ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

কাউন্সিলর হত্যা: রকিকে নির্দোষ দাবি করে সংবাদ সম্মেলন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১২ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০২১
কাউন্সিলর হত্যা: রকিকে নির্দোষ দাবি করে সংবাদ সম্মেলন সংবাদ সম্মেলন রকির পরিবারের। ছবি: বাংলানিউজ

কুমিল্লা: কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের (কুসিক) ১৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সৈয়দ মোহাম্মদ সোহেল (৫০) ও আওয়ামী লীগ কর্মী হরিপদ সাহা (৬০) হত্যা মামলার ৬ নম্বর আসামি মো. আশিকুর রহমান রকিকে নির্দোষ দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তার পরিবারের সদস্যরা।  

মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর) কুমিল্লা নগরীর একটি বাসায় সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন রকির স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস।

এ সময় রকির বাবা আনোয়ার হোসেন, মা রানু বেগমসহ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। তাদের বাসা নগরীর সাহাপাড়া এলাকায়। রকিকে গত শনিবার (২৭ নভেম্বর) লালমনিরহাটের চণ্ডীবাজার থেকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। বর্তমানে তিনি কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন।

বক্তব্যে রকির স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, আমার স্বামী আশিকুর রহমান রকি নগরীর রাজগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী। সেখানে রকি স্টোর নামে তার কসমেটিকস্ দোকান রয়েছে। কাউন্সিলর সৈয়দ মো. সোহেল হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আমরাও শোকাহত। আমরা হত্যাকারীদের কঠোর শাস্তি চাই। কিন্তু আমরা সবাই অবাক হয়েছি, এই হত্যা মামলায় আমার স্বামীকে আসামি করায়। আমার শ্বশুরের পরিবার বা আমার স্বামীর সঙ্গে নিহত সৈয়দ মো. সোহেলের কোনো রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিরোধ নেই। ঘটনার সময় আমার স্বামী তার বাবাসহ রাজগঞ্জ বাজারে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ছিলেন। সেখানকার ব্যবসায়ীরা সবাই তাকে বাজারে দেখেছেন। এছাড়া বাজারের সিসিটিভি ফুটেজ যাচাই করলেই বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে।

তিনি আরও বলেন, আমার স্বামীকে আসামি করায় র‌্যাব তাকে গ্রেফতার করেছে। এই সুযোগে একটি মহল আমাদের এলাকা ছাড়া করেছে। সোমবার (২৯ নভেম্বর) আমাদের ঘর বাড়িতে হামলা করে ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। আমরা এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছি। এ বিষয়ে সোমবার কোতোয়ালি থানায় আমার শাশুড়ি লিখিত অভিযোগ করেছেন। প্রশাসনের কাছে আমার স্বামীর বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করি। আর প্রকৃত হত্যাকারীদের শাস্তি চাই।

রকির বাবা আনোয়ার হোসেন বলেন, আমরা গত চার বছর ধরে ব্যবসা করি। বাজারের শত শত মানুষ দেখেছে ঘটনার দিন এবং ঘটনার পরদিনও রকি বাজারে দোকানে ছিল। মামলার খবর শুনে সে ভয়ে লালমনিরহাটে পালিয়ে যায়। শুধুমাত্র আমাদের হয়রানি করার জন্যই তাকে মামলায় আসামি করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলাও নেই। রকি আমার একমাত্র ছেলে, আমি তার মুক্তি চাই।

রকির মা রানু বেগম বলেন, কাউন্সিলর সোহেল আমাদের পরিবারকে খুব মায়া করতেন। আমরাও তাকে সম্মান করতাম। আজ তিনি বেঁচে থাকলে আমাদের এতোটা হয়রানি হতে হতো না।

রকির বোন সোনিয়া আক্তার নিশি বলেন, আমার ভাইয়ের মাত্র সাড়ে ৫ মাস বয়সী একটি মেয়ে শিশু রয়েছে। তার স্ত্রী এখন দিশেহারা। রকির সঙ্গে কাউন্সিলর সোহেল ও মামলার বাদী রুমন ভাইয়ের অনেক ভালো সম্পর্ক ছিলো। কিন্তু এরপরও তার নামে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে।
এ সময় মামলার বাদী রুমনের সঙ্গে থাকা রকির একাধিক ছবি দেখান তিনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মামলার বাদী কাউন্সিলর সোহেলের ছোট ভাই সৈয়দ মো. রুমন বলেন, পুলিশ মামলার তদন্ত করছে। তদন্তেই বের হবে রকি দোষী নাকি নির্দোষ। আমি এখন বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে চাই না।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কুমিল্লা কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনওয়ারুল আজিম বলেন, মামলার তদন্ত চলছে। তদন্তে সত্য বেরিয়ে আসবে।

জানা যায়, গত ২২ নভেম্বর বিকেল ৪টার দিকে নগরীর পাথুরিয়াপাড়া থ্রি স্টার এন্টারপ্রাইজে কাউন্সিলর কার্যালয়ে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন ওই দুজন। কাউন্সিলর সোহেল কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য ও ওই ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। নিহত হরিপদ সাহা নগরীর ১৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য এবং সাহাপাড়া এলাকার বাসিন্দা।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০২১
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad