ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

ইব্রাহিম হত্যা মামলা এখন সিআইডিতে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১০

ঢাকা: আলোচিত আওয়ামী লীগ নেতা ইব্রাহিম হত্যা মামলার তদন্তভার অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) স্থানান্তর করা হয়েছে।

মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার পুলিশ সদরদপ্তর থেকে তদন্তের দায়িত্ব স্থানান্তরের এ নির্দেশ দেওয়া হয়।



ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (দক্ষিণ) উপ-পুলিশ কমিশনার মাহবুবুর রহমান এ হস্তান্তরের বিষয়টি নিশ্চিত করে বাংলানিউজকে বলেন, ‘আজকালের মধ্যেই সিআইডি দপ্তরে মামলার যাবতীয় নথি পাঠিয়ে দেওয়া হবে। ’

মামলার তদন্ত নিয়ে গাফিলতি, পক্ষপাতিত্ব, তদন্তে প্রভাব সৃষ্টিসহ ব্যাপক অভিযোগ ওঠার পর সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের নির্দেশের পরই তা স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত হয়।

মামলাটি সিআইডিতে স্থানান্তরের খবরে নিহতের স্ত্রীসহ পরিবারের সদস্যরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

শনিবার বিকেলে ইব্রাহিমের স্ত্রী রীনা ইসলাম, ফুফাতো ভাই ফুয়াদ হাসানসহ অন্যরা বলেন, আমাদের বিশ্বাস- এখন নিরপেক্ষ তদন্ত হবে।

ইব্রাহিম হত্যা নিয়ে যা ঘটেছে

গত ১৩ আগস্ট জাতীয় সংসদ চত্বরে ভোলা-৩ আসনের সরকার দলীয় সাংসদ নুরুন্নবী চৌধুরীর গাড়িতে তার লাইসেন্স করা পিস্তলের গুলিতে ইব্রাহিম নিহত হন।

সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে কয়েকজন অজ্ঞাত পরিচয় যুবক ইব্রাহিমের মৃতদেহ রেখে পালিয়ে যান। সেদিন রাতেই শাওনের গাড়িচালক কামাল হোসেন কালা বাদী হয়ে শেরেবাংলা নগর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করেন।

মামলায় সাংসদ শাওনের গাড়ির ভেতর পিস্তল নাড়াচাড়া করার সময় দুর্ঘটনাবশত ইব্রাহিম গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়।

ঘটনার দু`দিন পর ১৫ আগস্ট রাজারবাগে এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে ডিএমপি পুলিশ কমিশনার একেএম শহিদুল হক ওই ঘটনাকে নিছক দুর্ঘটনা হিসেবে মন্তব্য করার পর থেকেই বিষয়টি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আসে।

১৮ আগস্ট ইব্রাহিমের ছোট ভাই মাসুম আহমেদ বাদী হয়ে সাংসদ নুরুন্নবী চৌধুরীসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে আদালতে একটি হত্যা মামলা করেন। এরপরই ইব্রাহিম নিহত হওয়ার ঘটনাটি ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ তদন্ত শুরু করে।

এমপি শাওনের গাড়িচালক কামাল হোসেন কালা, এপিএস সোহেল চৌধুরীসহ ৬ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ইব্রাহিমের নিহত হওয়াকে ‘হত্যাকাণ্ড’ হিসেবে উল্লেখ করে ডিবি।

ঘটনার ১৯ দিন পর ডিবি’র পক্ষ থেকে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় ‘ইব্রাহিম হত্যা’ মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলায় কাউকে আসামি হিসেবে উল্লেখ না করলেও শাওনের পিএস সোহেল এবং গাড়িচালক কামাল হোসেন কালাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। রিমান্ডে নিয়ে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়।

তিন দিনের রিমান্ড শেষে আদালতে ইব্রাহিম হত্যাকাণ্ডে জড়িত বলে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন কামাল হোসেন কালা। কঠোর গোপনীয়তায় তার জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়।

তবে শেরেবাংলা নগর থানা পুলিশের মতো মহানগর ডিবি’র তদন্তকারী কর্মকর্তারাও এমপি শাওনের পিস্তল জব্দ, ব্যালাস্টিক পরীক্ষা করা, আলামত হেফাজতে নেওয়া ও শাওনকে জিজ্ঞাসাবাদের ক্ষেত্রে নানা লুকোচুরির আশ্রয় নেয় বলে অভিযোগ ওঠে।

নিহতের স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যরা মামলার তদন্তকারী সংস্থা ডিবির বিরুদ্ধেও তদন্তে অবহেলা এবং পপাতিত্বের অভিযোগ তোলেন।

অনেক বাদ-প্রতিবাদ ও অভিযোগের মুখে গত বুধবার রাতে ডিবি দপ্তরে অত্যন্ত গোপনীয়তা রক্ষা করে এমপি শাওনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দেওয়া হয়।

এ নিয়ে গত বৃহস্পতিবার মহানগর পুলিশ কমিশনার শাওনকে নির্দোষ হিসেবে মন্তব্য করায় ডিবির তদন্ত নিয়ে আবারও অভিযোগ ও পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ ওঠে।

বাংলাদেশ সময় : ১৯৩০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।