ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

কয়লা জ্বালানির অপসারণের দাবি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৪১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০২১
কয়লা জ্বালানির অপসারণের দাবি

ঢাকা: কয়লা ও জীবাশ্ম  জ্বালানির সম্পূর্ণ অপসারণের দাবি জানিয়েছেন সেন্টার ফর পার্টিসিপেটরি রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (সিপিআরডি)।

সোমবার (২৯ নভেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে সেন্টার ফর পার্টিসিপেটরি রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (সিপিআরডি) এবং কোস্ট ফাউন্ডেশন, সিসিডিবি, সিডিপি, ইপসা, মালেয়া ফাউন্ডেশন, এসডিএস, ক্যানসা-বাংলাদেশসহ কয়েকটি বেসরকারি উন্নয়ন সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে ইউএনএফসিসিসি- ২৬তম জলবায়ু সমঝোতা সম্মেলনের (সিওপি-২৬) পরবর্তী পর্যালোচনা ও নাগরিক মতবিনিময় সভায় এ দাবি জানানো হয়।

সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিআরডির প্রধান নির্বাহী মো. শামসুদ্দোহা।

সভায় সভাপতির বক্তব্যে পিকেএসএফ’র সভাপতি ড. কাজী খলিকুজ্জামান আহম্মেদ বলেন, আমাদের নীতি নির্ধারকরা বিভিন্ন আঞ্চলিক সমস্যা এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলের দুর্গত মানুষের সমস্যা গুলো দেখেন না। মাঝে-মধ্যে দেখা যায় তারা কিছু লোকজন পাঠান দুর্গত অঞ্চলে এবং সেখান থেকে কিছু তথ্য সংগ্রহ করার চেষ্টা করেন। এর ফলে তাদের কথাগুলো সাধারণত হৃদয় থেকে আসে না। এজন্য ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের আকাঙ্খাগুলোর বাস্তবায়ন হতেও দেখা যায় কম। তার নেতিবাচক প্রভাবও আমরা জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক নীতিমালায় লক্ষ্য করি।  

জলবায়ু পরির্বতনের নেতিবাচক দিক উল্লেখ করে খলিকুজ্জামান বলেন, এখন পর্যন্ত    বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রা ১ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছে, এজন্যই আমরা দেখছি বহু অঞ্চলে উদ্বাস্তু মানুষের ঢল নেমে যাবার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে আর যদি আমরা বৈশ্বিক তাপমাত্রা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রির মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে না পারি এবং এটিকে ১ দশমিক ৫ এর স্থলে যদি ২ ডিগ্রি ঘোষণা করা হয় তাহলে সেটি অনেক অঞ্চল এবং দেশের জন্য মৃত্যুদণ্ড ঘোষণারই নামান্তর। সব পরিস্থিতি এবং বাস্তবতা বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে এ শতাব্দির শেষে গিয়ে বৈশ্বিক তাপমাত্রা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রির মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা সম্ভব না। কাজেই এখন থেকেই বিশ্ব সম্প্রদায়কে কার্বন নির্গমন কমানোর পাশাপাশি ব্যাপকভাবে অভিযোজন পরিকল্পনা, প্রযুক্তি এবং দক্ষতার দিকে মনোযোগ দিতে হবে।   

বাংলাদেশ পরিবেশ সংবাদিক ফোরামের সভাপতি কামরুল ইসলাম বলেন, আমরা এবারের কপে অংশ নিয়েছিলাম মূলত কয়লার ‘ফ্যাইস আউট’ এর একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা পাবার আসায় কিন্তু ভারত ও চীনসহ কয়েকটি দেশের বাধায় আমরা কয়লার ‘ফ্যাইস ডাইন’ নীতি গ্রহণে বাধ্য করলো, দেশগুলো মূলত তাদের হীন আর্থিক লাভের কথা বিবেচনায় নিয়ে বিশ্বকে একটি বড় বিপদের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।  

তিনি বলেন, আগামীর সিওপিগুলোতে এ ধরনের হটকারী সিদ্ধান্ত মোকাবিলায় সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে।  

কামরুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, আমাদের দেশের নেগোশিয়েটরদের মধ্যে সবজান্তা সাজার একটা প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়, কিন্ত কার্যক্ষেত্রে তাদের সেই পান্ডিত্বের প্রতিফলন দেখি না।

ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালিস্ট ফোরামের সভাপতি কাওসার রহমান বলেন, সিওপি প্রক্রিয়াটিকে আস্তে আস্তে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের হাতিয়ারে রূপান্তরিত করা হচ্ছে। বৈজ্ঞানিক নানান তাগাদা এবং সাজেশন্সকে পাশ কাটিয়ে যাবার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলায় আর্থিক সাহায্য দেওয়ার পরির্বতে সাহায্যের নামে ঋণ দিয়ে এবং ব্যবসায়িক ক্ষেত্র তৈরির পাঁয়তারার বিষয়ে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে সজাক দৃষ্টি রাখার দাবি জানাই।

সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক নিখিল চন্দ্র ভদ্র বলেন, সিওপি-২৬ এ উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষের চাওয়ার যথাযথ প্রতিফলন হয়নি। উপকূলের জন্য আরও সুনিদিষ্ট অভিযোজন পরিকল্পনা নিতে হবে।

তিনি বলেন, এখনই উপকূলীয় বহু অঞ্চলের মানুষকে জোয়ার-ভাটার ওপর নির্ভর করে জীবিকা নির্বাহ করতে হয়, বহুমানুষ জোয়ারের সময় তাদের বাড়ি যেতে পারেন না।

সভায় আরও বক্তব্য রাখেন সাবেক অতিরিক্ত সচিব ড. নুরুল কাদের, সিডিপির নির্বাহী পরিচালক জাহাঙ্গীর হাসান মাসুম, কোস্ট ফাউন্ডেশনের পরিচালক সৈয়দ আমিনুল হক প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ২২৪০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০২১
এমএমআই/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।