নিউইয়র্ক থেকে: বিদ্যমান জ্বালানি, ব্যাংকিং এবং ইনস্যুরেন্স খাতের পাশাপাশি সম্ভাবনাময় বিভিন্ন সেক্টরে বিনিয়োগ করতে মার্কিন উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় বিকেলে লোটে নিউইয়র্ক প্যালেস হোটেলে ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের এক্সিকিউটিভ বিজনেস গোলটেবিল (ভার্চ্যুয়াল) আলোচনায় এ আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, সম্ভাবনাময় বিভিন্ন খাতের পাশাপাশি আইসিটি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, জাহাজ নির্মাণ, অটোমোবাইল, হালকা প্রকৌশল, অ্যাগ্রো-প্রোসেসিং (কৃষিজাত পণ্য প্রক্রিয়াকরণ), সমুদ্র অর্থনীতি, পর্যটন, জ্ঞানভিত্তিক হাই-টেক শিল্পের মতো লাভজনক খাতে বিনিয়োগের জন্য মার্কিন বিনিয়োগকারীদের আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।
বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশেরই সবচেয়ে মুক্ত বিনিয়োগনীতি রয়েছে। যার ফলে বিদেশি বিনিয়োগ সুরক্ষিত থাকবে। বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ পার্লামেন্টের আইন ও দ্বিপক্ষীয় চুক্তি দ্বারা সুরক্ষিত।
শেখ হাসিনা বলেন, বিনিয়োগকারীরা যেন প্রতিযোগিতামূলক মজুরিতেই দক্ষ জনসম্পদ পেতে পারেন, সেজন্য আমরা জনশক্তিকে দক্ষ করার প্রতি গুরুত্ব দিচ্ছি। সম্ভাবনাময় খাতে এফডিআই সুবিধা দিতে বাংলাদেশ অবকাঠামো ও বিদ্যুৎ সরবারাহে উন্নয়ন ঘটাতে ব্যাপক বিনিয়োগ করেছে।
বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধুত্ব অভিন্ন মূল্যবোধ ও স্বার্থের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সার্বিক ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধিতে আমাদের এই পারস্পারিক সম্পর্কের প্রতিফলন ঘটেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের একটি শুধু আমেরিকান কোম্পানিগুলোকে দেওয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশের ২৮টি হাই-টেক পার্কে মার্কিন বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, আমরা অব্যাহতভাবে আমাদের অবকাঠোমো, আইনি ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর উন্নয়ন ঘটাচ্ছি। এছাড়া পদ্মা সেতু ও ঢাকা মেট্রোরেলের মতো বিভিন্ন সড়ক ও রেল যোগাযোগও বৃদ্ধি করছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি খাত সহযোগিতা ও বিনিয়োগের স্বীকৃতি দিচ্ছে- এই সাহায্যের ফলেই আমাদের বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা এখন ২৫ হাজার মেগাওয়াটের বেশি। এখন আমরা নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে মার্কিন বিনিয়োগ কামনা করছি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের দ্রুত-বর্ধনশীল আইসিটি খাত এখন ৬০টি দেশে এক বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানি করছে। যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের আইসিটি পণ্য সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হয়। ২০২৫ সাল নাগাদ বাংলাদেশের আইসিটি শিল্প পাঁচ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে। ছয় লক্ষাধিক ফ্রি-ল্যান্স আইটি প্রফেশনালদের কারণে বাংলাদেশ এখন আইসিটি খাতে বিনিয়োগের জন্য আদর্শ স্থান।
ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের সদস্য এবং ইউএস অ্যান্ড বাংলাদেশ বিজনেস ওয়ার্ল্ডের নেতারা এই গোলটেবিলে অংশ নেন।
প্রধানমন্ত্রী এই গুরুত্বপূর্ণ আয়োজনের জন্য ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল ও এর সভাপতি নিশা বিসওয়ালকে ধন্যবাদ জানান।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২২, ২০২১
এমইউএম/এমআরএ