ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ওস্তাদের হাত-পা টিপেই গাড়িচালক!

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২১, ২০২১
ওস্তাদের হাত-পা টিপেই গাড়িচালক! ছবি: দেলোয়ার হোসেন বাদল

ঢাকা: দেশে গাড়িচালক তৈরি হয় তার ওস্তাদের হাত-পা টিপতে টিপতে। এছাড়া দেশে চালকদের নিরাপদ কাজের পরিবেশ নেই।

চাকরির কোনো নিশ্চয়তা নেই। তাই ড্রাইভারিং সেক্টরে যদি শিক্ষিত জনগোষ্ঠী না আসে এবং চালকদের পর্যাপ্ত পরিমাণ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা না হয়, তাহলে সড়ক দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্টজনেরা।

বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে ‘সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ক সংলাপ’ অনুষ্ঠানে বক্তরা এসব কথা বলেন। যৌথভাবে এ সংলাপের আয়োজন করে বাংলাদেশ ইনিশিয়েটিভ (বিআই) ও ড্রাইভার্স ট্রেনিং সেন্টার (ডিটিসি)।

সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ক সংলাপের সঞ্চালনা করেন সাংবাদিক পার্থ সারথি দাস। এতে স্বাগত বক্তব্য দেন ডিটিসি চেয়ারম্যান নুর নবী শিমু। আলোচনা করেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. হাদিউজ্জামান, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী, ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান গনি প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, এখন দুর্ঘটনার ধরণ বদলেছে। মুখোমুখি দুর্ঘটনার চেয়ে পেছন থেকে আঘাতের ঘটনা ঘটছে বেশি। এতে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। নভেম্বর-ডিসেম্বর ও জানুয়ারি এই তিন মাসে ২৫ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটে।  

২০১৯ সালে ৩ হাজর ৯৩৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায় ৪ হাজার ৩৫৮ জন, আহত হয় ৭ হাজার ২৪০ জন। এ ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৩৮ হাজার কোটি টাকা।  

২০২০ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ৩২ হাজার ৭৩৮ কোটি টাকা। আর চলতি বছর সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সড়ক দুর্ঘটনার ক্ষতির পরিমাণ ২৯ হাজার ৭৮০ কোটি টাকা।

বক্তারা বলেন, ঢাকাসহ সারা দেশে ২২২ ব্লগস্পট যদি ঠিক করা হয়, তাহলে দুর্ঘটনার ৪০ শতাংশই কমে আসবে। দাবি অনুযায়ী সর্বশেষ মাত্র ১২টি ঠিক করা হয়েছে। সড়ক দুর্ঘটনার জন্য শুধুমাত্র চালকদের দায়ী করলে হবে না। পথচারীও এখানে অনেকাংশে দায়ী। ফুটপাত না থাকলে পথচারীদের ডান পাশ দিয়ে হাঁটতে হবে। এছাড়া বেশ কিছু নির্দেশনা আছে, তা তারা মানেন না। প্রতিদিন চালকদেরকেও একটা লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। মালিকদের দেওয়া এই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে গিয়ে অনেক সময় বেপরোয়া গাড়ি চালাই চালকরা। এ কারণেও দুর্ঘটনা ঘটে।

এ সময় সংলাপে বলা হয়, সড়ক নিরাপদ করতে হলে কমপক্ষে ৬৭ লাখ চালককে প্রশিক্ষণের আওতায় আনতে হবে। সংশ্লিষ্ট সংস্থার অবহেলার কারণে এই করোনাকালেও সড়ক দুর্ঘটনা বাড়ছে। এ অবস্থার পরিবর্তনের জন্য সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থাকে এগিয়ে আসতে হবে এবং এই খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে।

সংলাপে অংশগ্রহণ করেন বিআরটিএ’র সহকারী পরিচালক শহীদুল আজম, উপ-মহাব্যবস্থাপক (পরিচালন) শূকদেব ঢালী, সংগঠনের বাবুল, সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সমাজসেবক জিএম কামরুল ইসলাম, নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের তাসনিয়া মেহরীন ও তানজিদ সৌরভ।  
আরও উপস্থিত ছিলেন ড্রাইভারস ওয়েলফেয়ারের বাদল আহমেদ, মোটর ড্রাইভিং ইন্সট্রাক্টর অ্যাসোসিয়েশনের আবুল বাশারসহ বিভিন্ন প্রশিক্ষক চালকরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২১, ২০২১
এইচএমএস/জেএইচটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।