ঢাকা, শুক্রবার, ২৪ মাঘ ১৪৩১, ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

নববধূকে অচেতন করে ধর্ষণ, পাশে ঝুলছিলো স্বামীর মরদেহ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১২, ২০২১
নববধূকে অচেতন করে ধর্ষণ, পাশে ঝুলছিলো স্বামীর মরদেহ


কুমিল্লা: কুমিল্লায় নববধূকে নেশাজাত দ্রব্য খাইয়ে ধর্ষণ করা হয়েছে। এ ঘটনার পর রাতে স্বামীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

গত বৃহস্পতিবার (৯ সেপ্টেম্বর) মধ্যরাতে নাঙ্গলকোটের কাশিপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকালে ভুক্তভোগী নববধূ থানায় ধর্ষণ মামলা করেছেন। আর পুলিশ করেছে অপমৃত্যুর মামলা। ফেসবুকে নাঙ্গলকোটের স্থানীয়দের সরব প্রতিবাদের কারণে বিষয়টি রোববার (১২ সেপ্টেম্বর) সবার নজরে আসে।

স্থানীয়রা জানান, লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার চরবাকলা গ্রামের আরিফ হোসেন (২০) কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার জোড্ডা বাজারের মুক্তা হোটেলে বয়ের কাজ করতেন। সেখানে তিনমাস কাজ করার পর ২৫ দিন আগে নানা কারণ দেখিয়ে চাকরিচ্যুত করেন দোকান মালিক আবদুল হক।

তারা আরও জানান, ওই দোকানে কাজ করা অবস্থায় আরিফ মুন্সীগঞ্জের এক মেয়ের (১৬) সঙ্গে মোবাইল ফোনে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান এবং গত এক সপ্তাহ আগে তারা পালিয়ে বিয়ে করেন। গত বুধবার রাতে (৮ সেপ্টেম্বর) তারা আবদুল হকের ছেলে লিটন (২৩) ও স্থানীয় বাবুল মিয়ার ছেলে সিএনজি অটোরিকশাচালক সালাহউদ্দিনের (২৫) সহায়তায় কাশিপুরের আজগর মিয়ার একটি পরিত্যক্ত ঘর ভাড়া নেন। লিটন ও সালাউদ্দিনকে আগে থেকেই চিনতেন আরিফ।

এরপর বৃহস্পতিবার রাতে স্বামী-স্ত্রী ঘুমিয়ে পড়লে তাদের ঘরে ঢোকে লিটন ও সালাউদ্দিন। এ সময় আরিফের স্ত্রীকে নেশাজাতীয় দ্রব্য খাইয়ে অচেতন করে ধর্ষণ করে লিটন। সালাউদ্দিন সে ঘটনা ভিডিও করে। এ সময়ে আরিফের ঘুম ভেঙে গেলে সালাউদ্দিন ও লিটন পালিয়ে যায়। আর অসংলগ্ন অবস্থায় স্ত্রী ঘুমিয়ে পড়ে। রাত সাড়ে ১২টার দিকে সালাউদ্দিন বাড়ির মালিক আজগর ভূঁইয়াকে ডেকে বলেন, ওদের স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া হচ্ছে। কিন্তু আজগর ভূঁইয়া ঘরের সামনে গিয়ে নিরবতা লক্ষ্য করেন। পরে দরজা খুলে দেখেন ঘরের সিলিংয়ের সঙ্গে আরিফের মরদেহ ঝুলছে।

এদিকে স্থানীয়দের দাবি, স্ত্রীকে ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দিতে স্বামী আরিফকে হত্যা করে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে ওই দুইজন ছাড়াও একাধিক ব্যক্তি জড়িত থাকতে পারে। তারা সবাই মাদকসেবী।

নাঙ্গলকোট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আ স ম আবদুন নূর বলেন, ধর্ষণের ঘটনায় স্ত্রী বাদি হয়ে দু’জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। ধর্ষণের সময় ধারণকৃত ভিডিও উদ্ধার করা হয়েছে। ভিডিও বিশ্লেষণ ও সরেজমিন তদন্তের মাধ্যমে আপাতত মনে হচ্ছে, লজ্জা সইতে না পেরে অপমানে আত্মহত্যা করেছে আরিফ। এ ঘটনায় লিটনকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। অপর আসামি সালাউদ্দিন পলাতক।

তিনি আরও জানান, ভিকটিমকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ (কুমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সেখানে চিকিৎসাধীন আছেন তিনি। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে আরিফের মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।

বাংলাদেশ সময়: ২১৫১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১২, ২০২১
এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।