বাগেরহাট: বাগেরহাটের শরণখোলায় নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে এক নারীসহ পাঁচ জনকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা পর্যন্ত শরণখোলা উপজেলার চারটি ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ডে বিজয়ী ও পরাজিত ইউপি সদস্যের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষে ঘটনা ঘটে। উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়নে পরাজিত প্রার্থীর কর্মীদের দোকান ভাঙচুরেরও অভিযোগ করেছেন তিন প্রার্থী।
এছাড়াও রামপাল ও মোরেলগঞ্জে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় অন্তত ১০ জন আহতের খবর পাওয়া গেছে। প্রতিপক্ষের ওপর হামলা ও হুমকির অভিযোগে মোরেলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের (বাদুরতলা) নবনির্বাচিত সদস্য মো. শাহিন আজাদকে আটক করেছে পুলিশ।
সাউথখালী ইউনিয়নের ৮ নম্বর চালিতাবুনিয়া ওয়ার্ডের বিজয়ী প্রার্থী জাহাঙ্গীর খলিফা জানান, ফলাফল ঘোষণার পর রাতে যে যার বাড়ি যাচ্ছিল। পথে পরাজিত প্রার্থী জাফর তালুকদারের কর্মীরা তার কর্মীদের ওপর হামলা চালায়। এতে ছয়জন আহত হয়। এদের মধ্যে গুরুতর আহত সাইফুল ইসলাম রুবেল (৪১) ও মনির খানকে (৩৫) খুলনা মেডিক্যালে পাঠানো হয়েছে। বাকিরা শরণখোলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
অভিযোগ অস্বীকার করে জাফর তালুকদার বলেন, মেম্বার জাহাঙ্গীর খলিফার লোকজনরাই আমার ছয়/সাতজন কর্মীকে মেরে আহত করেছে। সুলতান হাওলাদারের হাত ভেঙে গেছে। কিন্তু তাদের ভয়ে হাসপাতালে নিতে পারছি না। চালিতাবুনিয়া বাজারে আমার তিন কর্মীর দোকানও ভাঙচুর করেছে তারা।
সাত নম্বর বগী ওয়ার্ডের পরাজিত প্রার্থী হানিফ মুন্সির অভিযোগ, বিজয়ী মেম্বার রিয়াদুল পঞ্চায়েত ও তার কর্মীদের ভয়ে তার কর্মীরা একপ্রকার ঘরবন্দি হয়ে পড়েছে। তাদের হামলায় আলী আজগর (৪৮) আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তার কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তার কর্মী আবু সালেহ’র মাছের আড়ত ভাঙচুর করেছে রিয়াদুলের লোকেরা।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে রিয়াদুল পঞ্চায়েতের ফোন বন্ধ থাকায় কথা বলা যায়নি।
দুই নম্বর বকুলতলা ওয়ার্ডের পরাজিত প্রার্থী মো. শহিদুল ইসলাম খান জানান, বিজয়ী দেলোয়ার হোসেন খলিলের লোকেরা তার তিন কর্মীকে মেরে আহত করেছে। এর মধ্যে রাজু মৃধাকে (২৪) খুলনা মেডিক্যালে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া, তিন কর্মীর দোকান ভাঙচুর করেছে তারা।
দোকানপাট ভাঙচুরের অভিযোগ সঠিক নয় দাবি করে মেম্বার দেলোয়ার হোসেন খলিল বলেন, দুই পক্ষের কর্মীদের মধ্যে একটু ঝামেলা হয়েছে। পরবর্তীতে এ ধরনের ঘটনা যাতে না ঘরে সে ব্যাপারে আমার কর্মীদের সতর্ক করা হয়েছে।
শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইদুর রহমান জানান, নির্বাচন পরবর্তী টুকটাক সংঘর্ষের খবর শোনা গেছে। এখন পর্যন্ত থানায় কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। সাউথখালী ইউনিয়নের কয়েকটি এলাকা একটু ঝুঁকিপূর্ণ মনে হওয়ায় সেখানে পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২১, ২০২১
আরএ