জামালপুর: যৌতুকের দাবিতে ঘুমন্ত অবস্থায় স্ত্রী শরীরে গরম তেল ঢেলে দিয়েছেন পাষণ্ড স্বামী সেজনু মিয়া। বর্তমানে ওই গৃহবধূ সরিষাবাড়ী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন।
এদিকে জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দগ্ধ গৃহবধূ মোছা. স্বর্ণা বেগমকে (৩৫) মুমূর্ষু অবস্থায় ফেলে রেখে পালিয়ে গেছে নির্যাতনকারী স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন।
শুক্রবার (২৪ সেপ্টেম্বর) মধ্যরাতে ঢাকার সাভার উপজেলার জিরানী এলাকার ভাড়া বাসায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানায়, সরিষাবাড়ী উপজেলার পিংনা ইউনিয়নের পিংনা বাজার এলাকার চাঁন মিয়ার ছেলে সেজনু মিয়ার সঙ্গে পার্শ্ববর্তী কাজীপুর উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের চাঁন মিয়ার মেয়ে স্বর্ণা বেগমের ১৫ বছর আগে বিয়ে করে। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্য স্বর্ণাকে নির্যাতন করে আসছিল তার স্বামী। এ ব্যাপারে ইতোপূর্বে আদালতে মামলাও হয়েছিল। পরবর্তীকালে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মধ্যস্থতায় বিষয়টি আপস-মীমাংসা করে তাকে স্বামীর কাছে পাঠানো হয়েছিল।
স্বর্ণা বেগমের মা শিরিনা বেগম জানান, মেয়েকে জামাইয়ের কাছে পাঠানোর পর পুনরায় নির্যাতন শুরু হয়। স্বর্ণা বাধ্য হয়ে জিরানী গিয়ে গার্মেন্টে চাকরি নেন। মেয়ের ঠিকানা সংগ্রহ করে শুক্রবার সেজনু সেখানে যায়। তারপর ঘুমন্ত অবস্থায় তার শরীরে গরম তেল ঢেলে দেয়। এ ঘটনার পর সেজনু রাতেই তাকে জিরানী থেকে বাড়িতে নিয়ে আসে। শনিবার সকালে তাকে সরিষাবাড়ী হাসপাতালে নেয়। তারপর ফেলে রেখে পালিয়ে যায় স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. ফাহমিদা জামান তিথী জানান, ঝলসে যাওয়া নারী স্বর্ণাকে আমরা প্রাথমিকভাবে চিকিৎসা দেই। তেলের ছ্যাঁকায় তার শরীরের ৬০ ভাগ ঝলসে গেছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর রকিবুল হক বলেন, এ ব্যাপারে এখনো কেউ কোনো অভিযোগ নিয়ে থানায় আসেনি।
বাংলাদেশ সময়: ২০২৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২১
আরএ