ঢাকা: জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে চলমান টানা তৃতীয় দিনের পরিবহন ধর্মঘটে জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি ক্রমেই বাড়ছে ভোগান্তি।
এদিন সকাল থেকে রাজধানীর মোহাম্মদপুর, শ্যামলী, কলেজগেট এলাকা ঘুরে পথে পথে মানুষের গন্তব্যে যেতে দীর্ঘ প্রতীক্ষা করতে দেখা গেছে। স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় সড়কে সিএনজিচালিত অটোরিকশা বেশি হলেও গণপরিবহন বন্ধের সুযোগে আদায় করা হচ্ছে কয়েকগুণ বেশি ভাড়া।
দুই-একটি বিআরটিসি বাস চলাচল করতে দেখলেও গাড়িগুলোতে তিল ধারনের ঠাঁই নেই। এর ফলে স্বল্প দূরত্বের গন্তব্যে যেতে ইচ্ছুক অনেককেই এদিন হেঁটে রওনা দিতে দেখা গেছে। এছাড়া মাত্রাতিরিক্ত ভাড়ার কারণে ২-৩ জন মিলে ভাগাভাগি করে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় রওনা দিয়েছেন অনেকে। এমনকি ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলেও গুণতে হচ্ছে দ্বিগুণের বেশি অর্থ।
রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় কথা হয় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মরত শহীদ আহমেদের সঙ্গে। তিনি মিরপুর-১০ নম্বর থেকে ভেঙে ভেঙে রিকশায় এসেছেন, গন্তব্য ধনমন্ডি এলকায় অফিস।
তিনি বলেন, অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকেও কোনো উপায় না করতে পেরে রিকশায় রওনা দেই। তিন দফা রিকশা পাল্টে মোহাম্মদপুর পর্যন্ত এসেছি, এখন আরেক দফা রিকশায় যেতে হবে। সর্বোচ্চ ২০ টাকার বাস ভাড়ার দূরত্বে আমার রিকশা ভাড়া খরচ হলো প্রায় সাড়ে ৪০০ টাকা।
মহাখালী অফিসে যেতে শ্যামলী বাসস্ট্যান্ডে অপেক্ষা করছিলেন মাহমুদ নামে একজন। তিনি বলেন, সিএনজিতে মহাখালী যেতে স্বাভাবিক সময়ে ১০০-১২০ টাকা ভাড়া লাগে। এখন ভাড়া চাচ্ছে ৩০০ টাকা। এই দেশে যে যেভাবে পারে সেভাবে লুটপাট করে নিচ্ছে, আর সবখানেই ভুক্তভোগী আমরা জনগণ। এই তেলের দাম বাড়ল, বাস বন্ধ হলো, এখন কয়েকগুণ বেশি ভাড়ায় অফিস যাচ্ছি, কাল থেকে হয়তো বাড়তি ভাড়া দিয়ে বাসে যাবো। দুর্ভোগই বলেন আর আর্থিক ক্ষতি বলেন, সবই আমাদের।
বাড়তি ভাড়ার কারণ জানতে চাইলে সিএনজিচালক শফিকের সরাসরি জবাব, অনেক যাত্রী রাস্তায়, আপনার পোষাইলে যান, না পোষাইলে না যান।
ইমতিয়াজ নামের একজন বলেন, বেশ কয়েকটি অ্যাপসভিত্তিক রাইড শেয়ারিং সেবা রয়েছে ঢাকায়। চাহিদা বেশি থাকায় সেগুলোতেও বাড়তি দাম দেখাচ্ছে। তবুও অ্যাপসে বাইক পাওয়া যাচ্ছে না। কারণ সবাই চুক্তিতে এর চেয়েও কয়েকগুণ বেশি দামে যেতে পারছে।
রোববার রাজধানীর সব সড়কই সিএনজিচালিত অটোরিকশা, মোটরসাইকেল ও রিকশার দখলে। বাধ্য হয়ে বাড়তি ভাড়াতেই গন্তব্য যাচ্ছেন নগরবাসী, কেউবা হেঁটেই রওনা দিয়েছেন। সবার একটাই প্রশ্ন, এই ভোগান্তির শেষ কোথায়?
আরও পড়ুন:
বাস-ট্রাক-লঞ্চ মালিকদের সঙ্গে বসছে সরকার
বাংলাদেশ সময়: ১২২৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ৭, ২০২১
পিএম/জেএইচটি