং তুহিন কুমিল্লার লালমাই উপজেলার দক্ষিণ জয় কামতা গ্রামের শাহাবুদ্দিনের ছেলে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

বাংলাদেশ সময়: ১২২৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৭, ২০২১
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।