ঢাকা, বুধবার, ২২ মাঘ ১৪৩১, ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৫ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

ট্রেনের ছাদে দু'জনকে হত্যাকারীরা পেশাদার ডাকাত

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২১
ট্রেনের ছাদে দু'জনকে হত্যাকারীরা পেশাদার ডাকাত

ময়মনসিংহ: ট্রেনের ছাদে ছিনতাই ও দুই হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে আটক পাঁচজন মূলত পেশাদার ছিনতাইকারী। তারা সুযোগ বুঝে ডাকাতিও করতেন বলে জানিয়েছেন র‍্যাব-১৪ এর অধিনায়ক উইং কমান্ডার মো. রোকনুজ্জামান।

 

তিনি জানান, আটক ব্যক্তিরা সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্য। তারা ট্রেনের পেশাদার ছিনতাইকারী। ছোট ছোট গ্রুপে বিভক্ত হয়ে তারা ছিনতাই করতেন। সুযোগ বুঝে কখনো কখনো করতেন ডাকাতিও।  

রোববার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)-১৪ এর প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব তথ‍্য নিশ্চিত করেন।  

আটক ব্যক্তিরা হলেন-ময়মনসিংহের শিকারিকান্দা এলাকার আশারাফুল ইসলাম স্বাধীন (২৬), বাঘমারা এলাকার মাকসুদুল হক রিশাদ (২৮), মো. হাসান (২২), রুবেল মিয়া (৩১) ও মোহাম্মদ (২৫)।

শনিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দিনগত রাত ১টার দিকে প্রথমে স্বাধীনকে আটক করা হয়। এরপর চেইন অপারেশন চালিয়ে অন্যদের আটক করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে ছিনতাই করা ১২টি মোবাইল ফোন সেট ও ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয় বলেও প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়।  

উইং কমান্ডার মো. রোকনুজ্জামান আরও বলেন, এ চক্রটি নিয়মিত ট্রেনে ছিনতাই ও ডাকাতি করে আসছে। তারা ঢাকার কমলাপুর, এয়ারপোর্ট ও টঙ্গী রেলস্টেশন থেকে ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের উদ্দেশে ট্রেনে উঠতেন এবং তাদের কিছু সহযোগী গফরগাঁও ফাতেমা নগর স্টেশন থেকে ট্রেনে উঠে সম্মিলিতভাবে ডাকাতি ও ছিনতাই করে ময়মনসিংহ স্টেশনে নেমে যেতেন।  

র‍্যাব আরও জানায়, এ চক্রটি প্রথমে টার্গেট ফিক্সড করে কয়েকটি দলে বিভক্ত হয়ে কেউ নিরাপত্তা দিতেন, কেউ লুণ্ঠিত মালপত্র সংগ্রহ করে বিক্রি করতেন আর বাকিরা সরাসরি ডাকাতিতে সম্পৃক্ত থাকতেন।  

গত বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাতে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা জামালপুরগামী কমিউটার ট্রেনের ছাদে এ চক্রের সদস্যরা ডাকাতির পরিকল্পনা করেন বলেও জানান র‍্যাবের উইং কমান্ডার মো. রোকনুজ্জামান।

তিনি বলেন, ট্রেনে ডাকাতির উদ্দেশ্যে কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে চারজন পেশাদার ডাকাত দেওয়ানগঞ্জগামী কমিউটার ট্রেনে ওঠেন। রিশাদ, হাসান এবং স্বাধীন টঙ্গী স্টেশন থেকে তাদের সাথে যুক্ত হন। পরে ট্রেনটি ফাতেমা নগর স্টেশনে থামলে তাদের সঙ্গে যোগ দেন মোহাম্মদ ও তার একজন সহযোগী। ট্রেন স্টেশন ছেড়ে চলতে শুরু করলে তারা ইঞ্জিনের পরের বগির ছাদে বসে থাকা যাত্রীদের মানিব্যাগ ও মোবাইল ফোন লুট করতে শুরু করেন।

পরে ডাকাতির একপর্যায়ে সাগর মিয়া ও নাহিদ বাধা দিলে তাদের সঙ্গে ডাকাতদের ধস্তাধস্তি শুরু হয়। এ সময় ডাকাতরা তাদের হাতে থাকা অস্ত্র দিয়ে মাথায় এলোপাতাড়ি আঘাত করেন। এতে সাগর ও নাহিদ আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে ট্রেনের ছাদে লুটিয়ে পড়েন এবং তাদের মৃত্যু হয়। তখন ডাকাতরা ময়মনসিংহ রেলওয়ে স্টেশনে ঢোকার আগেই সিগন্যালে ট্রেনের গতি কমলে ট্রেন থেকে তারা নেমে যান।  

র‍্যাব-১৪ এর অধিনায়ক বলেন, ওই ঘটনায় গ্রেফতারকৃত রিশাদ, স্বাধীন, মোহাম্মদ ছাড়াও অজ্ঞাত কয়েকজন সরাসরি ডাকাতিতে সম্পৃক্ত ছিলেন। আর টার্গেট ঠিক করার দায়িত্বে ছিলেন হাসান। এরপর লুণ্ঠিত ফোন ও অন্যান্য মালপত্র কম দামে এ চক্রের কাছ থেকে সংগ্রহ করতেন এবং অন্যদের কাছে বেশি দামে বিক্রি করতেন রুবেল। পাশাপাশি তিনি চক্রটির পৃষ্ঠপোষকও বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে।  

গ্রেফতারকৃতদের মধ‍্যে রিশাদ এ চক্রের মূল হোতা। তার নামে ময়মনসিংহ রেলওয়ে থানা ও কোতোয়ালি মডেল থানায় মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা রয়েছে। তিনি দুই বছরেরও বেশি সময় কারাগারে ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২১
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।